চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন চেলসি

প্রথমার্ধের শেষ দিকে মাঝ মাঠ থেকে নিখুঁত এক পাস দিলেন ম্যাসন মাউন্ট। ফাঁকায় বল পেয়ে তার শৈল্পিক সমাপ্তি টানেন কাই হাভার্টজ। আর সেই গোলই শেষ পর্যন্ত ফলাফল নির্ধারণ করে দিল। তাতে ইউরোপ সেরার মুকুট পেল চেলসি। এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরল লন্ডনের দলটি।
ছবি: সংগৃহীত

প্রথমার্ধের শেষ দিকে মাঝ মাঠ থেকে নিখুঁত এক পাস দিলেন ম্যাসন মাউন্ট। ফাঁকায় বল পেয়ে তার শৈল্পিক সমাপ্তি টানেন কাই হাভার্টজ। আর সেই গোলই শেষ পর্যন্ত ফলাফল নির্ধারণ করে দিল। তাতে ইউরোপ সেরার মুকুট পেল চেলসি। এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরল লন্ডনের দলটি।

পোর্তোর স্তাদিও দো দ্রাগোয় শনিবার রাতে ম্যানচেস্টার সিটিকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারায় চেলসি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটা তাদের দ্বিতীয় শিরোপা। এর আগে ২০১১-১২ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা।

লড়াইটা ছিল দুই মাস্টারমাইন্ডের। হালের অন্যতম সেরা দুই কোচ পেপ গার্দিওলা ও টমাস টুখেলের লড়াই। তাতে জয় হলো টুখেলের। চলতি মৌসুমে তৃতীয়বারের মতো গার্দিওলাকে হারালেন তিনি। ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত কখনোই গার্দিওলার কাছে হারেননি এ জার্মান কোচ।

গত মৌসুমেও পিএসজিকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছিলেন টুখেল। কিন্তু সেবার বায়ার্ন মিউনিখের প্রতিরোধ্য গতির কাছে হার মানতে হয়েছিল তাকে। এবার সেই দল থেকে মৌসুমের মাঝপথে ছাঁটাই হন। যোগ দেন চেলসিতে। আর তাতেই বাজীমাত করলেন এ কোচ।

অনেকটা অনুমিতভাবেই এদিন ৩-৪-২-১ ফর্মেশন নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন টুখেল। তিন সেন্টার ব্যাক নিয়ে মাঠে নামেন টুখেল। তবে এদিন চেলসির জমাট রক্ষণের মূল কৃতিত্ব দলটির সেন্টার ব্যাকরা নয়, দুই ফুলব্যাক বেন চিলওয়েল। জেমস রিস। এ দুই তারকা প্রায় নিষ্ক্রিয় করে রাখেন রিয়াদ মাহরেজ, রহিম স্টার্লিংদের। তাতে কাজটা সহজ হয়ে যায় তাদের। অসাধারণ এক জয় উপহার পায় দলটি।

অন্যদিকে গার্দিওলা নামেন চিরাচরিত ৪-৩-৩ পদ্ধতিতে। নিয়মিত ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ফের্নাদিনহোকে প্রথম একাদশে রাখেননি। ছিলেন না রদ্রিও। ইকাই গুন্দোগানকে দিয়ে কাজ চালাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার এই ফটকা কাজে লাগেনি। প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট হয়ে থাকতে হলো তাদের। অবশ্য তাতে টিকে রইল আসরটি ঐতিহ্যও। এখন পর্যন্ত কোনো দলই প্রথমবার ফাইনালে উঠে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি।

এদিন ম্যাচের অষ্টম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো সিটি। রহিম স্টার্লিংয়ের উদ্দেশ্যে অসাধারণ এক পাস দিয়েছিলেন সিটি গোলরক্ষক এডেরসন। বলের নিয়ন্ত্রণ ঠিকভাবে নিতে পারলে এগিয়ে যেতে পারতো তারা। দুই মিনিট পর ভালো সুযোগ পায় চেলসিরও। তবে মাউন্টের কাট ব্যাক থেকে পাওয়া বলে টিমো ভের্নারের নেওয়া শট পেছন থেকে ছুটে এসে প্রায় ছোবল দিয়ে ঠেকিয়ে দেন কাইল ওয়াকার।

১৪তম মিনিটের কাই হাভার্টজের কাটব্যাক থেকে পাওয়া বলে টিমো ভের্নার জোরালো শট নিতে পারলে এগিয়ে যেতে পারতো চেলসি। এ জার্মান তারকার দুর্বল শট সহজেই লুফে নেন সিটি গোলরক্ষক এডেরসন। পরের মিনিটেও সুযোগ ছিল ভের্নারের। কিন্তু এবার তার শট পাশের জাল কাঁপায়। ২৭তম মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনের বাড়ানো বলে ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন ফিল ফোডেন। তবে দারুণ এক ট্যাকেলে সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেন রুডিগার।

৩৮তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে মাহরেজের নেওয়া শট সহজেই লুফে নেন গোলরক্ষক অ্যাডওয়ার্ড মেন্ডি। পরের মিনিটে চোটে পড়ে মাঠ ছাড়েন চেলসি ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা। তার জায়গায় মাঠে নামেন ক্রিস্টিনসেন। এর তিন মিনিট পরই এগিয়ে যায় চেলসি। মাউন্টের নিখুঁত এক পাসে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান কাই হাভার্টজ। গোলরক্ষককে কাটিয়ে সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন এ জার্মান ফরোয়ার্ড। দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে গোল শোধে আক্রমণের ধার বাড়ায় সিটি। তবে এরমধ্যেই বড় ধাক্কা খায় তারা। ৫৯তম মিনিটে চোটে পড়ে মাঠ ছাড়েন দলের সেরা তারকা ডি ব্রুইন। তার জায়গায় মাঠে নামেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। পরের মিনিটে তার নেওয়া শটে ডি-বক্সে প্রতিপক্ষে এক খেলোয়াড়ের হাতে লাগলে পেনাল্টির জোরালো আবেদন করেছিল সিটি। তবে রেফারি তা আমলে নেননি।

৭২তম মিনিটে অবিশ্বাস্য এক মিস করেন চেলসির বদলি খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক। সতীর্থের বাড়ানো বলে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন হাভার্টজ। তবে নিশ্চিত হতে একেবারে ফাঁকায় থাকা পুলিসিককে পাস দেন তিনি। কিন্তু লক্ষেই শট নিতে পারেননি এ আমেরিকান।

৮৫তম মিনিটে ভালো সুযোগ ছিল বদলি খেলোয়াড় সের্জিও আগুয়েরোর। ভালো শটও নিয়েছিলেন। কিন্তু দারুণ দক্ষতায় লাফিয়ে তা লুফে নেন চেলসি গোলরক্ষক। পাঁচ মিনিট পর গোল করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া সিটি। মাহরেজের কাটব্যাকে ফাঁকায় বল পেয়েও জালে জড়াতে পারেননি ফোডেন। প্রায় গোলমুখ থেকে তা ঠেকিয়ে দেন চিলওয়েল। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে মাহরেজের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলেও সমতায় ফিরতে পারতো দলটি। 

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago