কোয়াডে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র
কোয়াডে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। অবাধ ও মুক্ত ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গঠনের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কোয়াড গঠন করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা বলতে চাই, আমরা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করি। একইসঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারকেও আমরা শ্রদ্ধা করি।’
তিনি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অবিশ্বাস্য রকমের দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে দুদেশ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে।
নেড প্রাইস বলেন, ‘ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমরা কোয়াড গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা আগেও বলেছি, কোয়াড একটি অনিয়মিত, বহুপাক্ষিক ও গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের মতো সমমনা গণতান্ত্রিক দেশগুলো অবাধ ও মুক্ত ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গঠনে সমন্বিতভাবে কাজ করবে।’
গত ১০ মে চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ‘কোয়াডে অংশ নিলে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক “যথেষ্ট খারাপ” হবে।’ ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে কোয়াডকে ‘সামরিক জোট’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চীনের উত্থান ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে চীনের সম্পর্কের বিপক্ষে কাজ করতে এটা তৈরি করা হয়েছে।’ তার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নেড প্রাইস কোয়াড সম্পর্কে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কোয়াড একটি “সংকীর্ণ-উদ্দেশ্যমূলক” ভূ-রাজনৈতিক জোট এবং বাংলাদেশের এই জোটে যোগ দেওয়া উচিত হবে না। এখান থেকে বাংলাদেশের কোনো লাভ হবে না।’
লি আরও বলেন, ‘ইতিহাস বারবার প্রমাণ করেছে, এই ধরনের অংশিদারিত্ব আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণকে ব্যাহত করেছে।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, চীনা রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্যে তিনি বিস্মিত। তিনি বলেন, ‘একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ নিজেই তার পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
তিনি জানান, বঙ্গবন্ধুর নীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’ নীতি অনুসরণ করে কোনো সামরিক জোটে অংশ নেবে না।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চীনের নেতৃত্বে গঠিত ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’-এ অংশ নিয়েছে।
কোয়াডে যোগ দেওয়ার জন্য কোনো সদস্য দেশের কাছ থেকে এখনো অনুরোধ আসেনি বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:
চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে আমরা বিস্মিত
‘চীনা রাষ্ট্রদূত একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন, তারা যা চায় তা বলতেই পারেন’
কোয়াডে অংশগ্রহণ বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক ‘যথেষ্ট খারাপ’ করবে: চীনা রাষ্ট্রদূত
Comments