বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি বিপর্যয় তদন্তে কমিটি গঠন
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক আইটি বিপর্যয়ের কারণ তদন্ত করতে গতকাল বুধবার একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ বিপর্যয়ের ফলে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আন্তব্যাংক চেক লেনদেন এবং ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদান বন্ধ ছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নথিতে বলা হয়েছে, ‘আইসিটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ম্যানেজমেন্ট টিম’ নামের কমিটিকে আগামী ১৫ মে’র মধ্যে বিপর্যয়ের আসল কারণ ব্যাখ্যাসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইটি ব্যবস্থার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে করণীয় বিষয়ক সুপারিশ উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।
১৮ জন কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত এ কমিটি আইসিটি ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি কিছু সুপারিশ করবে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইসিটি নিরাপত্তাও নিশ্চিত করবে। আইসিটি ব্যবস্থার প্রতি মাসের হালনাগাদ প্রতিবেদন ব্যাংকটির উচ্চ-পদস্থদের কাছে জমা দিতে হবে কমিটিকে।
গত ১৩ এপ্রিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজের (বিএসিএইচ) মাধ্যমে আন্তব্যাংক চেক লেনদেন এবং ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। দুটি ডেটা সেন্টারের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী অপটিক্যাল ফাইবার কেবল বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় এ বিপর্যয় তৈরি হয়।
একইদিন বিকেলে মতিঝিল ও মিরপুরে অবস্থিত সেন্টার দুটির সংযোগ ঠিক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু, এরপরও বিএসিএইচের কার্যক্রম চালানো সম্ভব হচ্ছিল না।
পরে ১৮ এপ্রিল থেকে আন্তব্যাংক চেক লেনদেনের কার্যক্রম চালু করতে সক্ষম হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু, ইএফটি চালু করতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লেগে যায়।
বাংলাদেশের প্রথম ইলেক্ট্রনিক ক্লিয়ারিং হাউজ বিএসিএইচে’র দুটি অংশ আছে। একটি অটোমেটেড চেক প্রসেসিং সিস্টেম (এসিপিএস) এবং আরেকটি ইএফটি। এই দুটি ডিজিটাল মোডে হওয়া আন্তব্যাংক লেনদেন সংখ্যা ও পরিমাণের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি। গ্রাহকরা প্রতিদিন প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার অন্তত এক লাখ চেক এখানে জমা দিয়ে থাকেন।
ইএফটি ব্যবস্থায় গ্রাহকরা প্রতিদিন প্রায় এক হাজার কোটি টাকার দেড় লাখ লেনদেন করেন।
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন) দেশের প্রথম কাগজবিহীন ইলেকট্রনিক আন্তব্যাংক ফান্ড ট্রান্সফার ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে ডেবিট-ক্রেডিট দুই ধরনের লেনদেনই করা যায়।
পে রোল, দেশি ও বিদেশি রেমিট্যান্স, সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় সরকারের তহবিল বিতরণ, সরকারি শুল্ক পেমেন্ট, কোম্পানির লভ্যাংশ, বিল পেমেন্ট, করপোরেট পেমেন্ট থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায়ের পেমেন্টের মতো ক্রেডিট ট্রান্সফারের কাজ এ নেটওয়ার্কে করা যায়।
Comments