উত্তরাঞ্চলের ৫ স্থলবন্দর পুরোপুরি কার্যকরের আহ্বান

দেশের উত্তরাঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে ২০২১-২২ অর্থবছরে রংপুর বিভাগের আটটি জেলার জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা উচিত বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের সদস্যরা।
বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরে নেপালি ট্রাকের সারি। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

দেশের উত্তরাঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে ২০২১-২২ অর্থবছরে রংপুর বিভাগের আটটি জেলার জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা উচিত বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের সদস্যরা।

দ্য ডেইলি স্টারকে তারা বলেন, ফসল উৎপাদনের জন্য পরিচিত উত্তরাঞ্চলের কৃষি খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি এই অঞ্চলের পাঁচটি স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন সার্ভিস চালুসহ এগুলোকে পুরোপুরি কার্যক্ষম করে তোলা উচিত।

স্থলবন্দরগুলো হলো- দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার রাধিকাপুর, পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা, লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও কুড়িগ্রামের সোনাহার।

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফাহিমা খানম জানান, দেশের উত্তরাঞ্চল, বিশেষ করে রংপুর, দেশে চালসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। কিন্তু, স্টোরেজ সুবিধার অভাবে সেখানকার কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত। একমাত্র আলু ছাড়া তারা পচনশীল কোনো শাকসবজিই সংরক্ষণ করতে পারেন না।

তিনি বলেন, ‘কৃষক যেন দীর্ঘসময়ের জন্য শাকসবজি সংরক্ষণ করতে পারে, সরকারকে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তাকে সমর্থন করে কুড়িগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবদুল আজিজ কৃষিতে আরও বেশি ভর্তুকির দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘কুড়িগ্রামে পর্যাপ্ত সম্পদ রয়েছে, কিন্তু, অর্থায়ন নেই। এখানকার বড় পরিসরের টেক্সটাইল মিলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং চিলমারী নদী বন্দর এখনও চালু হয়নি।’

‘সোনাহার স্থলবন্দরে অবকাঠামো ও ইমিগ্রেশন সার্ভিসের অভাব আছে। এগুলো ঠিক থাকলে ভারতে যেতে ইচ্ছুক ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হতো’, যোগ করেন তিনি।

এ ছাড়া, লালমনিরহাট বিমানবন্দরকে কার্যক্ষম করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রংপুরের একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা দরকার। এগুলো এখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং উচ্চ দারিদ্র্য হার মোকাবিলা করবে।’

রংপুর বিড়ি মালিক সমিতির সভাপতি মজিবর রহমান বলেন, ‘রংপুরের হস্তচালিত সস্তা সিগারেট তৈরির কারখানাগুলো প্রচুর কর্মসংস্থানের, বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে। তবে, এ ক্ষেত্রে উচ্চ কর হার একটি সমস্যা।’

এই কর কমানো উচিত বলে মনে করেন তিনি।

পঞ্চগড় চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি শরীফ হোসেনের মতে, ‘ভালো দামের জন্য পঞ্চগড়ের সম্ভাবনাময় চা খাত চাইলে নিলামের পাশাপাশি মাঝারি ও ক্ষুদ্র চাষিদের জন্য সরকারি প্রণোদনা ব্যবহার করতে পারে।’

দিনাজপুরের অটোমেটিক রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘রংপুর বিভাগের চাল বছরে প্রায় চার কোটি মানুষের খাবারের যোগান দেয়। তাই বিদ্যুৎ শুল্ক হ্রাসের পাশাপাশি স্বয়ংক্রিয় রাইস মিলের যন্ত্রপাতি আমদানি ব্যয় হ্রাস করা প্রয়োজন।’

 

প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম

Comments