কোয়ারেন্টিন, অক্সিজেন সরবরাহ, পরীক্ষার ফি কমানোসহ কারিগরি কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুপারিশ

বাংলাদেশে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি নতুন কিছু পরামর্শ দিয়েছে।
ছবি: রাশেদ সুমন

বাংলাদেশে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি নতুন কিছু পরামর্শ দিয়েছে।

গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে পরামর্শক কমিটি।

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লার সভাপতিত্বে ও সকল সদস্যের উপস্থিতিতে নেওয়া সুপারিশগুলো হলো-

দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সংক্রমণের অবস্থার ওপর ভিত্তি করে, বাংলাদেশে সংক্রমণ কমতে থাকলেও তা পার্শ্ববর্তী দেশের সংক্রমণের কারণে পরিবর্তিত হতে পারে। এর প্রেক্ষিতে সার্বিক প্রস্তুতি, বিশেষ করে অক্সিজেন সংকট যেন তৈরি না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়।

এ বিষয়ে সরকারের তৎপরতা ও ইতোমধ্যে নেওয়া উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে এ সংক্রান্ত পরিকল্পনা দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়।

এক হাজার ২০০ শয্যার মহাখালী ডিএনসিসি হাসপাতাল চালু করায় কমিটি সন্তোষ প্রকাশ করে ওই হাসপাতালে মেটারনিটি কর্নার বা ইউনিটের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেয়। ইতোমধ্যে সরকার প্রজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত সন্তানসম্ভবা নারীদের সেবা নিশ্চিতের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্যও অনুরোধ করা হয়।

কেবলমাত্র রাজধানীকেন্দ্রিক না করে জেলার হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহের উদ্যোগ বাড়ানো ও এ বিষয়ে জনবল তৈরি দিকেও লক্ষ্য রাখার সুপারিশ করা হয়। বিশেষায়িত হাসপাতালে নির্দিষ্ট রোগের রোগীদের করোনার বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থার ব্যাপারে মতামত দেওয়া হয়।

ভারতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে এবং করোনার ‘ডাবল ভ্যারিয়েন্ট’ (নতুন প্রজাতি) চিহ্নিত হয়েছে। এই ভ্যারিয়েন্ট আমাদের দেশে যেন প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে বেশ কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- ভারত থেকে আসা সকল যাত্রীর ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা, সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে নজরদারি বাড়ানো।

ভারতফেরত ১০ সংক্রমিত রোগী, যারা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলে যান, তারা যাদের সংস্পর্শে এসেছেন তাদের চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টিন করতে হবে।

উচ্চ সংক্রমণশীল দেশ থেকেও বাংলাদেশে যাতায়াত বন্ধ করা বা সীমিত করা প্রয়োজন এবং এই সব দেশ থেকে আসা যাত্রীদেরও ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

দেশে সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারকে চলমান বিধি-নিষেধ পালনে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার কাজ আগের মতো চালিয়ে যেতে হবে বলে মতামত দেওয়া হয়।

ইতোমধ্যে সরকারের কাছে লকডাউন পরবর্তী ‘এক্সিট প্লান’ এর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবায়ন অতীব জরুরি।

করোনা পরীক্ষার কিটের দাম প্রায় তিন হাজার বা দুই হাজার ৭০০ টাকা থেকে কমে ৮০০ বা এক হাজার টাকায় নেমে গেছে। এর প্রেক্ষিতে বেসরকারি পর্যায়ে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে সবার সঙ্গে আলোচনা করে ফি পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ায় তাদের অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ফি এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে নির্ধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্য কর্মীদের ওপর থেকে অতিরিক্ত এই চাপ কমানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য আরেকদল চিকিৎসক প্রস্তুত করার সুপারিশ করা হয়।

লকডাউন এর সময় চিকিৎসকদের যাতায়াত সহজ করা এবং মানসম্মত পিপিইর পর্যাপ্ত সরবরাহ ও তারা সেগুলো পাচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করা প্রয়োজন বলে জানায় কমিটি।

সেবা ও চিকিৎসার মান উন্নয়নে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিংয়ের বিষয়েও জোর দেয় কমিটি।

চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী, নার্স, টেকনিশিয়ান, অ্যানেস্থেটিস্ট নিয়োগ কার্যক্রমকে আবারও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়। এসব ক্ষেত্রে এখনও জনবল সংকট রয়েছে। সব বাধা দূর করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের সুপারিশ করা হয়।

সরকারের অ্যানেস্থেটিস্ট, চিকিৎসক, মিড ওয়াইফ নিয়োগের সিদ্ধান্তের পাশাপাশি এই সভায় নার্স নিয়োগেরও সুপারিশ করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago