এলপিজি গ্যাসের দাম কমেছে ৭ শতাংশ, কার্যকর হওয়া নিয়ে সংশয়

বেসরকারি খাতের লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম পুনর্নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম
ফাইল ছবি

বেসরকারি খাতের লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম পুনর্নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

গতকাল এলপিজির খুচরা মূল্য প্রায় সাত শতাংশ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বিইআরসি। নতুন মূল্য অনুযায়ী, ১২ কেজি গ্যাসের প্রতিটি সিলিন্ডার ৯৭৫ টাকার পরিবর্তে ৯০৬ টাকায় বিক্রি করতে হবে খুচরা বিক্রেতাদের।

অনলাইনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এলপিজি গ্যাসের নতুন দাম ঘোষণা করার সময় বিইআরসির চেয়ারম্যান আবদুল জলিল বলেন, ‘আগামী মাস থেকে এই নতুন দাম কার্যকর করা হবে।’

সৌদি আরবের তেল কোম্পানি সৌদি আরামকো কর্তৃক ঘোষিত দাম অনুযায়ী আগামী মে মাসের জন্য এই নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এলপিজি দাম নির্ভর করে সৌদি আরামকো কর্তৃক নির্ধারিত দামের ওপর। সৌদি আরামকো প্রতি মাসে এলজিপির একটি দাম ঘোষণা করে।

সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আগামী মে মাসের জন্য এই নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিইআরসি চেয়ারম্যান জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে দামের ভিত্তিতে তারা প্রতিমাসে মূল্য সংশোধন করে থাকে।

তবে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস লিমিটেডের (এলপিজিএল) বিক্রি করা এলপিজি গ্যাসের দাম এখনো পুনর্নির্ধারণ করেনি কমিশন। সরকারি এই কোম্পানিটি বর্তমানে প্রতিটি সাড়ে ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডার ৫৯১ টাকায় বিক্রি করছে।

এই নিয়ে এক মাসে দুবার এলপিজির দাম নির্ধারণ করেছে বিইআরসি। গত ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো এলপিজির খুচরা দাম নির্ধারণ করে কমিশন।

তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আগের নির্ধারিত দাম কার্যকর করতে না পারায় নতুন নির্ধারিত দামও কার্যকর করতে পারবে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করছেন গ্রাহকরা।

দেশের বিভিন্ন জেলার গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন, ১২ এপ্রিল বিইআরসির নির্ধারিত দাম অনুসরণ করেনি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এবং খুচরা বিক্রেতারা।

ঢাকা দোহারের বাসিন্দা ইদ্রিস আলী জানান, গত সপ্তাহে তিনি ১২ কেজি গ্যাসের সিলিন্ডার কিনেছেন এক হাজার ৩০ টাকায়।

তিনি বলেন, ‘সরকার গ্যাসের দাম যতই কমাক না কেনো, আমরা এই সুবিধা পাই না। আমরা সরকারের নির্ধারিত দামে গ্যাস পাবও না।’

জামালপুরের একজন দোকানদার মোজাম্মেল হক জানান, তিনি অনেক দিন ধরেই ৯৮০ থেকে এক হাজার টাকায় এলপিজি গ্যাস কিনছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই সরকারের নির্ধারিত দামে গ্যাস কিনতে পারি না।’

নাম প্রকাশ না করা শর্তে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের এক বাসিন্দা জানান, এই সপ্তাহে উপজেলা শহর থেকে তিনি এক হাজার ৫০ টাকায় ১২ কেজি গ্যাস কিনেছেন।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, শুধু ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় বিইআরসি এর আগেও ৯৭৫ টাকা করে গ্যাসের দাম নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেই দাম কার্যকর করেনি।

বিইআরসি চেয়ারম্যান জানান, তারা বিভিন্ন উৎস থেকে জানতে পেরেছেন যে, খুচরা পর্যায়ে নতুন দাম কার্যকর করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অতিরিক্ত দামে গ্যাস বিক্রির করা পরিবেশকদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

একক নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ হিসাবে বিইআরসি গত ১২ এপ্রিল বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এলপিজির খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে। এর আগে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এবং বেসরকারি কোম্পানিগুলো আলাদাভাবে গ্যাসের দাম নির্ধারণ করতো।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago