রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি বিশ্ব খাদ্য সংস্থার

বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলির কাছে পরিচয়পত্র তুলে দিচ্ছেন ইতালিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ডব্লিউএফপিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি শামীম আহসান। ছবি সৌজন্য: বাংলাদেশ দূতাবাস

রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের ওপর যাতে অর্থনৈতিক চাপের কারণ না হয়, সে বিষয়ে সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ডের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সচেতন করার লক্ষ্যে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলি।

মঙ্গলবার রোমে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা সদর দপ্তরে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ডব্লিউএফপিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি শামীম আহসানের পরিচয়পত্র প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি শামীম আহসান রোহিঙ্গা ইস্যুতে ডব্লিউএফপির সহায়তা ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং এ ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ ভূমিতে নিশ্চিত, নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে ডব্লিউএফপির নির্বাহী বোর্ডের মাধ্যমে মিয়ানমার সরকারের ওপর ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য নির্বাহী পরিচালককে অনুরোধ করেন।

ডেভিড বিসলি রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ ভ্রমণের কথা উল্লেখ করেন এবং নিজেদের অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তার ঝুঁকি উপেক্ষা করে শুধু মানবিক কারণে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সব ধরনের সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দায়িত্বশীল নীতি ও অসাধারণ মানবিক মমত্ববোধের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি ২০১৯ সালে ডব্লিউএফপির নির্বাহী বোর্ডের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সরেজমিনে পরিদর্শন এবং পরে তাদের অভিজ্ঞতা বোর্ড সদস্যদের কাছে তুলে ধরার জন্য ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালকের বাংলাদেশের পক্ষে প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের ইতালি সফরে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে তাকে অবহিত করার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ডব্লিউএফপির বোর্ড সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

ডব্লিউএফপি প্রধান বাংলাদেশের সঙ্গে তার আন্তরিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে গত দশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর অসামান্য সাফল্যের প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশের অর্জন সম্পর্কে তার উচ্চ ধারণার জন্য ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালককে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি ২০২০ সালে ডব্লিউএফপির নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তি এবং কোভিডসৃষ্ট পরিস্থিতির মধ্যেও ২০২০ সালে রেকর্ড পরিমাণ আন্তর্জাতিক সহায়তা নিশ্চিত করায় ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালকের গতিশীল নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির কার্যক্রমকে বহুমাত্রিক, দীর্ঘস্থায়ী ও অত্যন্ত কার্যকর উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি ‘স্কুল ফিডিং কর্মসূচি’ ও ‘ফর্টিফাইড রাইস’ সরবরাহ কার্যক্রমে সরকারের আর্থিক অনুদান ও প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার বিষয়ে নির্বাহী পরিচালককে অবহিত করেন।

রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি বাংলাদেশের জন্য ২০২২-২৬ মেয়াদে কান্ট্রি স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান (সিএসপি) প্রস্তুতির অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং সিএসপি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উন্নয়ন–সহযোগীদের কাছ থেকে উন্নয়নসহায়তা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা এবং এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ডব্লিউএফপিকে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার অনুরোধ করেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ এবং ডব্লিউএফপি আগামী দিনগুলোয় ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।

অনুষ্ঠানে দূতাবাসের ইকোনমিক কাউন্সেলর ও রোমভিত্তিক জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের বিকল্প স্থায়ী প্রতিনিধি মানস মিত্র এবং ডব্লিউএফপি থেকে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Ishraque must be sworn in or larger movement may erupt: Salahuddin

"We have always cooperated with this government. But that doesn't mean we've handed you a blank cheque"

6m ago