অনিয়মের প্রতিবাদী আবদুস সোবহান উপাচার্য হয়ে যেভাবে অনিয়মে জড়ালেন

অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুস সোবহান জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন শিক্ষার বিস্তারের জন্য, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নানা অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে।

কিন্তু যখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলেন, তখন তিনি তার সমস্ত আদর্শ থেকে পিছু হটতে শুরু করলেন।

নিজ আদর্শ থেকে বিচ্যুত এই উপাচার্যের পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে, গত বৃহস্পতিবার, তার দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ দিনে, তার অপকর্মের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে যখন অস্থিতিশীল পরিবেশের তৈরি হয়, তখন পুলিশি পাহারায় তার ক্যাম্পাস ছাড়ার প্রয়োজন পড়ে।

অফিসে মেয়াদের শেষ দিনে সদ্য সাবেক এই উপাচার্য সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে, নিয়োগের সব শর্ত ভঙ্গ করে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী পদে মোট ১৩৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে যান।

তবে ঘটনার দিন সন্ধ্যায়, এই নিয়োগকে 'অবৈধ' ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া এই অবৈধ নিয়োগের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও গঠন করে মন্ত্রণালয়।

গত শনিবার এই তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তদন্ত কাজ শুরু করে।

এছাড়া এই তদন্ত কমিটির তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত নিয়োগপ্রাপ্ত সবার চাকরিতে যোগদান প্রক্রিয়া স্থগিত ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর।

এক নজরে অধ্যাপক আবদুস সোবহান

অধ্যাপক আবদুস সোবহান ১৯৫৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন এবং ১৯৭৯ সালে একই বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

তিনি অস্ট্রেলিয়ার নিউ ক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯২ সালে পিএচডি ডিগ্রি অর্জন করার পর, ১৯৯৭ সালে রাবিতে অধ্যাপক পদমর্যাদা পান।

২০০০ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ২০০৮ সালে দুই বছরের জন্য প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়কের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।

অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতেন অধ্যাপক সোবহান

বিএনপি-জামায়াত প্রশাসনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধ নিয়োগ ও বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে অন্যদের সঙ্গে আবদুস সোবহানও সোচ্চার ছিলেন। বিশেষ করে ২০০৪ সালে যখন উপাচার্য ফাইসুল ইসলাম ফারুকী অনিয়মের মাধ্যমে ৫৪৪ জনকে নিয়োগ দিয়েছিলেন, তখন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি।

এছাড়া ২০০৭ সালে বাজেটে অর্থ বরাদ্দ না থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ২০০ জন কর্মচারী নিয়োগ দেয়। জানা যায়, টাকার বিনিময়ে আরও ৮০০ জনকে নিয়োগের চেষ্টা করা হয় সেসময়। এঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে যে প্রতিবাদের সূচনা হয়েছিল তার সামনের সারিতে ছিলেন অধ্যাপক আবদুস সোবহান।

সেসময় দ্য ডেইলি স্টারকে অধ্যাপক সোবহান বলেছিলেন, "নিয়োগে নগদ অর্থ লেনদেনের ঘটনা উদ্বেগজনক এবং বাজেট না থাকা সত্ত্বেও এই বিতর্কিত নিয়োগগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি বোঝা হয়ে থাকবে।"

তত্ত্বাবধায়ক শাসনের সময়, ২০০৭ সালে ছাত্র ও শিক্ষক আন্দোলনে যোগ দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ৬ শিক্ষকের সঙ্গে আবদুস সোবহানও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এসময় টানা ১০৪ দিন কারাবন্দী ছিলেন তিনি।

এরপর ২০০৮ সালে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে অভিযুক্ত তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আলতাফ হোসেনকে ইউজিসির শুনানিতে হাজির করতেও মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি।

প্রথম মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণ

শিক্ষক জীবনের প্রথমার্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অধ্যাপক সোবহানের লড়াইয়ের সব রেকর্ড শুধুমাত্র অতীত স্মৃতিতে পরিণত হয়ে যায়, যখন তিনি ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো উপাচার্য হন।

বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক ও চাকরিপ্রার্থীদের করা বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাপক সোবহানের করা সব অনৈতিক কার্যক্রম একসময় প্রকাশ্যে চলে আসতে শুরু করে।

উপাচার্য হিসেবে সভাপতিত্ব করা প্রথম সিন্ডিকেট সভাতেই বিজ্ঞাপিত ২১টি পদের বিপরীতে ৫১ জন শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন দেন তিনি। ২০১৩ সালে প্রথম মেয়াদ শেষ করার আগ পর্যন্ত তিনি সর্বমোট ৩৩০ জন শিক্ষক নিয়োগ দেন, যার মধ্যে ৯৫ জনই ছিলেন এডহকভিত্তিতে। এছাড়া কর্মকর্তা কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিল ৫৯৫ জন।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের টেন্ডার প্রদানে অনিয়ম করার পাশাপাশি, তিনি নিম্ন যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার মাধ্যমেও নানা অনিয়ম  করেছিলেন, বলেও অভিযোগ ছিল।

এমনকি তাকে সমর্থন না করায় এক সহকর্মীকে হেনস্তা করার অভিযোগও উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।

এছাড়া ২০১০ সালে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের হামলায় ছাত্রলীগ নেতা ফারুক হত্যাকাণ্ডের পর, আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবিরকে পৃষ্ঠপোষকতা করার অভিযোগ ওঠে।

ইউজিসির বেতন-বাজেটের অনুমোদন ছাড়াই বিশাল নিয়োগের কারণে অধ্যাপক সোবহানের সময় বিশ্ববিদ্যালয়টি ৫০ কোটি টাকারও বেশি তহবিল ঘাটতির কবলে পড়ে।

এই ঘাটতি বাজেট কাটিয়ে উঠতে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফি বাড়ানোর পাশাপাশি সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু করতে হয়েছিল প্রশাসনকে।

দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ

প্রথম মেয়াদে তার বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের কখনোই কোনো তদন্ত হয়নি। যার ফলস্বরূপ রাবি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০১৭ সালে মে মাসে দ্বিতীয় মেয়াদে আবারও উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান সোবহান।

নিয়োগের প্রথম দিকে তার বিরুদ্ধে আচার্যকে ধোঁকা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

জানা যায়, অধ্যাপক সোবহান ২১ জুন, ২০১৭ তারিখে একদিনের জন্য উপাচার্য পদটি শূন্য রেখেছিলেন, যাতে তিনি তার বিভাগ ফলিত পদার্থবিজ্ঞান এবং ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিতে পারেন। তবে এই প্রক্রিয়াটির জন্য আচার্যের অনুমতি নেবার প্রয়োজন থাকলেও তিনি তা নেননি।

এদিকে ২১ জুন বিভাগের শিক্ষকতা পদ থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করার পর উপাচার্য ২৪ জুন রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠি পাঠান। তাতে তিনি ২৯ জুন থেকে অবসর গ্রহণের জন্য আবেদন করেন। তবে চিঠিতে তিনি ২১ জুনের স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণের বিষয়টি গোপন রাখেন। এই অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে আচার্য ও রাষ্ট্রপতি তাকে ২৯ জুন থেকে অবসর–পরবর্তী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখার অনুমতি দেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে, আবদুস সোবহান কোন কর্তৃত্ববলে উপাচার্য পদে বহাল আছেন, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। তবে তার আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।

এরপর ২০১৭ সালের আগস্টে, সোবহান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের আদর্শ নীতিমালা পরিবর্তনের পদক্ষেপ নেন। পরিবর্তিত নীতিমালায় দেখা যায়, তিনি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং বয়সসীমা শিথিল করেছেন।

শিথিল করা এই নিয়োগ নীতিমালাকে ব্যবহার করে ২০১৭ সালের অক্টোবরে তিনি তার জামাতা এবং মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন, যারা কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হতে চেয়েও পারেননি।

শুধু জামাতা-মেয়েই নয়, পরিবর্তিত নীতিমালার কারণে অনেকেরই শিক্ষক হিসেবে চাকরির সুযোগ উন্মুক্ত হয়ে যায়। এই নীতিমালায় পরবর্তীতে ৩৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় যারা আগের নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী আবেদন করারও যোগ্য ছিলেন না।

উপাচার্য সোবহান তার দ্বিতীয় মেয়াদে এই ৩৪ জনসহ, সবমিলিয়ে মোট ৫২ জন শিক্ষক এবং ১৯১ জন কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন।

তিনি নিম্ন-স্তরের কর্মচারীদের নিয়োগের জন্যেও বয়সসীমা বাড়িয়েছেন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতাও কমিয়েছিলেন।

ইউজিসির এক তদন্তে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের জন্য নির্ধারিত বাসভবনের পাশাপাশি অধ্যাপক সোবহান একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি ১৮ মাস ধরে নানা অজুহাতে দখলে রেখেছিলেন, যে কারণে ৫ লাখ ৬১ হাজার ৬০০ টাকা সরকারি রাজস্ব ক্ষতি হয়।

এতে আরও প্রমাণিত হয় যে, প্রাক্তন এই উপাচার্য তার অপকর্ম চালাতে নিজ আত্মীয়স্বজন এবং তার অনুগত শিক্ষকদের ব্যবহার করতেন। এই প্রতিবেদনে সোবহান এবং আরও সাত জনের সম্পদের হিসাব খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

অধ্যাপক সোবহান তার মেয়াদকালের শেষ দুই মাসে তিনটি প্রকল্প অনুমোদন করেছেন, এগুলো হলো ১৫ কোটি টাকার ড্রেন নির্মাণ, ১২ কোটি টাকায় শিক্ষকদের কোয়ার্টারের সম্প্রসারণ এবং ৯ কোটি টাকার অডিটোরিয়াম মেরামত। এই প্রকল্পগুলির খরচে অতিরিক্ত মূল্য ধরা হয়েছে এবং এগুলার দায়িত্ব তার পছন্দের ব্যক্তিদের দেওয়া হয়েছে, যা  নিয়মের প্রতি অবজ্ঞা বলে, অভিযোগ করেছেন একাধিক শিক্ষক।

ইউজিসির তদন্তে রাবিতে অনিয়মের কথা উঠে আসার পর গত বছরের ১০ ডিসেম্বর সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখতে উপাচার্য আবদুস সোবহানকে নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

তবে এ বছরের জানুয়ারিতে শারীরিক প্রতিবন্ধী একজনকে নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়। এই নিয়োগের পরে, সোবহান চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলেন যাতে তাদেরও নিয়োগ দেওয়া যায়।

একটি অডিও ক্লিপের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, উপাচার্য ক্ষমতাসীন দলের লোকদের চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং চাকরি না হলে পরে আবারো তাদেরকে আন্দোলন করার জন্য বলেছিলেন।

এর আগে, ২০২০ সালের অক্টোবরে, উপাচার্যের নিজ নামে-- সোবহানিয়া আল কুরআনুল করিম হিফজখানা, মাদ্রাসা তৈরির কারণে তিনি সমালোচিত হন। যা তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলের দুই কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছিল।

অধ্যাপক সোবহানের বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক খলিলুর রহমান বলেন, সোবহানের প্রথম মেয়াদে তিনি পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক ছিলেন। সেখানে সোবহানের পছন্দের লোকদের নিয়োগের জন্য তাকে চাপ দেয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, প্রথম মেয়াদের মাঝামাঝি সময় থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়তে শুরু করে সাবেক এই উপাচার্য।

সেই মেয়াদে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়ার রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও তাকে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সদ্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক সোবহান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, এই নিয়োগগুলো প্রয়োজন ছিল। ‘যারা ডিজার্ভ করে তারাই নিয়োগ পেয়েছে। তাদের প্রত্যেকেই অনার্স-মাস্টার্স পাস এবং আওয়ামী পরিবারের সন্তান। দীর্ঘদিন ধরে তাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে যাচ্ছিল। তাই আমি মানবিক কারণে ছাত্রলীগকে চাকরি দিয়েছি’, বলেন তিনি।

এর আগে আপনিই এধরনের নিয়োগের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন, এখন আপনি নিজেই এধরনের নিয়োগ দিচ্ছেন কীভাবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তখনকার ঘটনার প্রেক্ষিতে কোনো তদন্ত কমিটি হয়নি, অবৈধ ঘোষণা করা হয়নি। অথচ আমি ছাত্রলীগকে নিয়োগ দেয়ার কারণে এখন তদন্ত করতে হবে। আমি আমার ব্যক্তিস্বার্থে কিছু করিনি। এটা যদি আমার ব্যাক্তি স্বার্থে করতাম, তাহলে অনৈতিক অন্যায় বলতাম।’

সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও কেন নিয়োগ দেওয়া হলো? জবাবে তিনি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী উপাচার্যের ক্ষমতাবলে এ নিয়োগ দিয়েছি।

এখন যদি সরকার থেকে এ ধরনের আদেশ আসে তাহলে তো বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশই বাতিল করা উচিত, বলেন তিনি।

অধ্যাপক সোবহান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে, কোনো ধরনের সত্যতা যাচাই না করে, আমার সাথে আলোচনা না করেই ভুল তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

নিয়োগে কোনো অনিয়ম করেছেন কি না? প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক সোবহান বলেন, ‘আমি মনে করি এই নিয়োগ যৌক্তিক, তাই আমি নিজ দায়িত্বে এটা দিয়েছি।’

আরও পড়ুন-

উপাচার্যের ‘মানবিক’ নিয়োগে ‘অমানবিক’ অনিয়ম

‘চাকরিটা না থাকলে, মৃত্যু ছাড়া উপায় থাকবে না’

রাবিতে ‘অবৈধ’ নিয়োগের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের

রাবি উপাচার্যের নিয়োগ দুর্নীতি: ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি রাবিতে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ অবৈধ: শিক্ষা মন্ত্রণালয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মহানগর ও রাবি ছাত্রলীগের সংঘর্ষ

রাবি উপাচার্যের জামাতার বিরুদ্ধে ‘গোপন নথি’ চুরির অভিযোগ



‘দুর্নীতিবিরোধী’ শিক্ষকদের বাধার মুখে রাবি সিন্ডিকেট সভা স্থগিত

উপাচার্য ভবনের পরে রাবি সিনেট ও প্রশাসন ভবনেও তালা



রাবি উপাচার্য ভবনে আবারও তালা!



রাবিতে দুর্নীতি-অনিয়ম: ইউজিসি প্রতিবেদন দিলেও সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করছে সরকার



ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদন একপেশে ও পক্ষপাতমূলক: রাবি উপাচার্য



এবার প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছে রাবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা



উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন রাবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা



ছাত্রলীগকে চাকরি দিতে ‘সর্বোচ্চ’ অগ্রাধিকারের আশ্বাস রাবি উপাচার্যের

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

6h ago