বরিশালে ডায়রিয়া বাড়ার কারণ নদী, খালের পানিতে কলেরা জীবাণু: আইইডিসিআর

নদী-খাল ও পুকুরে কলেরার জীবাণুর উপস্থিতি ও গৃহস্থালী কাজে এর ব্যবহারে বরিশাল বিভাগে ব্যাপক হারে ডায়রিয়া ছড়িয়েছে বলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। আজ বৃহস্পতিবার আইইডিসিআরের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় ও বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয় বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছে।
বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের ওয়ার্ডে জায়গা না হওয়ায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতাল প্রাঙ্গণে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছবি: সুশান্ত ঘোষ

নদী-খাল ও পুকুরে কলেরার জীবাণুর উপস্থিতি ও গৃহস্থালী কাজে এর ব্যবহারে বরিশাল বিভাগে ব্যাপক হারে ডায়রিয়া ছড়িয়েছে বলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। আজ বৃহস্পতিবার আইইডিসিআরের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় ও বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয় বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছে।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয় সূত্র জানায়, এ বিষয়ে আইইডিসিআর এর দুটি দলের একটির প্রতিবেদন ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বিভাগে এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার ১৩৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন নয় জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৪২ জন।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, গত ১ থেকে ১৪ মার্চ আইইডিসিআর এর ছয় জনের একটি দল বরগুনায় কাজ করে রোগীদের মলে কলেরার জীবাণু পেয়েছে। তারা নদী ও খালের পানিতেও কলেরার জীবাণু পেয়েছে।

বছরের এ সময়ে বরিশাল বিভাগে ডায়রিয়া প্রবণতা দেখা দেয়। তবে, এ বছর এটি মাত্রাতিরক্ত হিসেবে দেখা যাচ্ছে। আইইডিসিআর এর গবেষণায় ৭১ ভাগ রোগী নদী, খাল ও পুকুরের পানি দিয়ে দৈনন্দিন গৃহস্থালি কাজ করে থাকে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, আরেকটি দল গত কয়েকদিন ধরে বরিশালে কাজ করছে। তাদের পর্যবেক্ষণেও রোগীদের মলে কলেরা শনাক্ত হয়। এ দলটিও এজন্য নদী ও খালের পানি ব্যবহারকেই দায়ী করছে।

বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল জানান, রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিকাংশ রোগী গৃহস্থালী কাজে খাল, নদীর ও পুকুরের পানি ব্যবহার করেন।

আইইডিসিআর দলের সদস্য ডা. দীপংকর দাস জানান, তারা বরিশাল জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলার হাসপাতাল থেকে রোগীদের নমুনা নিয়েছেন। এ প্রতিবেদন ঢাকার আইইডিসিআর থেকে দেওয়া হবে।

যোগাযোগ করা হলে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদল বলেন, 'অবস্থার অবনতি যেন না হয়, সেজন্য আমরা সচেতন করতে প্রতি উপজেলায় মাইকিং করছি। নদী, খালের পানি ফুটিয়ে ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। এ ছাড়া, স্যালাইনের সংকট যেন না হয়, সেজন্য জরুরিভাবে ঢাকায় স্যালাইন চাওয়া হয়েছে।

'আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ৩৫ হাজার স্যালাইন চলে আসলে স্যালাইন সংকট কেটে যাবে,' বলেন তিনি।

বরিশালে ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে বিভাগীয় কমিশনারের স্যালাইন বিতরণ

বরিশালে ডায়রিয়ার ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতিতে আইভি স্যালাইনের সংকট নিরসনে বিভাগীয় প্রশাসন তৎপরতা শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে বরিশাল, পিরোজপুর ও বরগুনা জেলার জন্য ৬০০ ব্যাগ আইভি স্যালাইন দেওয়া হয় বিভাগীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

এ সময় বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল বলেন, বর্তমানে ডায়রিয়া পরিস্থতিতে ওষুধ কোম্পানি যারা আইভি স্যালাইন তৈরি করে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি যেন এখানে স্যালাইনের সংকট না থাকে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago