হাসি মুখে ধান কাটছেন হাওরের কৃষক
বোরো ধানের বাম্পার ফলনে হাসি ফুটেছে নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের কৃষকদের মুখে। হাওরাঞ্চলের এই দুই জেলায় এখন ধান কাটার কাজ চলছে।
নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ির নূরপুর বোয়ালী গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এ বছর প্রায় ৩০ একর জমিতে ধান চাষ করেছি আমি। প্রতি একর থেকে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ মণ ধান পেয়েছি।’
একই এলাকার আরেক কৃষক ফারুক চৌধুরী জানান, প্রায় ১০ একর জমিতে ধান চাষ করে গত বারের চেয়ে বেশি ফসল পেয়েছেন তিনি।
খালিয়াজুড়ির উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত মাসের শেষ দিক থেকেই ধান কাটা শুরু করেন কৃষকরা। চলতি মাস জুড়েও চলবে ফসল তোলার কাজ।
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুস শাকুর সাদি জানান, গত বছরের মতো ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া নিয়ে কৃষকদের কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি এবার। এ ছাড়া, অনেক বিত্তবান কৃষক ফসল তোলার কাজ আরও সহজ করতে কম্বাইন হার্ভেস্টর ব্যবহার করছেন।
কম্বাইন হার্ভেস্টর এমন একটি বহুমুখী যন্ত্র, যা একইসঙ্গে ফসল কাটা, মাড়াই ও ঝাড়ার কাজ করতে পারে।
সাদি বলেন, ‘একটি কম্বাইন হার্ভেস্টর এক ঘণ্টায় এক একর জমির ধান কাটতে পারে। শ্রমিকরা ধান কাটলে যে খরচ হয়, কম্বাইন হার্ভেস্টরের মাধ্যমে তার চার ভাগের এক ভাগ খরচে ধান কাটা যায়।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নেত্রকোনায় এবার এক লাখ ৮৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ ধান সংগ্রহ করা শেষ।’
কিশোরগঞ্জে এ বছর এক লাখ ৬৬ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাইফুল আলম।
এর মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
বাম্পার ফলনের পাশাপাশি এবার ধানের ন্যায্য মূল্যও পাচ্ছেন কৃষকরা।
নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ির কৃষক মোজাম্মেল বলেন, ‘এ বছর প্রতি মণ বোরো ধান ৮৩০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি করছি। গত বছর মণ প্রতি দাম ছিল ৭৫০ টাকা থেকে ৭৭০ টাকা।’
একই কথা বলেন কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার মৈশারকান্দি এলাকার কৃষক জিলুর রহমানও।
দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, ভালো ফলন ও ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছেন তারা।
Comments