মহামারিকালের আরও এক ঈদ

প্রতীকী ছবি। (সংগৃহীত)

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশব্যাপী চলমান বিধি-নিষেধের মধ্যেই উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো মহামারির মধ্যেই ঈদ উদযাপন করছেন বাংলাদেশের ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা।

৩০ দিন সিয়াম সাধনার পর আজ শুক্রবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন মুসল্লিরা। ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করলেও ঐতিহ্য অনুযায়ী নামাজের পর কোলাকুলি বা হাত মেলাননি তারা। মহামারির কারণে এবারও মানুষের মাঝে ঈদের সেই চিরাচরিত আমেজ না থাকলেও এই দুঃসময়ে ঈদ যেন আনন্দই বয়ে নিয়ে এসেছে।

ঈদ উপলক্ষে আলাদা বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সবাইকে বর্তমান অবস্থানে থেকেই স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে ঈদুল ফিতর উদযাপন করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদ উদযাপন করব। তবে, অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে। কোনোভাবেই এই ঈদ উদযাপন যাতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ার উপলক্ষ হয়ে না ওঠে, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’

স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত আদায় সংক্রান্ত নির্দেশনা আগেই দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সেই নির্দেশনা মেনেই এবার ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাতের আয়োজন করা হয়নি। মুসল্লিরা মসজিদেই নামাজ আদায় করেছেন। ঈদের নামাজের জামাতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো হয়নি। নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করা হয়। মুসল্লিদের বেশিরভাগই নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে নামাজে যান। তাদের সবাই মাস্ক পরেই নামাজে এসেছেন।

গত বুধবার দেশের কোথাও শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় শুক্রবার ঈদুল ফিতর উদযাপনের ঘোষণা দেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক। সেই অনুযায়ী ৩০ দিন রোজা পালন শেষে আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন হচ্ছে।

করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ ও মৃত্যুর কারণে কঠিন এক চাপের মধ্য দিয়ে কোনো মতে পার হচ্ছে এই সময়টা। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী একই পরিস্থিতি। পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের  সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ কোটি ১৮ লাখ ২৪ হাজার ৪৭৭ জন, মারা গেছেন ৩৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫১৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৩ কোটি ৯৬ লাখ ২২ হাজার ৫২ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সাত লাখ ৭৮ হাজার ৬৮৭ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১২ হাজার ৭৬ জন ও মোট সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ১৯ হাজার ৬১৯ জন।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় বলে জানায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। আর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর সংবাদ জানানো হয়। এরপর থেকেই দেশব্যাপী বিভিন্ন ধাপে বিধি-নিষেধ দেওয়া হয়। সেই বিধি-নিষেধের মধ্যেই গত বছরের ২৫ মে ঈদুল ফিতর ও ১ আগস্ট ঈদুল ইজহা উদযাপিত হয়। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় বছর ও তৃতীয় ঈদ বিধি-নিষেধের মধ্যে স্বল্প পরিসরে উদযাপিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন:

এসেছে ঈদ আসেনি আনন্দ

Comments

The Daily Star  | English

Govt decides to ban activities of AL until completion of ICT trial

Law Adviser Prof Asif Nazrul said this at a press briefing after a special meeting of the advisory council tonight

1h ago