শেষ ষোলোয় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নেদারল্যান্ডসের সঙ্গী অস্ট্রিয়া
নকআউট পর্বের টিকেট আগেই কেটে নিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। উত্তর মেসেডোনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা ছিল শীর্ষস্থান নিশ্চিত করার। তবে তাদের বিপক্ষে হেসে-খেলেই জয় তুলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দলটি। অন্যদিকে ইউক্রেনকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ ষোলোতে ডাচদের সঙ্গী হয়েছে অস্ট্রিয়া।
সোমবার রোমানিয়ার অ্যারেনা ন্যাশনালায় ইউক্রেনকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে অস্ট্রিয়া। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন ক্রিস্টোফ বামগার্টনার।
নেদারল্যান্ডসের জোহান ক্রুয়েফ অ্যারেনায় উত্তর মেসেডোনিয়াকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা। জোড়া গোল করেন এ মৌসুমে পিএসজিতে যোগ দেওয়া জিওর্জিনিও উইনালদাম। অপর গোলটি আসে সদ্য বার্সায় যোগ দেওয়া মেম্ফিস ডিপাইয়ের কাছ থেকে।
তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে গ্রুপ পর্ব শেষ করে নেদারল্যান্ডস। দ্বিতীয় রাউন্ডে ডি, ই অথবা এফ গ্রুপের সেরা তৃতীয় হয়ে আসা দলের বিপক্ষে লড়বে তারা। তিন ম্যাচে ২টি জয়ে ৬ পয়েন্ট গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে ডাচদের সঙ্গী হয় অস্ট্রিয়া। শেষ ষোলোর লড়াইয়ে তারা মুখোমুখি হবে 'এ' গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ইতালির বিপক্ষে।
তিন ম্যাচে একটি জয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ পর্ব শেষ করে ইউক্রেন। তবে এখনই আসর থেকে বাদ হয়ে যাচ্ছে না তারা। ছয় গ্রুপের তৃতীয় স্থান নিশ্চিত করা দলগুলোর মধ্যে সেরা চারে থেকে নকআউট পর্বে যাওয়ার সুযোগ থাকছে তাদের। তবে তিন ম্যাচের তিনটিতেই হেরে যাওয়ায় বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে উত্তর মেসেডোনিয়ার।
এদিন ম্যাচের ১৬তম মিনিটে গোল করার মতো ভালো সুযোগ পেয়েছিল অস্ট্রিয়া। মার্কো আর্নাউতোভিচের জোরালো শট নলক করেন ইলাই জাবার্নি। তবে খুব বেশিক্ষণ তাদের গোল বঞ্চিত রাখতে পারেনি ইউক্রেন। পাঁচ মিনিট পর ডেভিড আলাবার নিখুঁত কর্নার কিকে দারুণ এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন বামগার্টনার।
২৯তম মিনিটে সমতায় ফিরতে পারতো স্বাগতিকরা। রুসলান মালিনভস্কির বাড়ানো বল থেকে দারুণ এক কোণাকোণি শট নিয়েছিলেন মিকোলা শ্যাপারেঙ্কো। কিন্তু তার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান অস্ট্রিয়ান গোলরক্ষক ড্যানিয়েল ব্যাচমান।
নয় মিনিটে পর একই ধরণের সুযোগ ছিল অস্ট্রিয়ারও। এবার কোনরাডের লেইমারের ডান পায়ের জোরালো শট দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে ঠেকান ইউক্রেন গোলরক্ষক জর্জ বাসকান। ৪২তম মিনিটে অবিশ্বাস্য এক মিস করেন আর্নাউতোভিচ। আলেসান্দ্রো স্কফের বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লক্ষ্যেই রাখতে পারেননি সাংহাই পোর্টের এ তারকা।
ম্যাচের যোগ করা সময়ে সতীর্থের বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন স্কফ। কিন্তু বল ধরতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যান তিনি। তবে পরে গিয়েও ফাঁকায় থাকা স্তিফান লেইমারকে পাস দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার দুর্বল শট সহজেই ধরে ফেলেন গোলরক্ষক বাসকান।
৫১তম মিনিটে জাভের স্ক্লাগারের দূরপাল্লার শট সহজেই ধরে ফেলেন ইউক্রেন গোলরক্ষক। ১১ মিনিট পর বল ঠেকাতে গিয়ে প্রায় নিজেদের জালে বল ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন লেইনার। তবে গোলরক্ষক সতর্ক থাকায় সে যাত্রা বেঁচে যায় অস্ট্রিয়া। কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান তিনি। ৮৭তম মিনিটে দলকে সমতায় ফেরানোর ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন রোমান জারেনচুক। কিন্তু তার কোণাকোণি শট লক্ষ্যেই থাকেনি।
অপর ম্যাচে নিজেদের কিছুটা দুর্ভাগা বলতেই পারে মেসেডোনিয়া। ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিটেই দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যেতে পারতো তারা। দুটি গোল আফসাইডের কারণে বাতিল হয় তাদের। বারপোস্টে লেগেও ফিরে আসে একটি বল। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২৪তম মিনিটে ডাচদের এগিয়ে দেন মেম্ফিস। ডোনিয়েল মালানের সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে ডি-বক্সে ঢুকে কোণাকোণি শটে বল জালে পাঠান এ বার্সা তারকা।
দ্বিতীয়ার্ধে সাত মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করেন উইনালদাম। ৫১তম মিনিটে মেম্ফিসের কাটব্যাক থেকে ছোট ডি-বক্সে ফাঁকা পোস্টে বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এ পিএসজি তারকা। ৫৮তম মিনিটের গোলের মূল অবদান ডিপাইয়ের। সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ এক কোণাকোণি শট নিয়েছিলেন তিনি। তবে মেসেডোনিয়া গোলরক্ষক দিমিত্রোভস্কি ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও আলগা বল পেয়ে যান উইনালদাম। আলতো টোকায় নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোল আদায় করে নেন তিনি।
Comments