গাজীপুরে যানবাহনের অপেক্ষায় রাস্তায় ঘরমুখী মানুষের ঢল

স্বজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছাড়ছেন হাজারো মানুষ। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ঢাকা এবং এর আশেপাশের এলাকা থেকে নিম্ন আয়ের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পণ্যবাহী ট্রাকে-মিনি ট্রাকে বাড়ি ফিরছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ট্রাকে চেপে ঘরমুখী মানুষদের রওনা হতে দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত

স্বজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছাড়ছেন হাজারো মানুষ। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ঢাকা এবং এর আশেপাশের এলাকা থেকে নিম্ন আয়ের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পণ্যবাহী ট্রাকে-মিনি ট্রাকে বাড়ি ফিরছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ৩টা পর্যন্ত গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে কয়েক হাজার মানুষকে যানবাহনের অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

গাজীপুর সদর উপজেলার সিড়িঁচালা এলাকায় এসএম নিটওয়্যার লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন রুবেল মাহমুদ। আজ দুপুর পৌনে ৩টার দিকে ভবানীপুর বাসস্ট্যান্ডে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় তাকে।

রুবেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে পোশাক কারখানা ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে। জামালপুরের মেলান্দদহে যাব জন্য সকাল ১১টায় পরিবার নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে এসেছি। দুপুর পৌনে ৩টা পর্যন্ত কোনো গাড়ি পাইনি।’

একই পোশাক কারখানায় কাজ করে রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বেতনের পুরো টাকা আমার কাছে। বাড়ি গিয়ে ঈদের কেনাকাটা করবো। বাস বন্ধ, ভেঙে ভেঙে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। পৌঁছাতে হয়তো রাত ১২টা বেজে যাবে।’

Gazipur1_11May21.jpg
আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘরমুখী মানুষদের যানবাহনের অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। ছবি: আবু বক্কর সিদ্দিক/স্টার

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অধিকাংশ পোশাক কারখানা গতকাল ঈদের ছুটি দিয়েছে। অনেক কারখানা আজ ছুটি হয়েছে। যে কারণে মূলত পোশাক শ্রমিক এবং নিম্ন আয়ের মানুষ বাড়ি ফেরার জন্য রাস্তায় যানবাহনের অপেক্ষা করছেন। চান্দনা চৌরাস্তা, শালনা, পোড়াবাড়ি, ভবানীপুর, মাওনা চৌরাস্তা, জৈনাবাজার ও রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা এলাকায় এখনো প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ রয়েছে। ট্রাকে, মিনি ট্রাকে যে যেভাবে পারছে বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছে।’

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষদের যানবাহনের অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ছবি: পলাশ খান/স্টার

তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তায় ৫২৯ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। মূলত ঘরমুখী মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও যানজট নিরসনের জন্য পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। বাস বন্ধ থাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোথাও যানজট নেই।’

চন্দ্রা এলাকা থেকে দ্য ডেইল স্টার’র ফটো জার্নালিস্ট পলাশ খান আজ সকালে জানিয়েছেন, সকাল থেকেই চন্দ্রা এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষদের যানবাহনের অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। তাদের অধিকাংশই পোশাক শ্রমিক। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করায় তারা দেশের উত্তরাঞ্চলে যাওয়ার জন্য রাস্তায় যানবাহনের অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে রওনা হচ্ছেন।

এ ছাড়া, মোটরসাইকেল, অটোরিকশায় অনেকে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যের উদ্দেশে যাচ্ছেন। ভাড়া দিতে হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ। অনেক মোটরসাইকেলে চার জন যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। একটি পিকআপ ভ্যানে চন্দ্রা থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে— জানান পলাশ খান।

Comments

The Daily Star  | English
Rapidly falling groundwater level raises fear for freshwater crisis, land subsidence; geoscientists decry lack of scientific governance of water

Dhaka stares down the barrel of water

Once widely abundant, the freshwater for Dhaka dwellers continues to deplete at a dramatic rate and may disappear far below the ground.

9h ago