করোনা চিকিৎসায় গায়ত্রী মন্ত্রে অর্থ বরাদ্দ দিলো মোদি সরকার

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণে বিপর্যস্ত ভারতের ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদি সরকার। আজ বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার পত্রিকার এক খবরে বলা হয়েছে, কোভিড রোগীদের চিকিৎসা ও দ্রুত সেরে ওঠার ক্ষেত্রে নিয়মিত গায়ত্রী মন্ত্র জপ ও প্রাণায়াম কার্যকরী হতে পারে কিনা তা জানতে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হৃষিকেশের ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস)’। ভারতের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাতে অর্থ বরাদ্দ করেছে।
ভারতের নয়াদিল্লির একটি হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন ডাক্তাররা। ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণে বিপর্যস্ত ভারতের ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদি সরকার। আজ বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার পত্রিকার এক খবরে বলা হয়েছে, কোভিড রোগীদের চিকিৎসা ও দ্রুত সেরে ওঠার ক্ষেত্রে নিয়মিত গায়ত্রী মন্ত্র জপ ও প্রাণায়াম কার্যকরী হতে পারে কিনা তা জানতে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হৃষিকেশের ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস)’। ভারতের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাতে অর্থ বরাদ্দ করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই খবরটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু গত ২০ মার্চ প্রকাশ করে।

আজ বৃহস্পতিবার ভারতের দ্য প্রিন্ট অনলাইন সংবাদমাধ্যমে গুজরাট বিধানসভার স্বতন্ত্র আইনপ্রণেতা ও রাষ্ট্রীয় দলিত অধিকার মঞ্চের আহ্বায়ক জিগনেশ মেভানির একটি মতামত প্রকাশিত হয়। ভারতের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে সরকারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে সেই লেখাটিতে তিনি এই অর্থ বরাদ্দের সমালোচনা করেছেন। সেই সূত্রে পুরনো এই খবরটি আবারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

গত মার্চে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুসহ কয়েকটি পত্রিকা জানায়, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল রেজিস্ট্রিতে নথিভুক্ত ২০ জন কোভিড রোগীর ওপর এ ট্রায়াল পরিচালনা করা হবে। মাঝারি পর্যায়ের উপসর্গ থাকা ওই ২০ জন রোগীকে দুটি দলে ভাগে ভাগ করা হবে। এদের মধ্যে এক দলকে প্রচলিত চিকিৎসা ও অন্য দলকে চিকিৎসা পদ্ধতির সঙ্গে নিয়মিত গায়ত্রী মন্ত্র জপ ও শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করানো হবে। ১৪ দিন ধরে এ অনুশীলন চলবে। একজন স্বীকৃত যোগশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে রোগীরা প্রাণায়াম করবেন।

তারপরে এই দল দুটির মধ্যে তুলনা করে দেখা হবে, যাদের নিয়মিত গায়ত্রী মন্ত্র জপ ও প্রাণায়াম করানো হয়েছিল করোনা থেকে সেরে ওঠার ক্ষেত্রে তাদের দেহের কোষের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রদাহের মাত্রা কিছুটা কম হয়েছে কি না।

গুরুতর করোনা রোগীদের মধ্যে শরীরের প্রতিরোধী ব্যবস্থার অতি সক্রিয়তা দেখা যায়, যা রোগীকে মারাত্মক সেলুলার প্রদাহ ও ভয়াবহ শারীরিক ক্ষতির দিকে ঠেলে দেয়। এটি নিরাময়ে বেশ কয়েকটি পরীক্ষামূলক থেরাপির কথা বলা হলেও এখনও কোনও নির্দিষ্ট ড্রাগ 'সফল' হিসেবে প্রমাণিত হয়নি।

এই ট্রায়াল গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ওপর পরিচালিত হবে না। ওই দল দুটির মধ্যে রোগীদের নেগেটিভ শনাক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে কত সময় লাগছে, সেরে ওঠার ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য আছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখা হবে। তাদের হাসপাতালের থাকার সময়কালও মূল্যায়ন করে দেখা হবে। গায়ত্রী মন্ত্র জপ ও প্রাণায়াম করোনা রোগীদের ক্লান্তিভাব ও চরম মাত্রার উদ্বেগজনিত সমস্যা নিরাময়ে প্রভাব ফেলছে কিনা সেটিও মূল্যায়ন করা হবে।

পালমোনোলজিস্ট ও এইমস-এর সহযোগী অধ্যাপক ডা. রুচি দুয়া দ্য হিন্দুকে জানান, এই গবেষণার জন্য রোগীদের বাছাই শুরু হয়ে গেছে।

এই গবেষণাটি পরিচালনার জন্য তিন লাখ রুপি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ওষুধ ও ভ্যাকসিনের পাশাপাশি, উপসর্গহীন ও হালকা উপসর্গের করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে ভারত প্রচলিত চিকিত্সার পাশাপাশি আয়ুর্বেদ ও যোগব্যায়ামের দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে।

অন্যান্য আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা যেমন পতঞ্জলির করোনিলকেও কোভিড -১৯-এর চিকিৎসায় সফল হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। যদিও কেবল রোগের হালকা উপসর্গ থাকা একটি ছোট দলের ওপর ভিত্তি করে ওই ট্রায়াল পরিচালনা করা হয়েছিল।

ডিএসটি এর আগেও রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে যোগ ব্যায়াম বা বিকল্প ওষুধের প্রভাব মূল্যায়নের জন্য অর্থায়ন করেছে।

Comments