স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা রাখার দাবি মালিক সমিতির
স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী দেশের সব হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। আর তা সম্ভব না হলে ৫০ শতাংশ আসন খালি রেখে হোটেল-রেস্তোরাঁ চালু রাখতে চান তারা।
আজ শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে সংগঠনটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি।
করোনা সংক্রমণ রোধে বর্তমানে সরকার ঘোষিত নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে টেকওয়ে, পার্সেল ও অনলাইন ডেলিভারির মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, টেকওয়ে, পার্সেল ও অনলাইন ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হোটেল-রেস্তোরাঁর অনুপাতে মাত্র দুই থেকে তিন শতাংশ।
সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, 'বেশ কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। জানি না সামনে কি অপেক্ষা করছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের আবেদন, তিনি যেন আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা রেখে ব্যবসা পরিচালনা করার সুযোগ দেন। না হয় আমরা এই খাতটাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারব না। করোনায় যেসব খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারমধ্যে হোটেল-রেস্তোরাঁ খাতটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।'
তিনি বলেন, 'ঢাকাসহ বিভাগ, জেলা ও উপজেলা শহরে ৯৮ শতাংশ ভাড়াটে হিসেবে হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তাই ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে বাড়িওয়ালাদের সহনীয় আচরণ করতে হবে।'
সমিতির দাবি, মহামারি করোনার কারণে এখন পর্যন্ত তারা ৫০-৬০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আর ৩০ শতাংশ হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে গেছে এবং ৫০ শতাংশের মালিকানা বদল হয়েছে।
সমিতির সভাপতি ওসমান গনি বলেন, 'প্রথম ওয়েভ শেষে করোনার সাধারণ ছুটি শেষে দেশের স্বনামধন্য হোটেলগুলোর ৭৫ শতাংশ কাস্টমার ফিরেছিল। আর বাকিগুলোতে ৫০ শতাংশ ফিরেছিল।'
তিনি বলেন, 'বর্তমানে শুধু অনলাইন ডেলিভারির সুযোগ দিয়ে রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখার ঘোষণাটি দুরভিসন্ধিমূলক। এখানে দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহলের হাত আছে।'
'দেশের ১২টি সংস্থা থেকে লাইসেন্স নিয়ে আমাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়। তবে এ খাতকে শিল্প ঘোষণা না করায় আমরা কোনো সংস্থা থেকে সহায়তা বা সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি না। আমরা শিল্প মন্ত্রণালয়, খাদ্য নাকি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে তাও জানা নেই,’ যোগ করেন গনি।
তিনি বলেন, 'করোনাকালীন আমাদের থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট নেওয়ার জন্য জোর-জুলুম চলছে। আমাদের ওপর এ ভ্যাটের হার সম্পূর্ণ অনৈতিক।'
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির পক্ষ থেকে আটটি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে আছে--এই খাতের শ্রমিকদের প্রণোদনা দেওয়া, এসএমই খাত থেকে বিনা সুদে জামানতবিহীন স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়া, বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির বিল সারচার্জ ছাড়াই দেওয়া, শ্রমিক-মালিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া, ভ্যাট-ট্যাক্স আদায়ের অসহনীয় আচরণ থেকে পরিত্রাণ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সমিতির প্রধান উপদেষ্টা খন্দকার রুহুল আমিন যুগ্ম-মহাসচিব ফিরোজ আলম সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ আন্দালিব প্রমুখ।
Comments