পশ্চিমবঙ্গ: হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত
সবে দুই ঘণ্টা হল ভোট গণনা শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। পোস্টাল ব্যালট গণনা প্রায় শেষ। ইভিএম খোলা হয়েছে। এক রাউন্ড গণনা শেষ।
আজ রোববার সকাল সোয়া ১০টা পর্যন্ত প্রাপ্ত প্রাথমিক ফলাফলে তৃণমূল কংগ্রেস ১১৬টি ও বিজেপি ১১০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
পোস্টাল ব্যালটে রাজ্যের শাসক তৃণমূলের প্রতি সমর্থনের একটা বড় প্রবণতা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেন মূলত রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। তবে এ বছর একটা বড় অংশের প্রবীণ নাগরিকেরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিয়েছেন।
২০১১ সালের বিপর্যয়ের পরও এই পোস্টাল ব্যালটের ক্ষেত্রে বামপন্থিরা নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছিল। কিন্তু, এবারের ভোটে একদম প্রাথমিকভাবে যা অনুমান করতে পারা যাচ্ছে যে, এই পোস্টাল ব্যালটের ক্ষেত্রে সেই পুরনো আধিপত্য বজায় রাখতে পারছে না বামপন্থিরা।
প্রথম রাউন্ডের গণনার যে প্রবণতা তাতে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে থাকলেও তাদের একদম ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি। এই প্রবণতা যদি বজায় থাকে, তাহলে নিশ্চিতভাবে এ কথা বলা যায় যে, তৃণমূল বা বিজেপি যে দলই সরকার গঠন করুন না কেন, তাদের বিরোধীরা কিন্তু সরকার পক্ষ থেকে সংখ্যার নিরিখে খুব একটা দূরে থাকবেন না।
ভোট গণনার প্রাথমিক প্রবণতা থেকে এটা নিশ্চিত যে, দীর্ঘদিন পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাতে একটা শক্ত বিরোধী শক্তি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশঃ স্পষ্ট হচ্ছে।
বস্তুত ১৯৭২ সাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাতে জোরালো বিরোধী শক্তি বলে কিছু ছিল না। ফলে শাসক শিবির বিধানসভার কক্ষকে সমুচিত গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে তেমন একটা যত্নবান ছিল না।
গণতন্ত্রে শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ অত্যন্ত জরুরি। দীর্ঘদিন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাতে এই শক্তিশালী বিরোধী না থাকার মাশুল মানুষকে অনেকখানি দিতে হয়েছে।
প্রাথমিক গণনাতে একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, বিজেপি ও তৃণমূল যে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি প্রচারপর্বে চালিয়েছিল, তার সুফল এই দুটি দলই সম্ভবত ঘরে তুলতে পারবে।
এই বিভাজনের রাজনীতির বাইরে মানুষের রুটি-রুজির সমস্যাকে তুলে ধরেছিল সংযুক্ত মোর্চা, মূলত বামপন্থীরা। মেরুকরণের রাজনীতির কাছে এই রুটি-রুজির প্রশ্নগুলো যে তেমন গুরুত্ব পায়নি, ফলাফলের প্রাথমিক প্রবণতা থেকে তা ওঠে আসছে।
Comments