থানায় ওসির মারধরে একজনের মৃত্যুর অভিযোগ, আসক’র উদ্বেগ ও ন্যায়বিচার দাবি
নওগাঁর পত্নীতলা থানায় বৈঠক ডেকে এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ পাওয়ার দুই দিন পর ওই ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
আজ শুক্রবার আসক’র সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলায় পারিবারিক সমস্যা মীমাংসা করতে থানায় বৈঠক ডেকে হামিদুর রহমান (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার দুই দিন পর আহত হামিদুর রক্তবমি করলে তার পরিবার তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।
গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আসক জানায়, প্রায় ১৭-১৮ দিন আগে হামিদুর ও তার স্ত্রী ফাইমা খাতুনের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এতে হামিদুর স্ত্রীকে মৌখিকভাবে তালাক দিলে তার দুই ছেলে তাকে মারধর করেন। বিষয়টি নিয়ে হামিদুর থানায় লিখিত অভিযোগ করলে ১৭ এপ্রিল সমঝোতার কথা বলে পুলিশ উভয়পক্ষকে থানায় ডাকে। হামিদুর সেখানে তার স্ত্রীকে মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
পরে ২৫ এপ্রিল ফাইমা থানায় গিয়ে হামিদুর তাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে না নেওয়ার অভিযোগ জানালে উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলাম সমঝোতার কথা বলে হামিদুরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান।
পরিবারের অভিযোগ, সেদিন সমঝোতা বৈঠকে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম শাহ হামিদুরকে লাথি-ঘুষি দেন। হামিদুরকে থানা হাজতে রেখে কিছুক্ষণ পর তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। ওই ঘটনার পর মাথায় ও বুকে আঘাত পাওয়া হামিদুর বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু, ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় হামিদুর রক্তবমি করা শুরু করলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হলে রাত ১১টার দিকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আসক জানায়, পুলিশের নির্যাতনের ফলে হামিদুরের মৃত্যু হয়েছে বলে তার পরিবার দাবি করলেও, পুলিশ তা অস্বীকার করেছে।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে হামিদুরের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি হামিদুরের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
Comments