নাইজারে বন্দুকধারীদের হামলায় ১৬ সেনা নিহত
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে টহলরত সেনা সদস্যদের ওপর অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের অতর্কিত হামলায় ১৬ সেনা নিহত ও ছয় জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নিখোঁজ আছেন আরও একজন।
শনিবার নাইজারের পশ্চিমাঞ্চলে মালি সীমান্তের তাহুয়া অঞ্চলে এই আক্রমণ চালানো হয় বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
তাহুয়ার একজন সরকারি কর্মকর্তা ইব্রাহিম মিকোর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, শনিবার ‘দস্যুদের’ আক্রমণে ১৬ জন সেনা সদস্য নিহত, ছয় জন আহত এবং একজন নিখোঁজ হয়েছেন।
তিনি ওই হামলায় নিহত সেনাবাহিনীর টহল টিমের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মামান নামেওয়ারের শেষকৃত্য উপস্থিত ছিলেন।
পশ্চিম নাইজারের তাহুয়া অঞ্চলটি মরুভূমি অধ্যুষিত। ২০১২ সালের পর থেকে দেশটির মালি ও বুরকিনা ফাসো সীমান্তে মহামারির মতো সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে।
গত মার্চে নাইজারের মালি সীমান্তের তিনটি গ্রামে বিদ্রোহীদের আক্রমণে ১৪১ জন নিহত হন। গত কয়েক বছরের মধ্যে এটাই ছিল নাইজারে ঘটা সবচেয়ে নৃশংসতম সশস্ত্র হামলা।
জাতিসংঘের উন্নয়ন সূচকে বিশ্বের ১৮৯তম দরিদ্র দেশে হিসেবে নাইজারেও সংঘাতময় পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রতিবেশি দেশ মালি ও নাইজেরিয়া থেকে সেখানেও ছড়িয়ে পড়েছে সংঘাত।
নাইজারে এ ধরনের হামলার সঙ্গে আল-কায়েদা ও আইএসআইএল (আইএসআইএস)-এর সম্পৃক্ততা আছে বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
চলতি বছরের বেশ কয়েকবার সাধারণ মানুষের ওপর এ ধরনের হামলা হয়েছে। পশ্চিম নাইজারের কয়েকটি গ্রামে এবং তাঁবুতে বসবাসকারী মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে প্রায় ৩০০ নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে।
গত রবিবার নাইজার সরকার জানিয়েছে, দেশের পশ্চিমাঞ্চল থেকে আটকের পর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ২৪ জন ‘সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে’ সৈন্যরা হত্যা করে।
নাইজারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানান, দেশটির বানিবাঙ্গু মার্কেটে আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল সন্ত্রাসীরা। তবে সেনাবাহিনী সেখানে সতর্ক অবস্থায় থাকে। এরপর গত ২৮ এপ্রিল সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গোলাগুলির পর ২৬ জনকে তারা আটক করে। তবে তাদের মধ্যে আহত অবস্থায় আটক হওয়া একজন ‘সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী’ মারা যান।
তিনি আরও জানান, এরপর বৃহস্পতিবার রাতে তাদের নিকটবর্তী চিনেগদার মিলিটারি ঘাঁটিতে পাঠানোর জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছিল। সে সময় তারা পালানোর চেষ্টা করলে তাদের সতর্ক করার জন্য গুলি ছোড়া হয়। এরপরও তারা সেটা উপেক্ষ করে পালাতে চেষ্টা করলে তাদের মধ্যে ২৪ জন গুরুতর আহত হয় এবং একজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
এ বিষয়ে তদন্তও চলছে বলেও জানান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
Comments