আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ৩ ফেরিই নষ্ট, দুই পাড়ে আটকা ৫ শতাধিক যান
পাবনার কাজিরহাট ও মানিকগঞ্জের আরিচা নৌপথে চলাচলকারী চারটি ফেরির মধ্যে তিনটিই নষ্ট। ফলে ফেরি সংকটের কারণে দুই পারে ঘাট পার হওয়ার অপেক্ষায় আছে পাঁচ শতাধিক যানবাহন। তৈরি হয়েছে দীর্ঘ যানজট।
কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহাবুবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এই নৌপথে চলাচলকারী চারটি ফেরির মধ্যে বেগম রোকেয়া ও বেগম সুফিয়া কামাল নামের দুটি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছিল। তবে শুক্রবার থেকে সুফিয়া কামাল ফেরিটিও বিকল হয়ে পড়ে।
কাজিরহাট ফেরিঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ফেরিতে উঠতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছেন চালকেরা।
যশোর থেকে মালবোঝাই ট্রাক নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে কাজিরহাট ফেরিঘাটে পৌঁছান ট্রাকচালক আসিফ হোসেন। আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও ফেরিতে উঠতে পারেননি তিনি।
ঘাটের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষুব্ধ এই চালক বলেন, ‘তিন ঘণ্টার রাস্তার জন্য এখন আমাকে দুই দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে।’
আরেক ট্রাকচালক জহির হোসেন জানান, ‘এক দিন এক রাত অপেক্ষা করেও তিনি এখনো ফেরিতে ওঠার সিরিয়াল পাননি।
ঘাটে যানবাহনের চাপ বাড়লেও ফেরির সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে উদ্যোগ না নেওয়ায় ঘাট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জহির।
ঘাট কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, আরিচা ঘাটে পল্টুনে ওঠার রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহনের গতি ধীর হয়ে পড়েছে। ফলে সমস্যা আরও বেড়েছে।
আর বিকল্প ফেরির বিষয়ে কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহাবুবুর রহমান বলেন, পাটুরিয়া ঘাট থেকে মধ্যে খান জাহান আলী নামের একটি ফেরি নিয়ে আসা হয়েছে। তবে দীর্ঘ যানজট নিরসনে সময় লাগবে।
২০০১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি যমুনা নদীতে নাব্যতা-সংকটের কারণে আরিচা থেকে পাটুরিয়ায় স্থানান্তর করা হয় ফেরিঘাট। এরপর থেকে দেশের অন্যতম নৌবন্দর আরিচায় ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়।
নৌপথটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাবনা, কুষ্টিয়া ও সিরাজগঞ্জের অধিকাংশ এলাকার মানুষ রাজধানী ঢাকায় যাতায়াতে ভোগান্তিতে পড়েন। অতিরিক্ত পথ ও ভাড়া দিয়ে তাদের যাতায়াত করতে হয়। এ ছাড়া পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও বঙ্গবন্ধু সেতুতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে যাত্রী ও যানবাহনের। এসব বিষয় বিবেচনা করে সম্প্রতি আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে আবার ফেরি সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ নেয় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
Comments