চাঁপাইনবাবগঞ্জ

গ্রেপ্তারের ৩ ঘণ্টা পর আসামির মৃত্যু: র‌্যাবকে তদন্তের নির্দেশ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারী গ্রামে গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তারের তিন ঘণ্টা পর এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
Chapainawabganj.jpg
মর্গের সামনে নিহত সানাউল হক বিশ্বাসের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: স্টার

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারী গ্রামে গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তারের তিন ঘণ্টা পর এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু কাহার এই নির্দেশ দেন।

আদালতের আদেশে কয়েকটি পত্রিকার নাম উল্লেখ করে বলা হয়, বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের হাতে আটকের পর যুবকের মৃত্যু শিরোনামে একটি সংবাদ ব্যাপকভাবে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়। সংবাদটি বিশ্লেষণ করে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটের চাঁনশিকারী গ্রামের সানউল হক বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পত্রিকার রিপোর্টে আরও দেখা যায়, আটকের পর তাকে নির্যাতন করা হয়। যা বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৫ (৫) এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং প্রচলিত আইন ও মানবতাবিরোধী। উক্ত অপরাধ অনুযায়ী বিষয়টি আমলে নিয়ে সার্বিক বিবেচনায় তদন্ত করার জন্য রাজশাহী র‌্যাব-৫ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) এর কোম্পানি অধিনায়ককে নির্দেশ দেওয়া হলো।

নিহত সানাউল হক বিশ্বাস (৪৪) ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারী গ্রামের মুর্শেদ বিশ্বাসের ছেলে।

রোববার সন্ধ্যার আগে এ সংক্রান্ত একটি আদেশের কপি পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৫ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর নাজমুস সাকিব।

দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি জানান, ওই ঘটনা তদন্তের বিষয়ে আদালতের একটি আদেশের কপি তিনি পেয়েছেন।

আদালতের কপি পেলেও তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।

গত শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) এ এইচ এম আব্দুর রকিব বলেছিলেন, ‘সানাউলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ গত ১৪ এপ্রিল ১৬০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে এবং ওই দিনই তার বিরুদ্ধে মাদক মামলা করা হয়। এর পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। বৃহস্পতিবার তিনি বাড়ি ফিরেছেন, এমন সংবাদের ভিত্তিতে রাত পৌনে ৯টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি একটি আমবাগানে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। দৌড়ানোর সময় পড়ে গেলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর সানাউল বুকে ব্যথা অনুভব করছেন বলে পুলিশকে জানালে দ্রুত তাকে প্রথমে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। পুলিশ সাড়ে ১১টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে তাকে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে সানাউল মারা যান।’

এসপি নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পরই সানাউল বুকে ব্যথা অনুভব করছেন বলে জানান। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সানাউল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।’

নিহতের ছোট ভাই মাসুদ রানা বিশ্বাস শুক্রবার সদর হাসপাতাল থেকে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, ‘বৃহস্পতিবার আনুমানিক রাত ৯টার দিকে সানাউল বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী একটি দোকানে ডিম কিনতে যাচ্ছিলেন। এসময় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তাকে আমবাগানেই নির্যাতন করা হয়। এই নির্যাতনের কারণেই তার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তার ভাই মাদক সেবন করতেন। কিন্তু তিনি কখনো মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।’

আরও পড়ুন:

গ্রেপ্তারের ৩ ঘণ্টা পর আসামির মৃত্যু, ‘নির্যাতনের’ দাবি পরিবারের

Comments

The Daily Star  | English

‘Selling child for treatment tragic violation of rights’

NHRC takes suo motu cognizance of TDS report, vows to ensure rights of the family, asks Dinajpur DC to probe and submit report by Oct 15

16m ago