প্রায় ৫১ দিন পর জামিনে মুক্তি পেয়েছি: রুহুল আমিন

রুহুল আমিন। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক রুহুল আমিন কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।

আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি কারাগার থেকে বের হলে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাকে কারা ফটক থেকে নিয়ে আসেন।

এর আগে, দুপুরে মহানগর দায়রা জজ শহিদুল ইসলাম তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। তবে এর আগে আদালত দুইবার তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন।

কারাগার থেকে বের হয়ে রুহুল আমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রায় ৫১ দিন পর জামিনে মুক্তি পেয়েছি। আমি পাটকল শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের কর্মসূচি অব্যাহত রাখব।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কাউকে গ্রেপ্তার করা অগণতান্ত্রিক। লেখক মোস্তাক আহমেদ কারাগারে মারা গেলেন। তাকে জামিন দেওয়া হয়নি। এই মৃত্যুর জন্য কে দায়ী? এই প্রশ্ন করায় এবং এসব কথা লেখার কারণে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়, মামলা দেওয়া হয়।’

‘এই সরকার তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যেই কথা বলছে, যেই আন্দোলন করছে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে’, বলেন রুহুল আমিন।

তিনি বলেন, ‘মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন, স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের আন্দোলনে আমার অবস্থান অব্যাহত থাকবে।’

রুহুল আমিনের আইনজীবী আক্তার জাহান রুকু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মহানগর দায়রা জজ শহিদুল ইসলাম দশ হাজার টাকার বন্ডে আইনজীবীর জিম্মায় রুহুল আমনের জামিন মঞ্জুর করেন।’

এর আগে, ২ ও ১৪ মার্চ রুহুল আমিনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয় বলেও জানান তিনি।

চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর গোয়ালখালির কার্টুনিস্ট কিশোরের বাড়ি থেকে রুহুল আমিনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেসময় একই বাড়ি থেকে ওই সংগঠনের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নিয়াজ মুর্শিদ দোলনকেও আটক করে পুলিশ। পরের দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ১০ মিনিটের দিকে নিয়াজ মুর্শিদ দোলনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওইদিন রাতেই রুহুল আমিনের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন খুলনা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক মো. নাহিদ হাসান।

মামলায় তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি তথা সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ণ করাসহ বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে অপপ্রচার এবং জনগণের মধ্যে শত্রুতা, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছিল।

২০১৮ সালের এপ্রিলে রুহুল আমিনকে প্রথম খালিশপুর থানায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে তার ওপর হামলা করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা। এরপর ২০২০ সালের জুলাইয়ে আবার গ্রেপ্তার হন লিফলেট বিতরণ করার সময়। তৃতীয় দফায় তিনি আটক হন ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর। সেসময় খালিশপুরের বন্ধ মিল খুলে দেওয়ার দাবিতে ‘কফিন মিছিল’ কর্মসূচি পালনের সময় রুহুলসহ ১১ জনকে আটক করে পুলিশ। এ ছাড়াও, কোনো ধরনের কর্মসূচি না করতে ২০২০ সালের জুলাইয়ে র‍্যাবের পক্ষ থেকেও রুহুলকে চাপ দেওয়া হয়।

সংগঠনের নেতা নিয়াজ মোর্শেদ দোলন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সরকারের সমালোচনা করায় ওই আইনে লেখক মুশতাক আহমেদ ও কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রায় ১০ মাস কারাবন্দী থেকে কারাগারেই মারা গেছেন মুশতাক। কিশোর জামিনে আছেন। এটা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নতুন করে একই আইনে মামলার শিকার হয়েছেন রুহুল আমিন।’

‘অবিলম্বে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল চাই’, বলেন তিনি।

আরও পড়ুন:

Comments

The Daily Star  | English

Step up diplomacy as US tariff clock ticks away

Bangladesh must intensify trade diplomacy to protect garment exports from steep US tariffs as the clock runs down on a three-month reprieve, business leaders warned yesterday.

10h ago