ভারতে ৩৮০০ টন মেডিকেল সরঞ্জাম ও ২৬০০০ ভেন্টিলেটর পাঠাল চীন

এপ্রিলে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো ভারতে তিন হাজার আটশ টনের বেশি মেডিকেল সরঞ্জাম ও ২৬ হাজারের বেশি ভেন্টিলেটর পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
নয়াদিল্লির লোক নায়ক জয় প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালের (এলএনজেপি) বাইরে অক্সিজেন মাস্ক পরা এক রোগী বসে আছেন। ২২ এপ্রিল, ২০২১। ছবি: রয়টার্স

এপ্রিলে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো ভারতে তিন হাজার আটশ টনের বেশি মেডিকেল সরঞ্জাম ও ২৬ হাজারের বেশি ভেন্টিলেটর পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

আজ শুক্রবার হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে করোনাভাইরাসের তীব্র সংক্রমণ মোকাবিলায় সহযোগিতা হিসেবে এগুলো পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন জানান, চীনা শুল্ক বিভাগ অনেক শহর থেকে তরল অক্সিজেন স্টোরেজ ট্যাংক ও অক্সিজেন জেনারেটর ভারতে পরিবহনের জন্য ছাড়পত্র দিচ্ছে। চীনের প্রাদেশিক সরকার, এনজিও ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানগুলোও মহামারিতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে, যা ভারতের জরুরি প্রয়োজন।

চীন থেকে ভারতে আসা চিকিৎসা ও অন্যান্য সরঞ্জামের বেশিরভাগ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে রপ্তানি হচ্ছে। কারণ, নয়াদিল্লি ও বেইজিং এখনো এ ধরনের কোনো লেনদেনের জন্য সরকার পর্যায়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি।

গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতে সাহায্য পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। তবে, ভারত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।

গতকাল চীনের স্টেট কাউন্সিল ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে লেখা এক চিঠিতে জানান, চীন ভারতের চ্যালেঞ্জগুলোর প্রতি সমবেদনা ও আন্তরিক সহানুভূতি জানায়। ভারতকে মহামারি মোকাবিলায় সহায়তা করতে চীনে উত্পাদিত জরুরি সরঞ্জাম দ্রুততার সঙ্গে ভারতে প্রবেশ করছে।

তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা ও সহযোগিতা করতে চীন সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। আমরা আশা করি এবং বিশ্বাস করি যে, ভারত সরকারের নেতৃত্বে তাদের জনগণ দ্রুত মহামারির বিপদ কাটিয়ে উঠবে।’

এর একদিন পর আজ শুক্রবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতে বর্তমান মহামারির তীব্রতার বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইকে সমর্থন জানাতে বেইজিং সর্বাত্মক উদ্যোগ নেবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং জানান, চীন সবসময় ভারতে মহামারি পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ভারতে জরুরি সরঞ্জাম সংগ্রহ ও ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেগুলো ভারতের জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে’ চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো উদ্যোগ নিয়েছে।

চীন এপ্রিলে ভারতে ২৬ হাজারেরও বেশি ভেন্টিলেটর ও অক্সিজেন জেনারেটর, ১৫ হাজারেরও বেশি মনিটর এবং প্রায় তিন হাজার আটশ টন চিকিৎসা সামগ্রী ও ওষুধ রপ্তানি করেছে বলে জানান তিনি।

ওয়াং আরও জানান, ভারতে চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠাতে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো কঠোর পরিশ্রম করছে, সেখানকার কর্মীরা ওভার-টাইম কাজ করছেন ও উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া, আগামী কয়েকদিন ভারতে আরও জরুরি সহায়তা পাঠাতে চীন তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

চীন থেকে ভারতের কার্গো রুটে চলাচল স্বাভাবিক আছে। গত দু’সপ্তাহে চীন থেকে ভারতে চীনা বিমান সংস্থাগুলোর বহু পণ্যবাহী বিমান চলাচল করেছে বলে জানিয়েছেন ওয়াং। তবে, এ ব্যাপারে তিনি কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি।

ওয়াং আরও জানান, ভারতে জরুরি সরঞ্জাম পাঠাতে বেসরকারিভাবে অনেক অনুদান দেওয়া হচ্ছে। চীনের অনেক শহর থেকে তরল অক্সিজেন স্টোরেজ ট্যাঙ্ক, অক্সিজেন জেনারেটর এবং অন্যান্য উপকরণ ভারতে পরিবহনের জন্য চীনা কর্তৃপক্ষ শুল্ক ছাড়পত্র দিচ্ছে।

বুধবার ভারতে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত সান ওয়েডং এক টুইটে বলেন, চীনা চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহকারীরা ভারতের অর্ডার সময়মতো দিতে ওভারটাইম কাজ করছে। খুব শিগগির ভারতে ২৫ হাজার অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠানো হবে। এগুলো সরবরাহে কার্গো উড়োজাহাজগুলোকে পরিকল্পনার আওতায় আনা হয়েছে। চীনা কাস্টমস প্রক্রিয়াটি দ্রুততার সঙ্গে করতে গুরুত্ব দিচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

8h ago