মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে আরও এক ধাপ পেছাল বাংলাদেশ

১৮০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৫২তম
press freedom logo

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে এ বছর আরও এক ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। এই সূচক তৈরি করেছে বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা ফ্রান্সভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)।

আজ মঙ্গলবার ২০২১ সালের গণমাধ্যম সূচকটি প্রকাশ করা হয়।

সূচকে বলা হয়েছে, এ বছর ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫২তম। গত বছরেও যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৫১তম।

তালিকায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় সবার শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে এবং সবার নিচে অবস্থান করছে ইরিত্রিয়া।

বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার একটি বার্ষিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়েছে, ১৮০টি দেশের মধ্যে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ দেশেই নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে সাংবাদিকতা করতে হয়।

আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের ৭৩টি দেশে সাংবাদিকতা পুরোপুরি অথবা ভয়াবহভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার। এ ছাড়াও, ৫৯টি দেশে রয়েছে কঠোর বিধি-নিষেধ। করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে অনেক দেশের সরকার সাংবাদিকতার ওপর দমন-পীড়নের মাত্রাও বাড়িয়েছে।

আরএসএফের সেক্রেটারি ক্রিস্টোফ ডিলোয়ার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গুজবের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকরী ভ্যাকসিন হলো সাংবাদিকতা। তবে দুর্ভাগ্যবশত, এই ভ্যাকসিনের উৎপাদন ও বিতরণ প্রায়ই অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, কারিগরি এমনকি মাঝে-মধ্যে সাংস্কৃতিক কারণেও ব্যাহত হয়।’

আরএসএফের সূচক অনুযায়ী, এ বছর ইরিত্রিয়া, উত্তর কোরিয়া, তুর্কেমেনিস্তান, চীন ও জিবুতিতে সাংবাদিকতা সবচেয়ে বেশি প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে।

এ ছাড়া, তালিকায় শীর্ষে থাকা নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও কোস্টারিকাতে সবচেয়ে বেশি স্বাধীন সাংবাদিকতার চর্চা হয়েছে।

আরএসএফের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলে প্রতিনিয়ত সাংবাদিকদের দমন-পীড়ন ও নির্যাতন করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া, গত বছরে ইরান, সৌদি আরব, মিশর ও সিরিয়ায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে খর্ব হয়েছে। এসব অঞ্চল এখন পর্যন্ত সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন ও ভয়ংকর জায়গা।

এ বছর ১১৯তম অবস্থান থেকে ১৮ ধাপ পিছিয়ে অবনতিতে রেকর্ড করেছে মালয়েশিয়া। দেশটিতে সাম্প্রতিক সময়ে প্রবর্তিত ফেক নিউজ প্রতিরোধ আইনের ফলে সরকারের কোনো বিষয়ের ব্যাখ্যা ‘সত্যের নিজস্ব সংস্করণ’ ব্যবহারের এখতিয়ার রয়েছে।

আরএসএফ আরও জানায়, গত বছরে বিশ্ব গণমাধ্যমের অবস্থান মোটামুটি একই ছিল। তবে, ২০১৩ সালের প্রথম বছরের সূচকের চেয়ে এই অবস্থা ১২ ধাপ পিছিয়েছে। এর জন্য সাংবাদিকদের ওপর আস্থা হারানো, রাজনৈতিক মেরুকরণের প্রভাব ও অনলাইনে ভুল তথ্যের প্রচারকে আংশিকভাবে দায়ী করা হয়েছে।

এডেলম্যান ট্রাস্টের এক জরিপের ফলাফলের উদ্ধৃতি দিয়ে আরএসএফ আরও জানিয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া ২৮টি দেশের ৫৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বিশ্বাস করেন যে, সাংবাদিকরা ইচ্ছাকৃতভাবে জনগণকে ভুল তথ্য দেয়।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচক ২০২১-এ শীর্ষ ১০টি দেশ হলো— ১. নরওয়ে, ২. ফিনল্যান্ড, ৩. সুইডেন, ৪. ডেনমার্ক, ৫. কোস্টারিকা, ৬ নেদারল্যান্ডস, ৭. জামাইকা, ৮. নিউজিল্যান্ড, ৯. পর্তুগাল ও ১০ সুইজারল্যান্ড।

সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে থাকা ১০টি দেশ হলো— ১. ইরিত্রিয়া, ২. উত্তর কোরিয়া, ৩. তুর্কেমেনিস্তান, ৪. চীন, ৫. জিবুতি, ৬. ভিয়েতনাম, ৭. ইরান, ৮. সিরিয়া, ৯. লাওস ও ১০ কিউবা।

Comments

The Daily Star  | English
International Crimes Tribunal 2 formed

Govt issues gazette notification allowing ICT to try political parties

The new provisions, published in the Bangladesh Gazette, introduce key definitions and enforcement measures that could reshape judicial proceedings under the tribunals

2h ago