কাদের মির্জা ও বাদল গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৬
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে বিবদমান দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তার প্রতিপক্ষ উপজেলা আ. লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছয় জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ছয় জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধরা কাদের মির্জার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।’
তিনি আরও জানান, গুলিবিদ্ধ পাঁচ জনকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত একজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ছয় জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে শুনেছি। গুলিবিদ্ধ সবাই কাদের মির্জার অনুসারী বলে জানা গেছে।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সন্ধ্যা থেকে কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নে ও বসুরহাট পৌরসভার প্রত্যেক ওয়ার্ডে কাদের মির্জার অনুসারীরা তার পক্ষে মিছিল করে। বসুরহাট পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডে কাদের মির্জার অনুসারীরা সন্ধ্যা ৭টার দিকে মিছিল করতে গেলে প্রথমে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। গোলাগুলিতে কাদের মির্জার ছয় অনুসারী গুলিবিদ্ধ হয়। তবে প্রতিপক্ষ বাদলের সমর্থকদের কাউকে আহত হওয়ার খবর এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
গুলিবিদ্ধরা হলেন- সবুজ (৪০), জিসান (২৩), মো. সানি (২৭), দেলোয়ার হোসেন সুমন (২৭), দিদার (৩৫) ও কাঞ্চন (৫০)।
বিষয়টি জানতে কাদের মির্জার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যক্তিগত সহকারী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মিজানুর রহমান বাদলের নির্দেশে তার লোকজন কবিরহাট ও চরাঞ্চল থেকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এনে মেয়রের লোকজনের ওপর সন্ত্রাসী ও গুলি হামলা চালিয়েছে। এতে ছয় জন গুলিবিদ্ধসহ ১০-১৫ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ কাঞ্চন নামের এক কর্মীকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
তবে, হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মিজানুর রহমান বাদল। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি আজ চার দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছি। আমি এলাকায় নেই।’
কোম্পানীগঞ্জ আ. লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত ২-৩ দিন আগে কাদের মির্জার সমর্থকরা ছাত্রলীগ নেতা জাহীদুল হক কচি ও আনোয়ার হোসেনের ওপর হামলা চালায়। আমরা এর প্রতিবাদে শনিবার কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌর সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেজ করার আয়োজন করেছিলাম। পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে সে কর্মসূচি বাতিল করেছি। কিন্তু, কাদের মির্জার অতি উৎসাহী লোকজন শনিবার সন্ধ্যার পর পৌরসদরে বিক্ষোভ মিছিল করে। ওই মিছিলে তাদের নিজেদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় নিজেরা নিজেরা মারামারি করে উপজেলা আ. লীগের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে বলায় জাতীয়ভাবে আমাকে উন্মাদ বলা হয়: কাদের মির্জা
Comments