পাল্লেকেলেতে বড় হারের অপেক্ষা

Mominul Haque
পাল্লেকেলেতে ১২৭ ও অপরাজিত ২৩ রান করেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। ছবি: এসএলসি

এখনো ম্যাচটা শেষ হয়ে যায়নি, সমীকরণে এখনো জেতার অঙ্ক আছে, আছে ম্যাচ বাঁচানোরও। তবে ওসব কথার কথা। বাস্তবতা বলছে পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশের বিশাল হার এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

রোববার কার্যত চতুর্থ দিনেই পাল্লেকেলে টেস্টের ফলটা হয়ে গেছে। প্রতিকূল আবহাওয়া যদি বাধা না হয় তবে কেবল আনুষ্ঠানিকতা পেতে দরকার পঞ্চম দিনের খেলা। ৪৩৭ রানের বিশ্ব রেকর্ড তাড়ায় নেমে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে করেছে ১৭৭ রান। এরপর দিনের খেলার ১২ ওভার বাকি থাকতে এরপর আলোকস্বল্পতায় বন্ধ হয়ে যায় ম্যাচ।

ম্যাচ জিততে হলে শেষ ৫ উইকেট নিয়ে করতে হবে ২৬০ রান, ম্যাচ বাঁচাতে ব্যাট করতে হবে তিন সেশন। ১৪ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন লিটন দাস, ৪ রান করে অপরাজিত মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের পরে আর স্বীকৃত কোন ব্যাটসম্যান অপেক্ষায় নেই। 

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়ে ৮৬ রানে ৩ উইকেট রমেশ মেন্ডিসের। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়া প্রাভিন জয়াবিক্রমা এখন পর্যন্ত পেয়েছেন ৫৮ রানে ২ উইকেট।

অসম্ভব রান তাড়ায় নেমে অ্যাপ্রোচ ঠিক করা ছিল মুশকিল। কারণ দুই অ্যাপ্রোচেই আছে বিপদ। বাংলাদেশ নিল ইতিবাচক ভূমিকা। তাতে লাভ হয়নি। চা-বিরতির আগে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান বিদায় নেন। স্কোরবোর্ডে জমা জয় ১১২ রান।

পাহাড়সময় রান তাড়ায় নেমে বরাবরই মতই তামিম ইকবাল আনেন আগ্রাসী শুরু। কিন্তু এদিন আর শুরুটা বড় করা হয়নি। রমেশের দারুণ এক ডেলিভারি ইতি টানে তামিমের।

২৬ বলে ২৪ রান করা তামিম শার্প টার্নে পরাস্ত হয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। তামিমের ফেরার পর তার ভূমিকা নেন সাইফ হাসান। তরুণ এই ওপেনার ছিলেন বড় রানের খোঁজে। শুরুটা তারও ভাল।

দৃষ্টিনন্দন শটে এগিয়ে নিচ্ছিলেন ইনিংস।  দ্বিতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে গড়ে উঠেছিল জুটি।

অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে ৪২ রানেই থামে জুটি। জয়াবিক্রমাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪৬ বলে ৩৪ করা সাইফ।

৭৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর ক্রিজে এসে ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করতে থাকেন অধিনায়ক মুমিনুল হকও। আরেক পাশে স্বাছন্দ্যে খেলতে থাকা  শান্তর সঙ্গে গড়ে উঠছিল জুটি।

জুটিতে ৩১ রান আসার পরই ছেদ। জয়াবিক্রমার বল ঠেকাতে গিয়েছিলেন শান্ত। শার্প টার্ন করে তা তার ব্যাট স্পর্শ করে লাগে স্টাম্পে। ৪৪ বলে ২৬ করে থামেন প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি পাওয়া এই ব্যাটসম্যান।  

দ্রুত রান উঠিয়ে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন মুমিনুল হক। তিনিও শিকার রমেশের। এই অফ স্পিনারের সোজা বল কাট করতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে বোল্ড হন। ৪৮ বলে বাংলাদেশ অধিনায়ক করেন ৩২ রান।

প্রথম ইনিংসের মতই খেলছিলেন মুশফিকুর রহিম। লিটন দাসকে নিয়ে একটা জুটি গড়ে উঠেছিল। মাঝারি সে জুটি দিন পার করতে পারেনি। ভালো খেলতে থাকা মুশফিক পায়ে চোট পাওয়ার পর কিছুটা অস্থির হয়ে গেলেন। টার্নিং উইকেটে টিকে থাকা হয়ে গেল মুশকিল। ৪০ রানে গিয়ে রমেশের লাফানো বলে তার ক্যাচ যায় লেগ স্লিপে। 

বাকিটা সময়ে আরও উইকেট ফেলার কাছে চলে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। লিটন, মিরাজ দুজনেই বাঁচেন রিভিউ নিয়ে। দিনের খেলা ১২ ওভার আগে শেষ না হলে তারা এদিন টিকে থাকতে পারতেন কিনা বড় প্রশ্ন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

(চতুর্থ দিন শেষে)

শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস:  ৪৯৩/৭ (ইনিংস ঘোষণা)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস:  ২৫১

শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংস: ৪২.২ ওভারে ১৯৪/৯ (ইনিংস ঘোষণা)

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ৪৮ ওভারে ১৭৭/৫  (লক্ষ্য ৪৩৭) (তামিম ২৪, সাইফ ৩৪, শান্ত ২৬, মুমিনুল ৩২, মুশফিক ৪০, লিটন ১৪*, মিরাজ ৪; লাকমাল ০/১৪, রমেশ ৩/৮৬, জয়াবিক্রমা ২/৫৮, ধনঞ্জয়া ০/১৬) 

 

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh Bank signals market-based exchange rate regime

The central bank will allow the exchange rate of the dollar to be determined by market forces

1h ago