‘মিছিলে যাওয়া অপরাধ নয়, আমার ছেলেকে মুক্তি দিন প্রধানমন্ত্রী’
‘সবাই মিছিল করে, আমার ছেলেও করেছে। মিছিল করা অপরাধ নয়। আমি মানুষের বাড়িতে কাজ করে ছেলেকে লেখাপড়া করিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, আমার ছেলের সামনে ফাইনাল পরীক্ষা, তাকে মুক্তি দেন।’
গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল থেকে গ্রেপ্তার ইসমাইল হোসেনের মা জাহানার ইমাম এই আকুতি জানিয়েছেন। ‘উদ্বিগ্ন অভিভাবক ও নাগরিকবৃন্দের’ ব্যানারে আজ শাহবাগে আয়োজিত সমাবেশে মা তার ছেলের মুক্তির দাবি জানান।
গ্রেপ্তার ছাত্রদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘যখন নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে এসেছে, তখন ছাত্ররা প্রতিবাদ করে ন্যায্য কাজ করেছে। গ্রেপ্তারকৃত ৫৪ জন ছাত্র আমাদের ভবিষ্যৎ। তারাই আমাদের উন্নত ভবিষ্যৎ দেখাতে পারে।’
ডা. জাফরুল্লাহ শিগগির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এই সরকারের শিক্ষার্থীদের প্রতি ভালোবাসা নেই। দেশে সব চলে কিন্তু তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে আজকের এই সমাবেশে অনেক শিক্ষার্থী থাকত। তাদের স্লোগানে সরকারের গদি কেঁপে যেতে। তাই তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে না।’
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের না। যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, তারা ছাত্র। আপনারা যারা রাজনৈতিক দল করেন আপনাদের এই ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ। ছাত্রদের মুক্তির দাবিতে আমরা আগামীতে সুপ্রিম কোর্টের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। এই সরকার ৫৪ শিক্ষার্থীদের যতদিন মুক্তি না দিবে ততদিন আমরা রাজপথে থাকব।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক বলেন, ‘আমরা এখন তারুণ্যকে নিয়ে বাংলাদেশকে মুক্ত রাখার আন্দোলন করছি। ৭১ সালেও আমরা এজন্য যুদ্ধ করেছি।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, মোদির বিরোধিতা করার পরিপূর্ণ অধিকার এ দেশের জনগণের আছে। এটি তাদের সাংবিধানিক অধিকার। এ সরকার আলেম-ওলামা, ছাত্রদের উপর নির্যাতন করছে। বাংলার মানুষ আপনাদের ছাড়বে না। একদিন তারাই আপনাদের গলায় গামছা বেঁধে গদি থেকে নামাবে। সেদিনের অপেক্ষায় থাকুন।’
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বিভিন্ন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, ছাত্র, যুব, শ্রমিক অধিকার পরিষদের শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হাইকোর্টের সামনে অবস্থান নেন।
Comments