ওপেনিং জুটি নিয়ে ফের অস্থিরতা, যা বললেন তামিম

গত তিন সিরিজ থেকে থিতু থাকা ওপেনিং জুটি এই সিরিজে আবার পড়েছে অস্থিরতায়। অধিনায়ক তামিম ইকবাল আভাস দিলেন এই জায়গায় উলট-পালট চলবে।
Tamim Iqbal

একটা দলের ধারাবাহিক সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা থাকে একটা থিতু ওপেনিং জুটির। কিন্তু বাংলাদেশে এই জায়গায় পরীক্ষা নিরীক্ষা যেন চলতেই থাকে। গত তিন সিরিজ থেকে থিতু থাকা ওপেনিং জুটি এই সিরিজে আবার পড়েছে অস্থিরতায়। অধিনায়ক তামিম ইকবাল আভাস দিলেন এই জায়গায় উলট-পালট চলবে।

গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে রেকর্ড গড়া রানে তামিমের সঙ্গী হিসেবে থিতু হয়ে গিয়েছিল লিটন দাস। তিন ম্যাচে করেন ৩১১ রান, বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৭৬ রানের ইনিংসও খেলেন ওই সিরিজে।

কিন্তু করোনাভাইরাসের লম্বা বিরতির পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নেমে তিন ম্যাচে ৩৬, নিউজিল্যান্ডে তিন ম্যাচে ৪০, লঙ্কানদের বিপক্ষে এই সিরিজে প্রথম ম্যাচে ০ রানে আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ২৫। ৮ ম্যাচের এই ব্যর্থতায় থাকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার ম্যাচ শেষে লিটনকে বাদ দেওয়ার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেন তামিম, ‘লিটন যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছে, আমার কাছে মনে হয়। সম্ভবত ৮-৯টা ম্যাচ খেলেছে (রান না পেয়ে)। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ও নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেনি। তার মানে এই নয় যে, এটিই লিটনের শেষ। আমরা জানি সে কতটা ভালো, কতটা স্পেশাল। এখন একজন ক্রিকেটারের ৭-৮টি ম্যাচ হয়ে যায় (রান না পাওয়ার), আমাদের মনে হয়েছে যে আরেকজনকে সুযোগ দেওয়া উচিত।’

তার জায়গায় সুযোগ পাওয়া নাঈম শেখ নেমেও রান পাননি। মাত্র ১ রান করে দৃষ্টিকটুভাবে আউট হয়েছেন।

নাঈমকে একাদশে রাখা নিয়েও আছে প্রশ্ন। এই সিরিজে টপ অর্ডারের ব্যাকআপ হিসেবে আগে থেকেই দলে ছিলেন সৌম্য সরকার। কিন্তু শেষ ম্যাচে স্ট্যান্ডবাই থেকে নাঈমকে দলে নিয়ে খেলিয়ে দেওয়া হয়।

প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে সৌম্যকেই খেলানোর কথা। অধিনায়ক তামিম তাদের তালগোল পাকানো সিদ্ধান্তের পক্ষেই গাইলেন সাফাই , ‘সৌম্য নাকি নাঈম, এটা নিয়ে বলতে পারেন অবশ্যই। কিন্তু আমিসহ সবারই মনে হয়েছে, নাঈমের একটি সুযোগ পাওয়া উচিত। সম্প্রতি প্রস্তুতি ম্যাচে ও নেটে যা দেখেছি, সে খুব ভালো ব্যাট করছিল। আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সে রান করতে পারেনি। তবে কেবল তো প্রথম ম্যাচ। আশা করি সে আরও সুযোগ পাবে।’

নাঈম বা সৌম্যকে খেলানোর সমস্যা যে আছে আরেকটি, সেটিও আড়াল করেননি তামিম। এই দুই বাঁহাতির মধ্যে একজনকে খেলালে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানই হয়ে যায় বাঁহাতি। প্রতিপক্ষ দলের জন্য যাতে পরিকল্পনা করা হয় সহজ। অধিনায়ক তামিম আভাস দিলেন, ডান-বাম কম্বিনেশন মাথায় রেখেই ফেরানো হতে পারে লিটনকেই,  ‘ আমি যেটা চাই, একজন ডানহাতি ওপেনার যদি আমার সঙ্গে থাকে, এটা দলের জন্য ভালো। তাহলে আমাদের সমন্বয় ভালো হয়। তবে আমি যেটা চাই, সেটাই হতে হবে না। অন্য কেউ যদি পারফর্ম করে, সৌম্য বা নাঈম, সেটা যথেষ্ট সুযোগ পাবে, এটা আপনাকে বলতে পারি।’

অর্থাৎ লিটন ফিরবেন। আবার সৌম্য, নাঈমও মাঝেমাঝে ম্যাচ পাবেন। সৌম্যকে নিয়ে অবশ্য কয়েকটি ব্যাটিং অর্ডারে খেলানোর পরিকল্পনাও করে বাংলাদেশ। তাকে বিবেচনা করা হয় সাত নম্বরে, তিন নম্বরে এমনকি মিডল অর্ডারেও। সম্প্রতি বোর্ড সভাপতি লিটনকেও মিডল অর্ডারে দেখতে চাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

থিতু জায়গা না পেলে একজন ক্রিকেটারের পারফর্ম করা কতটা সহজ। এই প্রশ্ন তাই বড় হচ্ছে দিনে দিনে।

Comments