অভিষিক্ত জয়াবিক্রমার ঘূর্ণিতে সব এলোমেলো বাংলাদেশের

বিনা উইকেটে ৯৮। তারপরই জোড়া ধাক্কা। তা সামলে ৬৩ রানের জুটি। এই জুটি থামতে আর ৩৭ রানের মধ্যেই বাকি সব শেষ। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ধসে পড়ার গল্প এরকমই।  তামিম ইকবালের ব্যাটে দারুণ শুরুর পর অভিষিক্ত প্রবিন জয়াবিক্রমার বাঁহাতি স্পিনে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে মুমিনুল হকের দল। ভালো অবস্থা থেকে পড়েছে ফলোঅনে। যদিও লঙ্কানরা ফলোঅন না করিয়ে নিজেরাই আবার ব্যাট করতে নেমেছে। 

তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে অলআউট হওয়ার আগে বাংলাদেশ করে  ২৫১  রান। প্রথম ইনিংসে ৪৯৩ করা লঙ্কানরা তাই নিল ২৪২ রানের বিশাল লিড। শেষ বিকেলে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে দ্রুত রান বাড়ানোর তাড়া ছিল শ্রীলঙ্কার। ৭ ওভার খেলে তাতে ২ উইকেট হারিয়ে ১৭ রান তুলেছে তারা। ৮ উইকেট হাতে রেখে স্বাগতিকরা এগিয়ে গেছে ২৫৯ রানে। 

এর আগে বাংলাদেশকে একাই ধসিয়ে ৯২ রানে ৬ উইকেট নেন জয়াবিক্রমা। রমেশ মেন্ডিস আর সুরাঙ্গা লাকমাল নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।

চা-বিরতির ঠিক আগে মুশফিকুর রহিমকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিক যখন আউট হন তখন দলের রান ২১৪। ওই সময় থেকে ৩৭ রান তুলতে পড়েছে ৭ উইকেট। চা বিরতির পর ফিরে শুরু হয় একে একে ফেরার মিছিল। অধিনায়ক মুমিনুল হককে দিয়ে শুরু। জয়াবিক্রমার লো ফুটলস বলে ব্যাট আগেভাগে নামাতে পারেননি। সরাসরি তার সামনের পায়ের পাতায় লাগায় জোরালো আবেদন সাড়া দেন আম্পায়ার। লিটন দাস ক্রিজে এসে সড়গড় ছিলেন না। দুই বাউন্ডারি মারার পর জয়াবিক্রমাকে স্লিপে দেন সহজ ক্যাচ।

মেহেদী হাসান মিরাজ খানিকক্ষণ টিকে কিছুটা রান বাড়িয়েছেন। দুই অঙ্কে যাওয়ার পর তারও ইতি। জয়াবিক্রমার শিকার তিনিও। ৩ উইকেটে ২১৪ থেকে দ্রুত ৭ উইকেট ২৪১ রানে পরিনত বাংলাদেশ।

ফলোঅন এড়াতে তখন অনেকটা পথ। টেল এন্ডারদের উপর তা এড়ানোর ভরসা ছিল না। হয়ওনি। তাসকিন আহমেদকে এলবিডব্লিউ বানিয়ে ৬ষ্ঠ উইকেট তুলেন জয়াবিক্রমা। নতুন বল হাতে নিয়ে সুরাঙ্গা লাকমাল বোল্ড করে দেন শরিফুল ইসলামকে।  তাইজুল ইসলাম হন হিট উইকেট।

অথচ শ্রীলঙ্কার ৪৯৩ রানের জবাব দিতে নেমে দ্যুতিময় এক শুর পেয়েছিল বাংলাদেশ। তামিমের দাপটে উদ্বোধনী জুটিতেই এসে গিয়েছিল ৯৮ রান। স্ট্রোকের পশরায় বাংলাদেশের সফলতম ব্যাটসম্যান ঝড়ো ফিফটি পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। 

কিন্তু লাঞ্চের পরই বদলে যায় তামিমের খেলার গতি। ৭০ রানে গিয়েছিলেন যে ভঙ্গিতে, পরের দিকে পুরোই বদলে যায় ছবি। স্পিনাররা আসতেই মিলছিল টার্ন আর বাউন্স। প্রথম দিকে এগিয়ে মারতে গিয়ে গড়বড় হচ্ছিল তামিমের। সতর্ক হতে গিয়ে হয়ে আর বেশি দূর আগানো হয়নি। জয়াবিক্রমার বলে নব্বুইর ঘরে ক্যাচ দেন স্লিপে। 

মুমিনুল ক্রিজে এসে জীবন পেলেও পরে খেলছিলেন সাবলীল। মুশফিককে নিয়ে ৬৩ রানের জুটিতে বাড়াচ্ছিলেন আশা। কিন্তু তাদেরও থামান জয়াবিক্রমা। দারুণ এক ডেলিভারিতে রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লিউতে কাবু করেন মুশফিককে। এই আউটের পরই মূলত বাংলাদেশের উলটো পথে হাঁটা শুরু। 

ম্যাচের এখন যা গতিপ্রকৃতি তাতে বাংলাদেশের পক্ষে আনা খুবই কঠিন। কিংবা অসম্ভবও বলা চলে। স্পিনারদের জন্য রসদে ভরপুর হতে থাকা উইকেটে শেষ ইনিংসে বড় একটি লক্ষ্য পেতে যাচ্ছে মুমিনুল হকের দল।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

(তৃতীয় দিন শেষে) 

শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস:১৫৯.২ ওভারে ৪৯৩/৭ (ইনিংস ঘোষণা)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস:  ৮৩  ওভারে ২৫১(তামিম ৯২, সাইফ ২৫, শান্ত ০, মুমিনুল ৪৯, মুশফিক ৪০, লিটন ৮, মিরাজ ১৬, তাইজুল ৯, তাসকিন ০, শরিফুল ০ , রাহি  ; লাকমাল ২/৩০  , বিশ্ব ০/১৯, ম্যাথিউস ০/৭ , রমেশ ২/৮৬, জয়াবিক্রমা ৬/৯২ )

শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংস: ৭ ওভারে ১৭/২ ( থিরিমান্নে ২, করুনারত্নে ব্যাটিং ১৩*, ওসাদা ১, ম্যাথিউস ১; মিরাজ ১/৭ , শরিফুল ০/৮, তাইজুল ১/২)

Comments

The Daily Star  | English

Govt calls for patience as it discusses AL ban with parties

Taken the initiative to introduce necessary amendments to the ICT Act, says govt

58m ago