শিমুলিয়া ঘাটে আজ যাত্রীদের চাপ নেই
আগামীকাল ঈদুল ফিতর। শেষ দিনে অনেক মানুষ পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে কর্মস্থল ত্যাগ করছেন। মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার নৌপথে ফেরি পারের জন্য অপেক্ষা নেই। এক ঘণ্টা সময়ের মধ্যে ফেরিতে যাত্রীরা পদ্মা পার হচ্ছে। একেকটি ফেরি ২০ থেকে ৩০ মিনিট পরপর ঘাটে আসছে। এ নৌ রুটে সকাল থেকে চলাচল করছে ১৫টি ফেরি।
ভোর থেকে কয়েক ঘণ্টা যাত্রীদের ভিড় থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ কমতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এমনটাই দেখা গেছে লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটে।
মাজহারুল ইসলাম রুমান নামে এক যাত্রী জানান, দুপুর ২টায় ঘাটে এসে সরাসরি ফেরিতে উঠতে পেরেছি। এখন আর দুঃশ্চিন্তা নেই। তবে যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
আরেক যাত্রী তাসলিমা আক্তার জানান, গতকাল শিমুলিয়া ঘাটে অনেক ভিড় ছিল। তাই পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন হবে না এমনটিই ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু আজ সকালে খবর নিয়ে দেখি ঘাটের পরিস্থিতি ভালো। ঘাটে এসে দেখি ফেরি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
বিআইডব্লিউটিসি'র শিমুলিয়া ঘাটের ব্যাবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান জানান, শিমুলিয়াঘাট থেকে বাংলাবাজার ঘাটের দূরত্ব প্রায় ১৩ কিলোমিটার। আর ফেরিতে যাত্রীরা এক ঘণ্টা কিংবা সোয়া ঘণ্টার মধ্যে পদ্মা পার হতে পারছেন। গত দিনগুলোতে যাত্রীদের জন্য ফেরি লোড আনলোডে অনেক বেশি সময় লাগছিল কিন্তু আজকের প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
বিআইডব্লিউটিসি'র শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সকাল থেকে সবগুলো ফেরি চলাচল করছে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে। মাদারিপুরের বাংলাবাজার থেকে ফেরিগুলোতে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ খুবই কম। যার কারণে বেশিসময় ব্যয় হচ্ছে না যাত্রী পারাপারে। সকালে যাত্রীদের ভিড় থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের উপস্থিতি কমতে শুরু করেছে। ঘাট এলাকায় ৩ শতাধিক গাড়ি পারের অপেক্ষায় আছে। এসবের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রাক, প্রাইভেটকারের সংখ্যাই বেশি। অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়িগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগে ফেরিতে উঠতে দেওয়া হচ্ছে। ঘাটে এসে যাত্রীরা সরাসরি ফেরিতে উঠে যেতে পারছেন এবং পাশাপাশি গাড়িও পার হচ্ছে। ২০-৩০ মিনিট পর পর তিনটি টার্মিনালে ফেরি আসছে।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশ ইন্সপেক্টর হিলাল উদ্দিন জানান, ধারাবাহিকভাবে গাড়ি পার করা হচ্ছে। ফেরি চলাচল সচল থাকার কারণে গাড়িগুলো পর্যায়ক্রমে ফেরিতে যেতে পারছে।
মাওয়া নৌ-পুলিশের অফিসার ইনিচার্জ সিরাজুল কবীর জানান, ভোর থেকে পদ্মা নদীতে নৌ-পুলিশের সদস্যরা টহল অব্যাহত রাখায় কোনো ট্রলার যাত্রী বহন করেনি। পাশাপাশি কোস্ট গার্ডের সদস্যরাও স্পিডবোটের মাধ্যমে অভিযান পরিচালিত করছে।
মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মাহফুজ আফজাল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ঘাট এলাকায় শতাধিক পুলিশ সদস্য ঘাট পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিয়োজিত আছে। সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাত্রীদেরকে বুঝিয়ে নিয়ম মেনে ফেরিতে প্রবেশের জন্য বলা হচ্ছে। অনেকে মানছেন অনেকে আবার মানছেন না। গতকাল ফেরিতে ৫ জন নিহতের ঘটনার পর যাত্রীদেরকে সচেতন করার জন্যও মাইকিং করা হচ্ছে। যাত্রী ও যানবাহন আনলোড হওয়ার পর পল্টুনে যেতে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের।
Comments