সুযোগ নষ্টের মহড়া দিয়ে পর্তুগালের সঙ্গে স্পেনের ড্র
আলভারো মোরাতা হয়তো পেতে পারতেন হ্যাটট্রিক। কিন্তু নিশানা ভেদ করতেই যেন ভুলে গেলেন জুভেন্টাসের এই স্ট্রাইকার! তার সতীর্থরাও করলেন হতাশ। সুযোগ নষ্টের মহড়া দিয়ে তাই পর্তুগালকে হারাতে পারল না স্পেন।
শুক্রবার রাতে হাইভোল্টেজ আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে কেউ জেতেনি। ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানো স্টেডিয়ামে গোলশূন্য ড্র করেছে ইউরোপের দুই পরাশক্তি। মূলত, আসন্ন উয়েফা ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের আগে নিজেদের শক্তি-দুর্বলতা ঝালিয়ে নিতে মাঠে নামে তারা।
শুরু থেকেই উজ্জীবিত ছিল স্পেন। তাদের বল দখলের আধিপত্যের বিপরীতে পাল্টা-আক্রমণ নির্ভর কৌশল বেছে নেয় পর্তুগাল। প্রথমার্ধে অবশ্য দুই দলের কেউই লক্ষ্যে রাখতে পারেনি কোনো শট।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় স্বাগতিকরা। কিন্তু লুইস এনরিকের দলের আক্রমণভাগের তারকারা ছিলেন না ছন্দে। তাদের নেওয়া দশটি শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল মাত্র দুটি। পর্তুগালও একেবারে ছেড়ে কথা বলেনি। তবে তাদের তৈরি করা সুযোগের সংখ্যা ছিল অনেক কম। ফার্নান্দো সান্তোসের শিষ্যদের পাঁচটি শটের কেবল একটি ছিল লক্ষ্যে।
দশম মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগটি আসে স্পেনের সামনে। ফাবিয়ানের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে বাম দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন ফেরান। ম্যানচেস্টার সিটির এই ফরোয়ার্ডের চিপে ভলি করতে গিয়ে তালগোল পাকান মার্কোস ইয়রেন্তে। পরে বল বিপদমুক্ত করেন পেপে।
২২তম মিনিটে বল জালে পাঠালেও অতিথিদের উল্লাস করা হয়নি। রেনাতো সানচেসের কর্নারে লাফিয়ে উঠে হেড করেছিলেন জোসে ফন্ত। কিন্তু ফাউলের কারণে গোলটি বাতিল করে দেন রেফারি।
পাঁচ মিনিট পর মাঝমাঠে পর্তুগিজদের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন সার্জিও বুসকেতস। বার্সেলোনার এই মিডফিল্ডার বাম প্রান্তে খুঁজে নেন মোরাতাকে। দূরের পোস্টে তার ক্রসে মাথা ছোঁয়ালেও বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ফেরান।
৩৭তম মিনিটে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে উল্টো বিপদ ডেকে আনতে পারতেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমোন। ডি-বক্সের মধ্যে তার শট আগুয়ান ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর গায়ে লেগেও সৌভাগ্যক্রমে তার কাছেই ফিরে আসে। চার মিনিট পর নেলসন সেমেদোর শট তাকে পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি।
বিরতির পর খেলা চালুর প্রথম দশ মিনিটের মধ্যে দুটি সুযোগ হাতছাড়া করেন মোরাতা। ৫০তম মিনিটে তার শট সহজেই লুফে নেন পর্তুগিজ গোলরক্ষক রুই প্যাত্রিসিও। ৫৪তম মিনিটে মোরাতার প্রথম শট ব্লক করেন ফন্ত। ফিরতি বলে তার বাঁ পায়ের শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়।
তিন মিনিট পর অবিশ্বাস্যভাবে গোল করতে ব্যর্থ হন পাবলো সারাবিয়া। ফাঁকা জাল পেয়েও উড়িয়ে মারেন তিনি। বাইলাইনের কাছ থেকে ইয়রেন্তের পাস মোরাতা নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারলেও বল গিয়ে পড়েছিল সারাবিয়ার সামনে। কিন্তু তিনি তৈরি না থাকায় ঠিকমতো সংযোগ ঘটাতে পারেননি।
দুই মিনিট পর সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন লিভারপুলের ফরোয়ার্ড দিয়োগো জোতা। জুভেন্টাসের মহাতারকা রোনালদোর ক্রসে তার হেড প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের মাথায় সামান্য লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৬৯তম মিনিটে রোনালদোও নিশানা খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন। বদলি নামা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেসের ফ্রি-কিকে ছয় গজ বক্সের ভেতরে তিনি মাথা ছোঁয়ালেও বল দূরের পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়।
শেষদিকে চারটি ভালো সুযোগ পেলেও গোল পাওয়া হয়নি ২০১০ বিশ্বকাপের শিরোপা জেতা স্পেনের। ৮১তম মিনিটে ইয়রেন্তের ক্রসে ঠিকঠাক ব্যাক-হিল করতে পারেননি মোরাতা। কিছুক্ষণ পরে হোসে গায়ার দারুণ ক্রসে স্লাইড করেও নাগাল পাননি তিনি।
৮৮তম মিনিটে বদলি কোকের ফ্রি-কিকে ফেরানের হেড ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন সফরকারী গোলরক্ষক। এরপর যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে গোলের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল স্প্যানিশরা। পাল্টা-আক্রমণে মাঝমাঠের একটু সামনে থেকে দৌড়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন মোরাতা। কিন্তু তার জোরালো শট ক্রসবারে বাধা পেলে সমতায় শেষ হয় ফুটবলীয় লড়াই।
Comments