উত্তরা থেকে আলোচিত মাদক আইস সিন্ডিকেটের ৬ জনকে গ্রেপ্তার
ঢাকা মহানগরীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন এলাকা থেকে আলোচিত মাদক আইস সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা তৌফিকসহ ছয় জনকে আইসসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গোপন সংবাদেরভিত্তিতে ১৭ জুন রাতে থেকে হতে ভোর পর্যন্ত র্যাব-৩-এর আভিযান দল তাদের গ্রেপ্তার করে বলে জানিয়েছে র্যাব।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো তৌফিক হোসাইন, মো. জামিরুল চৌধুরী ওরফে জুবেইন (৩৭), মো. আরাফাত আবেদীন ওরফে রুদ্র (৩৫), মো. রাকিব বাসার খান (৩০), মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে সবুজ, মো. খালেদ ইকবাল।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানান।
র্যাব জানায়, অভিযানে আইস, ইয়াবা, বিদেশি মদ, গাঁজা এবং ১৩টি বিদেশি অস্ত্র এবং রেপলিকা অস্ত্র ও অন্যান্য ইলেকট্রিক শক যন্ত্র, বিপুল পরিমাণ মাদক সেবনের সরঞ্জামাদিসহ ল্যাবরেটরি (মেথ ল্যাব) উদ্ধার করা হয়। এই সংঘবদ্ধ চক্রটি সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরায় একটি ‘মেথ ল্যাব’ তৈরির চেষ্টা করছিল। এই মেথ ল্যাবটি মূলত গ্রেপ্তার আরাফাত রুদ্র ওরফে ঝাক্কি রুদ্র ও তার কয়েকজন সহযোগীর সহায়তায় পরিচালিত হতো। তারা আইস ও ইয়াবার পরিক্ষামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছিল।
র্যাব আরও জানায়, তারা বাজার থেকে বিভিন্ন ঔষধ ও কেমিকেল মাদকের সঙ্গে মিশ্রণ করতো। তারা পাতন পদ্ধতি ভেজাল দ্রব্য মিশিয়ে আইসের পরিমাণ বৃদ্ধি; আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে ইয়াবার রং পরিবর্তন এবং ‘ঝাক্কি’ তৈরি করত। ‘ঝাক্কি’ তৈরিতে তরল পানির সঙ্গে ইয়াবা, ঘুমের ঔষুধ ও অন্যান্য নেশাজাতীয় ওষুধের তরল মিশ্রণ করত বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়। তারা ভেজাল ও পরিশুদ্ধ উভয় প্রকার আইস সরবরাহ ও নিজেরাও সেবন করতো।
ওই ব্যবসার মূলহোতা ও সমন্বয়কারী তৌফিক। অর্থ যোগানদাতা গ্রেপ্তার জুবেইন ও খালেদ। রুদ্র কেমিস্ট হিসেবে ‘মেথ ল্যাব’ পরিচালনা করতো। গ্রেপ্তার সবুজ সংগ্রহ সরবরাহকারী এবং তৌফিকসহ বাকিরা সকলেই মাদক বিপণনের সঙ্গে জড়িত ছিল। এই চক্রে আরও ১০-১৫ জন রয়েছে। গ্রেপ্তার জুবেইন লন্ডন থেকে বিবিএ, তৌফিক বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ, খালেদ বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ, ত রুদ্র ও সাইফুল এইচএসসি পাশ করার পর ড্রপ আউট এবং খালেদ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত। রুদ্রের নামে ০৩টি মাদক মামলা আছে এবং জুবেইন এর নামে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা সেবনে তারা চরম আসক্তির পর্যায়ে পৌঁছায়। পরবর্তীতে আসক্তির মাত্রা বাড়াতে গত চার থেকে পাঁচ বছর ধরে তারা আইস গ্রহণ শুরু করে। তারা বিভিন্ন সময়ে উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীদের নেশায় উদ্বুদ্ধ করতো। ক্ষেত্র বিশেষে গোপন ভিডিও ধারণ করে তাদেরকে ব্লাকমেইল করত। এছাড়া তারা অস্ত্র দিয়ে ‘এমিং গেম’ জুয়া খেলত।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও কিছু সিন্ডিকেট এবং এই মাদকের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তারা সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদান করেছেন। র্যাব উক্ত সিন্ডিকেট এবং অন্যান্য আইস গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখবে।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
Comments