হেফাজতের নেতারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মডেলে তৈরি করতে চায়: ডিবি

DB.jpg
সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম-কমিশনার মো. মাহবুব আলম। ছবি: সংগৃহীত

হেফাজতে ইসলামের অরাজনৈতিক চরিত্র আর নেই এবং অধিকাংশ নেতারা হেফাজতকে তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে মনে করছেন বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

আজ শনিবার হেফাজতে ইসলামের নেতাদের গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ সম্পর্কে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম-কমিশনার মো. মাহবুব আলম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

এ পর্যন্ত হেফাজতের ১৪ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে উল্লেখ করে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘২০১৩ সালে এবং সম্প্রতি হেফাজতের নাশকতার ঘটনায় করা মামলাগুলোর তদন্তে গিয়ে আমরা এই নাশকতাগুলো কারা করছে, কেন করছে তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছি।’

যুগ্ম-কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামকে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন বলছি। কিন্তু, বাস্তবে তাদের অনেকেই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং প্রত্যেক দলেরই আলাদা আলাদা এজেন্ডা আছে। সে এজেন্ডাগুলো তারা বাস্তবায়ন করতে চায় হেফাজতের মাধ্যমে।’

‘হেফাজতে ইসলাম এমন একটি সংগঠন, যার ডাকে মাদ্রাসার ছাত্রদের আনা সম্ভব হয়, ব্যাপকহারে লোক সমাগম করা সম্ভব হয় এবং অনেকে অরাজনৈতিক চরিত্রটি ওপরে বলছে, কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে হেফাজতকে ব্যবহার করছে,’ যোগ করেন তিনি।

ডিবি যুগ্ম-কমিশনার বলেন, ‘সেখানে অধিকাংশ নেতারা হেফাজতকে তাদের ক্ষমতায় যাবার সিঁড়ি হিসেবে মনে করছেন। মাদ্রাসার ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তারা ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছেন।’

‘তারা চায়, সরকার পতনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তানের মডেলে তৈরি করতে। তাদের আদর্শ হচ্ছে পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তান। নাশকতা বা উগ্রবাদের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ভিডিও ফুটেজ বা অডিও কথোপকথন থেকে যে তথ্য এসেছে, সেগুলোর মাধ্যমে এসব জানতে পেরেছি’, বলেন তিনি।

সম্প্রতি গ্রেপ্তারকৃত হেফাজত নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি বলে করেন মো. মাহবুব আলম। তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে মুফতি ফখরুল আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে আমরা এসব ষড়যন্ত্রের বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৩ সালে সরকার পতনের লক্ষেই চক্রান্ত হয়। হেফাজতে ইসলামকে কাজে লাগিয়ে একটি অপচেষ্টা চালিয়েছিল। এ বছর আবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে আবার যে নাশকতা হলো, সেখানেও একই ধরনের চক্রান্ত হয়েছে। তদন্তে এসবের অনেকটাই পরিষ্কার হয়েছে।’

‘তদন্তে আরও পেয়েছি, হেফাজত নেতারা ইতোমধ্যে অনেক অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন। মাদ্রাসা দখলের মতো অপকর্ম তারা করছে। সারাদেশের ওয়াজ মাহফিল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে হেফাজত। ‘রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন’ নামের একটি সংগঠন তৈরি করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তারা এটি করছে। যেন এর মাধ্যমে তাদের উগ্রবাদী বক্তব্য তারা ছড়িয়ে দিতে পারে’, যোগ করেন তিনি।

হেফাজতের পেছনে কোন রাজনৈতিক দলগুলো কাজ করছে? এমন প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম-কমিশনার বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ইসলামপন্থী দলগুলো ছাড়াও মূলধারার দল আছে। তার মধ্যে জামায়াতে ইসলামসহ আরও অনেক দল এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে। জাতীয়তাবাদী দলের যোগসাজশও আমরা পেয়েছি। তাদের অনেক প্রয়াত নেতার যোগসাজশ রয়েছে।’

হেফাজতের অর্থের যোগানদাতা কারা? এমন প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সেগুলো আমরা তদন্ত করছি। তারা বলছেন- দেশের বাইরে থেকে অর্থের যোগান আসছে।’

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago