মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘের

মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। একইসঙ্গে সংস্থাটি সামরিক বাহিনীর প্রতি নভেম্বরের নির্বাচনের ফল মেনে নিতে এবং অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় মিয়ানমারের সেনারা রাস্তায় টহল দিচ্ছেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১। রয়টার্স/ফাইল ছবি

মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। একইসঙ্গে সংস্থাটি সামরিক বাহিনীর প্রতি নভেম্বরের নির্বাচনের ফল মেনে নিতে এবং অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

শুক্রবার সাধারণ পরিষদ এ আহ্বান জানিয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

রয়টার্স জানায়, গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান এবং অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের কয়েক মাস পর সাধারণ পরিষদ ১১৯টি দেশের সমর্থনে একটি নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করে। তবে, বেলারুশ এই প্রস্তাবে ভোটাভুটির অনুরোধ জানিয়েছে এবং তারাই একমাত্র দেশ যারা এর বিরোধিতা করেছে। অন্যদিকে চীন ও রাশিয়াসহ ৩৬টি দেশ এ থেকে বিরত ছিল।

মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গনার ভোটের পর সাধারণ পরিষদকে বলেন, ‘মিয়ানমারে বড় আকারের গৃহযুদ্ধের ঝুঁকি রয়েছে। সময় এখন মূল বিষয়। দেশটিতে সামরিক অধিগ্রহণ থেকে বের হওয়ার সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে।’

বিরত থাকা কিছু দেশ বলেছে যে, এই সংকট মিয়ানমারের একটি অভ্যন্তরীণ সমস্যা। তাই অন্যরা মনে করে না এই প্রস্তাব সহায়ক হবে। অন্যদিকে কিছু রাষ্ট্র অভিযোগ করেছে, এই প্রস্তাবে সামরিক অভিযানের কারণে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমের দুর্দশার পর্যাপ্ত সমাধান নেই।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জাতিসংঘ বিষয়ক রাষ্ট্রদূত ওলফ স্কুজ বলেছেন, ‘জাতিসংঘের প্রস্তাব একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে যে- এটি সামরিক জান্তার বৈধতা মানে না, তাদের নিজেদের জনগণের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও সহিংসতার নিন্দা করে এবং বিশ্বের চোখে তাদের বিচ্ছিন্নতা প্রদর্শন করে।’

এর আগে শুক্রবার জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সাধারণ পরিষদকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে উদ্যোগ নিতে চাপ দিয়েছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করতে পারি না যেখানে সামরিক অভ্যুত্থান একটি আদর্শ হয়ে ওঠে। এটা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।’

মিয়ানমারে নভেম্বরের নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে নির্বাচিত সরকারকে অস্বীকৃতি জানিয়ে দেশটিতে অভ্যুত্থান করে সামরিক বাহিনী। তবে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, নির্বাচন সঠিক ছিল।

জাতিসংঘের একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাবে মিয়ানমারের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানানো হয়। গত মাসে রয়টার্সের দেখা একটি প্রস্তাব অনুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নয়টি দেশ চেয়েছিল এটি অপসারণ করা হোক।

ওই সমঝোতা প্রস্তাবে ‘সকল সদস্য রাষ্ট্রকে মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে।’

তবে, সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবগুলো আইনত বাধ্যতামূলক না হলেও এগুলো রাজনৈতিক গুরুত্ব বহন করে। এছাড়া, ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের মতো সাধারণ পরিষদে কোনো দেশের ভেটো ক্ষমতা নেই।

অ্যাসিস্ট্যান্স এসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানিয়েছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ৮৬০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। যদিও সামরিক জান্তা বলছে, এই সংখ্যা আরও অনেক কম।

জাতিসংঘের প্রস্তাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে ‘অবিলম্বে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ’ এবং ইন্টারনেট ও সামাজিক প্রচার মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
Pro-Awami League journalist couple arrested

The indiscriminate arrests and murder charges

Reckless and unsubstantiated use of murder charges will only make a farce of the law, not bring justice to those who deserve it.

5h ago