ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে তেমন ভিড় নেই

আজ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বেলা সাড়ে ১২টার চিত্র। ছবি: স্টার

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে মানুষ বা যানবাহনের তেমন ভিড় নেই। তবে, পোশাক কারখানাগুলো ছুটি দিলে আজ বিকেল থেকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর গেটওয়ে হিসেবে পরিচিত ব্যস্ত এই মহাসড়কে চাপ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় গত কয়েকদিন এই মহাসড়ক হয়ে বাড়ি ফিরতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হাজারো মানুষকে। আজও এই মহাসড়ক দিয়ে মানুষ বাড়ি যাচ্ছেন। তবে, সর্বশেষ দুপুর পর্যন্ত গাড়ি বা যাত্রীর সংখ্যা খুব বেশি ছিল না।

এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসির আরাফাত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। দূরপাল্লার বাস চলছে না। গার্মেন্টস ছুটি দেওয়ার পর পরিস্থিতি কেমন হবে, তা এখনই বলা যাবে না। তবে, আমরা প্রস্তুত আছি এবং আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।’

মোহাম্মদ আলী নামে গাইবান্ধাগামী এক মাইক্রোবাস যাত্রী ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত কয়েক বছরের মধ্যে এই প্রথম ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক পাড় হয়ে গেলাম কোনো ভোগান্তি ছাড়াই। তবে, এবার যাত্রা খরচ কিছুটা বেশি হয়েছে। যদিও ঈদে বাড়ি যেতে পারার আনন্দের তুলনায় তা কিছুই না।’

বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর পর থেকে উত্তরবঙ্গের ১৬টিসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহের ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচটি করে মোট ২৬টি জেলার প্রায় ১১৬টি রুটের গাড়ি চলে চার লেনের এই মহাসড়কে। অতিরিক্ত যাত্রী ও যানবাহনের চাপে যানজটের সৃষ্টি হয়ে প্রতিবছর ঈদ যাত্রায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হতে হয় ঘরে ফেরা মানুষদের। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ গাড়ি চলায় এবং আনফিট গাড়ি নষ্ট হয়ে অন্যান্য বছরগুলোতে রাস্তায় সমস্যা হলেও গত দুবছর সমস্যা হয়েছে বঙ্গবন্ধু সেতুর দুই প্রান্তে। বিশেষ করে পশ্চিম প্রান্ত থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড় পর্যন্ত।

আজ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বেলা সাড়ে ১২টার চিত্র। ছবি: স্টার

প্রতিবছরই টাঙ্গাইল জেলা পুলিশসহ বিভিন্ন বিভাগ ঘরমুখো মানুষদের নিরাপদে বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করতে তাদের নানান প্রস্তুতির কথা জানালেও শেষ পর্যন্ত যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতেই হয়েছে। এবারো জেলা পুলিশের ৭০০ সদস্যকে মহাসড়কের টাঙ্গাইল জেলা অংশের ৫৪টি পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে।

তবে, এবার করোনার কারণে সরকারি নির্দেশনায় ট্রেন ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় মহাসড়কে ভিন্ন চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়াও কার, অসংখ্য মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স, পিকআপ, লেগুনা, ট্রাক ও মোটরসাইকেলে গাদাগাদি করে বাড়ি ফিরছে মানুষ। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি।

দূরপাল্লার বাস চলাচল না করায় ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ যেমন বেড়েছে, তেমনি ভেঙে ভেঙে যাওয়ায় স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি অর্থ খরচ হচ্ছে। খোলা ট্রাকে বাড়ি ফেরা নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর অধিকাংশই অবশ্য বরাবর এভাবেই বাড়ি ফেরেন। পথের কষ্ট, ক্ষুধা-তৃষ্ণা, রোদ-বৃষ্টি— কোনো কিছুই তাদের ঘরে ফেরার আনন্দকে ম্লান করতে পারে না।

গোরাই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন দুপুর সাড়ে ১২টায় ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এখন রাস্তা প্রায় ফাঁকা। তবে, দুপুরে গার্মেন্টস ছুটি হওয়া শুরু হলে বিকেল থেকে মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেড়ে যাবে।’

‘রাস্তার অবস্থা ভালো থাকায় ও দূরপাল্লার বাস চলাচল না করায় যানজটের সম্ভাবনা কম থাকলেও ফাঁকা রাস্তায় দ্রুত চলতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য আমরা সচেষ্ট আছি। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে স্পিডগান দিয়ে যানবাহনের গতি মাপা হচ্ছে’, তিনি যোগ করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Govt issues notification banning AL activities

A Public Security Division joint secretary confirmed the matter

28m ago