‘মিয়ানমারে হত্যাকাণ্ডের অবসান ও রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি’ দাবি আসিয়ান নেতাদের

সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান
ASEAN.jpg
ইন্দোনেশিয়ায় শুরু হয়েছে আসিয়ান সম্মেলন। ছবি: রয়টার্স

আসিয়ান সম্মেলনে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় নেতারা মিয়ানমারে নির্বিচারে মানুষ হত্যার তাৎক্ষণিক অবসান ও রাজনৈতিক বন্দীদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।

ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, শনিবার ইন্দোনেশিয়ায় আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করা সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো জানান, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় নেতারা মিয়ানমারে হত্যাকাণ্ডের তাৎক্ষণিক অবসান ও রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দাবি করেছেন।

ওই সম্মেলনে আসিয়ান দেশগুলোর নেতারা জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে মিয়ানমারের বিরোধী পক্ষগুলোর সঙ্গে অবিলম্বে আলোচনা শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।

সম্মেলনে উইদোদো বলেন, ‘মিয়ানমারের পরিস্থিতি অগ্রহণযোগ্য। এটি হওয়া উচিত নয়। সহিংসতা বন্ধ করতে হবে, মিয়ানমারে গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা ও শান্তি অবিলম্বে ফিরিয়ে আনতে হবে। মিয়ানমারের জনগণের স্বার্থকে সবসময় অগ্রাধিকার দিতে হবে।’

মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর এটাই সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের প্রথম আনুষ্ঠানিক বিদেশ সফর।

ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি সম্মেলনের শুরুতে বলেছিলেন, ‘আমরা পরবর্তী ব্যবস্থার বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারি, যা মিয়ানমারের জনগণকে এই নাজুক পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করতে পারে।’

তবে, জেনারেল মিন অং হ্লাইং এই বার্তাগুলোর প্রতিক্রিয়ায় কিছু জানিয়েছেন কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গুলিতে ৭০০ এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

MYANMAR.jpg
আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। ছবি: রয়টার্স

সেনা অভ্যুত্থানের পর দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশের জোট আসিয়ানের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল। গণতান্ত্রিক সরকারের উৎখাত ও সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল নিয়ে ওই বিবৃতিতে তেমন কঠোর ভাষায় নিন্দা জানানো হয়নি। আসিয়ানের বর্তমান প্রধান ব্রুনাইয়ের জারি করা ওই বিবৃতিতে ‘মিয়ানমারের জনগণের ইচ্ছা ও স্বার্থ অনুসারে আলোচনা, সমন্বয় ও স্বাভাবিকতায় ফিরে আসার আহ্বান জানানো’ হয়।

এশিয়ার দেশগুলো আসিয়ান সম্মেলনে জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের যোগ দেওয়ার পক্ষে একমত হলেও, তাকে মিয়ানমারের ‘রাষ্ট্রপ্রধান’ হিসেবে সম্বোধন করার পক্ষে ছিল না।

সমালোচকরা বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তটি অগ্রহণযোগ্য। তারা বলছেন, ‘এই সিদ্ধান্ত মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থান ও এর পর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে হওয়া মারাত্মক অন্যায়কে বৈধতা দেওয়ার মতো।’

এদিকে, মিয়ানমারের জেনারেলের সফরের বিরোধিতা করে ইন্দোনেশিয়ার রাস্তায় বিক্ষোভ হয়েছে। আজ শনিবার, পুলিশ কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে ছত্রভঙ্গ করে।

মহামারির মধ্যে আসিয়ান সম্মেলনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জুড়ে ৪ হাজার ৩০০ এরও বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জোটের অংশ হওয়া সত্ত্বেও থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনের সরকার প্রধান নিজ দেশে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ব্যস্ত থাকায় সম্মেলনে যোগ দিতে পারেননি।

মিয়ানমার ছাড়াও আসিয়ানের সদস্য দেশগুলো হলো- ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম।

Comments

The Daily Star  | English

Produce 10 ex-ministers, 2 advisers to Hasina before tribunal on Nov 18: ICT

They will be shown arrested in case filed over crimes against humanity, genocide, says prosecutor

23m ago