দেশব্যাপী সিনোফার্মের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু

মুগদা হাসপাতালে সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: এসকে এনামুল হক/স্টার

চীনের সিনোফার্মের ভ্যাকসিন দিয়ে দেশব্যাপী দ্বিতীয় পর্যায়ে গণ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে টিকাদান শুরু হয়।

দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে কেন্দ্রে সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে। আর ঢাকায় সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে চার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেগুলো হচ্ছে— ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সবমিলিয়ে দেশের মোট ৬৭টি কেন্দ্রে টিকাটি দেওয়া হচ্ছে।

রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজে সরেজমিনে গিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সংবাদদাতা জানান, সকাল ৮টা থেকে এই কেন্দ্রে টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। যা চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। এই কেন্দ্রে অনেকে এসেছেন যারা প্রথম ডোজের টিকা নিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন। তারা বলছেন, মুগদায় মেডিকেল শিক্ষার্থীদেরকেই টিকা দেওয়া হচ্ছে। কয়েকজন আজ প্রথম ডোজ টিকা নিতে গেলেও তাদের ফেরত আসতে হয়েছে।

মুগদা হাসপাতালের পরিচালক ডা. অসিম কুমার নাথ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা সাতটি সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দিচ্ছি। আমরা সিনোফার্মের দুই হাজার চার শ ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছি। যারা নিবন্ধন করেছেন, কিন্তু, এখনো ভ্যাকসিন পাননি, তারা পরে পাবেন। কারন, চাহিদার তুলনায় ভ্যাকসিন পরিমাণ কম।’

ডেইলি স্টারের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) সংবাদদাতা জানান, ঢামেকেও সিনোফার্মের টিকাদান কর্মসূচি চলছে। আজ সেখানে তিনটি মেডিকেল কলেজের ৩০৩ জন শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় ১৫ লাখ মানুষ ভ্যাকসিনের জন্যে নিবন্ধন করেছেন, যারা এখনো প্রথম ডোজ পাননি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক নোটিশে বলা হয়েছে, দেশের যে ৬৭টি কেন্দ্রে এখন টিকাদান চলছে, সেই কেন্দ্রগুলোর জন্যে যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তারাই আপাতত অগ্রাধিকার পাবেন। অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছেন সম্মুখসারিতে কাজ করা সরকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, পুলিশ, বিদেশগামী অভিবাসী কর্মী (বিএমইটির নিবন্ধনকৃত), ঢাকার দুই সিটির পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা এবং ওয়ার্ড বা পৌরসভায় মরদেহ সৎকারকাজে জড়িত কর্মীরা।

পাশাপাশি দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল-নার্সিং-মিডওয়াইফারি কলেজের শিক্ষার্থী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক শিক্ষার্থী, বিডার কর্মী এবং বাংলাদেশে বসবাসরত চীনা নাগরিকরাও এই টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

চীন থেকে উপহার হিসেবে দুই দফায় ১১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে এই টিকা শুধু মেডিকেল শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছিল। তবে, আজ থেকে এ টিকা দিয়ে গণ টিকাদান কর্মসূচি চলছে। এ ছাড়াও, কোভ্যাক্স প্রকল্পের আওতায় এক লাখ ছয় হাজার ডোজ ফাইজারের টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ।

করোনা মহামারিতে গত ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশে জরুরি ব্যবহারের জন্যে চীনের সিনোফার্মের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

১৮ বছরের ওপরের সবাইকে পর্যায়ক্রমে করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় নিয়ে আসার উদ্দেশ্য সামনে রেখে সরকার গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে গণ টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে। কিন্তু, টিকার স্বল্পতার কারণে গত ২৬ এপ্রিল সরকার প্রথম ডোজ টিকাদান বন্ধের ঘোষণা দেয়। এর সপ্তাহখানেক পর একই কারণে সারাদেশের সবগুলো কেন্দ্রে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সরবরাহে ব্যর্থ হলে বালাদেশের টিকাদান কর্মসূচিতে প্রভাব পড়ে। চুক্তি অনুযায়ী, সেরাম থেকে ছয় মাসের মধ্যে বাংলাদেশের তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল। জানুয়ারিতে সেরাম প্রথম দফায় ৫০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করে। যার মধ্যে ওই মাসে মাত্র ২০ লাখ ডোজের একটি চালান ঢাকায় পৌঁছায়। এরপর সেরাম থেকে বাংলাদেশে আর কোনো চালান আসেনি।

আরও পড়ুন:

১৯ জুন থেকে আবার প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া শুরু

আগামীকাল থেকে বন্ধ করোনার প্রথম ডোজের টিকাদান

থেমে যেতে পারে টিকাদান কর্মসূচি

পাবনায় টিকা কার্যক্রম বন্ধ, দ্বিতীয় ডোজ বঞ্চিত ৩৫ হাজার

পর্যায়ক্রমে সবাইকে টিকার আওতায় আনা হবে: প্রধানমন্ত্রী

জুন-জুলাইয়ের আগে ভ্যাকসিন রপ্তানি অনিশ্চিত: সেরামের সিইও

চ্যালেঞ্জের মুখে সরকার: ভ্যাকসিন সংকটের মধ্যেও চলবে প্রথম ধাপের টিকাদান

বাংলাদেশকে আরও ৬ লাখ ডোজ করোনা টিকা উপহার দেবে চীন

হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা আগে টিকা পাবেন

Comments

The Daily Star  | English

How frequent policy shifts deter firms from going public

If a company gets listed, it will enjoy tax benefits, and this is one of the major incentives for them to go public..However, the government’s frequent policy changes have disheartened listed firms many times, as they faced higher tax rates once they got listed..It gave a clear, nega

2h ago