মিতু হত্যা: নারী কর্মীর তথ্য চেয়ে ইউএনএইচসিআরকে পিবিআই'র চিঠি

বাবুল আক্তার

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্তে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সাবেক এক নারী কর্মকর্তার সম্পর্কে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) ইউএনএইচসিআর এর ঢাকার গুলশানের অফিস ও কক্সবাজারের সাব অফিসে মঙ্গলবার চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে ২০১৩ সালে কক্সবাজারে কর্মরত এক সাবেক বিদেশি কর্মকর্তার তথ্য চাওয়া হয়েছে। 

এ বছর ১২ মে মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন মাহমুদা খানম মিতুর হত্যার ঘটনায় সাবেক এসপি বাবুল ও আরও সাত জনের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপরই বিদেশি এক নারীর কথা সামনে আসে।

মামলার বিবৃতিতে মিতুর পরিবার অভিযোগ করেন যে, বাবুল কক্সবাজারে থাকাকালীন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তবে মামলা ওই নারীকে আসামি করা হয়নি।

মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেন, ওই নারীর সঙ্গে বাবুলের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা মিতু জানতে পেরেছিল। এ কারণে হত্যার আগে বাবুল তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছিলেন।

চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মামলার তদন্তের স্বার্থে, আমরা ওই নারীর ব্যাপারে তিনটি তথ্য চেয়ে ইউএনএইচসিআর অফিসগুলোতে চিঠি পাঠিয়েছি।’

তবে সন্তোষ এই বিষয়ে আর কিছু জানাননি।

পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, চিঠিতে ইউএনএইচসিআর এর কাছে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে; তার মধ্যে আছে ওই নারীর পুরো ঠিকানা, ফোন নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর ও পাসপোর্টের একটি ফটোকপি এবং তিনি কক্সবাজারে থাকাকালীন তার ঠিকানা এবং কক্সবাজারে থাকাকালীন তার চলাফেরার তথ্য।

২০১৩ সালে বাবুল আক্তার কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তখন তিনি দুটি বই উপহার পেয়েছিলেন। বই দুটি এক নারী তাকে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পিবিই সূত্র।

পিবিই সূত্র আরও জানায়, ওই নারীর সঙ্গে বাবুলের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে ছিল। বই দুটির বিভিন্ন পাতায় তাদের সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন তথ্য লেখা ছিল।

তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, বাবুলের কাছ থেকে বইদুটি জব্দ করা হয়েছে।

বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন ১২ মে ২০১৬ সালে মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুলসহ আট জনের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। বাবুল আক্তার এখন কারাগারে আছেন এবং এই মামলায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বের হওয়ার পর চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় মিতুকে। ঘটনার পর তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেছিলেন।

এই বছর ১১ মে চট্টগ্রাম পিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুলকে তাদের কার্যালয়ে ডেকে পাঠায়। সেখানে তিনি গোয়েন্দাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। এরপরই তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। মিতুর বাবা এর পরদিন বাবুলকে প্রধান আসামি করে আট জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আরও পড়ুন:

মিতু হত্যা: আদালতে জবানবন্দি দেননি বাবুল

মিতু হত্যা: বাবুল আক্তার ৫ দিনের রিমান্ডে

মিতু হত্যা: শ্বশুরের করা মামলায় বাবুল আক্তার আদালতে

মিতু হত্যা: বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে শ্বশুরের মামলা

চট্টগ্রামে মিতু হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ

Comments

The Daily Star  | English

Produce 10 ex-ministers, 2 advisers to Hasina before tribunal on Nov 18: ICT

They will be shown arrested in case filed over crimes against humanity, genocide, says prosecutor

29m ago