উইকেটবিহীন দিন, নিষ্প্রাণ ড্রয়ের পথে প্রথম টেস্ট

আলোকস্বল্পতায় পুরো দিনে খেলা হয়েছে মোট ৭৬ ওভার। তাতে ওভার প্রতি ৩.৭৩ করে নিয়ে স্বাগতিকরা তুলেছে আরও ২৮৩ রান। সব মিলিয়ে দিনশেষে ৩ উইকেটে ৫১২ রান তুলে বাংলাদেশের মাত্র ২৯ রান পেছনে তারা।

সারাদিনে একটি উইকেটও ফেলতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। রান আটকে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার কাজটাও হয়নি। তিনশো ছাড়ানো জুটিতে বাংলাদেশকে হতাশায় পুড়িয়েছেন লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে আর ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। করুনারত্নে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি, দেড়শো পেরিয়ে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন ধনঞ্জয়া।

আলোকস্বল্পতায় পুরো দিনে খেলা হয়েছে মোট ৭৬ ওভার। তাতে ওভার প্রতি ৩.৭৩ করে নিয়ে স্বাগতিকরা তুলেছে আরও ২৮৩ রান। সব মিলিয়ে দিনশেষে ৩ উইকেটে ৫১২ রান তুলে বাংলাদেশের মাত্র ২৯ রান পেছনে তারা। 

করুনারত্নে অপরাজিত আছেন ২৩৪ রানে, ধনঞ্জয়া খেলছেন ১৫৩ রান নিয়ে। চতুর্থ উইকেটে দুজনের জুটিতে এসেছে ৩২২ রান। অর্থাৎ শনিবার পাল্লেকেলে টেস্টে চারদিন পেরিয়ে গেলেও শেষ হতে পারেনি একটি করে ইনিংস।

পরিসংখ্যানগুলোই বলে দেয় পাল্লেকেলেতে পাটা উইকেটে পুরো দিনে কতটা অসহায় ছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। তাসকিন আহমেদ ছাড়া কোন বোলারকেই পাত্তা দিতে হয়নি ব্যাটসম্যানদের।

উইকেট আনতে না পারলেও তাসকিন চেষ্টা চালিয়েছেন প্রাণপণ। সকালে নতুন বল হাতে নিয়ে বার দুয়েক উইকেট নেওয়ার খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন তিনি। করুনারত্নে, ধনঞ্জয়া দুজনকেই বারবার পরাস্ত করেছেন।

কিন্তু একদিক থেকে তাসকিনের এনে দেওয়া চাপ রাখতে পারেননি বাকিরা। বিশেষ করে তুলনামূলক অভিজ্ঞ আবু জায়েদ রাহি ছিলেন একেবারে বিবর্ণ। আলগা বল দিয়েছেন প্রচুর। তার মাঝারি গতির বল মারতে কিংবা ছাড়তে ব্যাটসম্যানদের বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয়নি। মারও খেয়েছেন তিনিই বেশি। ১৩ ওভার বল করেই দিয়েছেন ৫৮ রান। ইবাদত হোসেনও মার খেয়েছেন। তবে ভালো গতি রেখে ব্যাটসম্যানদের কাজ কিছুটা কঠিন করতে দেখা গেছে তাকে।

দুই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ আর তাইজুল ইসলামও ছিলেন মলিন। এক পর্যায়ে নেতিবাচক বল করে কিছুটা রান আটকে রাখার কাজ করেন মিরাজ। তাতে ব্যাটসম্যানদের চিন্তা করার কোন কারণ ছিল না।  পুরো দিনে একবারও সুযোগ তৈরি করতে পারেননি তাইজুলও।

সেঞ্চুরি ও ডাবল সেঞ্চুরি দুই মাইলফলকের সময়ই কিছুটা স্নায়ুচাপে ভুগেছেন করুনারত্নে। দুবারই তাকে ভোগান তাসকিন। ৯৯ রানে আটকে সেঞ্চুরি পেতে লেগেছিল বেশ কিছুটা সময়। ১৯৮ রান থেকে ডাবল সেঞ্চুরিতে যেতে তো প্রায় আউটও হতে বসেছিলেন।

তার বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ গিয়েছিল। কিপার লিটন দাসের সামান্য সামনে পড়ায় তা নেওয়া সম্ভব হয়নি। ওই শটে চারে পৌঁছে দ্বিশতক পুরো হয় লঙ্কান অধিনায়কের। বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত উইকেটের বদলে নিজের কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় চলে যান তিনি। 

ডাবল সেঞ্চুরির পর গতিও বেড়ে যায় তার। প্রচণ্ড গরমে বোলিং-ফিল্ডিং করে কিছুটা যেন নেতিয়ে পড়ে বাংলাদেশও। মনে হচ্ছিল দিনের বাকিটা সময় অনায়াসে লিড নিয়ে অনেকটা এগিয়ে যাবে স্বাগতিকরা। ৪১৯ বলে ২৩৪ রান করতে করুনারত্নে মেরেছেন ২৫ চার, ধনঞ্জয়া ২০ চারে ১৫৪ করেছেন ২৭৮ বলে।

শেষ বিকেলে তাদের পথে বাধ সাধে মেঘলা আকাশ। অপূরণীয় ২৬ ওভার বাকি থাকতে আলোক স্বল্পতায় বন্ধ করে দিতে হয় খেলা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

(চতুর্থ দিন শেষে)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৫৪১/৭

শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ১৪৯ ওভারে ৫১২/৩(করুনারত্নে ২৩৪*, থিরিমান্নে ৫৮, ওশাদা ২০, ম্যাথিউস ২৫, ধনঞ্জয়া ১৫৪*; আবু জায়েদ ০/৫৮, তাসকিন ১/৯১, ইবাদত ০/৮২, মিরাজ ১/১২৩, তাইজুল ১/১৩৬, মুমিনুল ০/৮, সাইফ ০/৫)।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus's 'Reset Button' call was not about erasing Bangladesh's proud history: CA office

He meant resetting the software, not the hardware created by 1971 Liberation War, statement says

2h ago