কিডনি কোথায় বিক্রি করতে হয়, জানতে চাইলেন সিনেমা হল কর্মী

সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে সিনেমা হল বন্ধ কিংবা খোলা রাখার বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি। ফলে গত ঈদুল ফিতরে দেশে প্রায় ১১০টি সিনেমা হল খুলেছিল। কিন্তু, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন অনেক সিনেমা হল বন্ধ করে দেয়।
রাজধানীর ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হল। ছবি: সংগৃহীত

সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে সিনেমা হল বন্ধ কিংবা খোলা রাখার বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি। ফলে গত ঈদুল ফিতরে দেশে প্রায় ১১০টি সিনেমা হল খুলেছিল। কিন্তু, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন অনেক সিনেমা হল বন্ধ করে দেয়।

গত ১৯ জুন ঢাকার ফার্মগেটে ‘আনন্দ’ ও ‘ছন্দ’ সিনেমা হল চালু রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। ফলে ‘মধুমিতা’সহ বেশ কয়েকটি সিনেমাহল খোলার যে সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছিল, তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সিনেমা হল খোলার বিষয়ে আপত্তি থাকলেও ঢাকায় স্টার সিনেপ্লেক্সের সবগুলো শাখা খোলা রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে সেখানে।

ছন্দ ও আনন্দ সিনেমা হলের জেনারেল ম্যানেজার মো. শামসুদ্দিন গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর সিনেমা হল বন্ধ রাখার বিষয়ে কোনো সরকারি নির্দেশনা পাইনি। সেই কারণে সিনেমা হল খোলা রেখেছিলাম। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সিনেমা হল খোলা রেখেছি। আমাদের দুইটা সিনেমা হলের আসন প্রায় দেড় হাজার। প্রতিদিন প্রতি শোয়ে সাকুল্যে ৫০ থেকে ৭০টি টিকিট বিক্রি হতো।’

‘আর স্বাস্থ্যবিধির কথা যদি বলেন, আমাদের সিনেমা হলের সামনে প্রতিদিন গানের আসর বসে। যতজন সিনেমা দেখে, সেখানে চারগুণ বেশি মানুষ থাকে। ফার্মগেটে হলের সামনে দিয়ে বাস চলাচল হতে দেখি, সেখানে কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। আমরা আলাদাভাবে সিনেমাহল বন্ধের কোনো প্রজ্ঞাপন পাইনি। যেটা গতবার পেয়েছিলাম। আমাদের সিনেমা হলকে তাহলে কেন জরিমানা করা হলো বুঝতে পারছি না’, বলেন তিনি।

শামসুদ্দিন আরও বলেন, ‘আমাদের মতো দেশের সব সিনেমা হল খুব খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। সিনেমা হল খোলা রাখলে সবকিছু মিলিয়ে প্রতিদিন ২৪ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। এই টাকাও এখন উঠে না, আমরা আশায় ছিলাম, আগামীতে সবকিছু ঠিকঠাক হবে। এরইমধ্যে সোমবার বকেয়ার কারণে সিনেমা হলের বিদ্যুৎ লাইন কেটে দিয়েছে। পানির বিল বাকি পড়ে আছে। ট্যাক্স দিতে হয়। কয়েকজন কর্মী পেশা বদল করেছে। এইভাবে কতদিন চলবে জানি না। আমাদের একজন সিনেমা হলের এক কর্মী গতকাল বলছিলেন, “কোথায় কিডনি বিক্রি করতে হয় বলেন, আমি বিক্রি করব।” তার বাসাভাড়া, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হয়েছে একবছরের মতো। পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে। এই দুঃসময়ে সিনেমায় সব সংগঠন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে এগিয়ে আসা উচিত। নাহলে সব ধ্বংস হয়ে যাবে।’

স্টার সিনেপ্লেক্সের বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ গতকাল দুপুরে ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সরকার যখন থেকে মার্কেট খোলার বিষয়ে বলেছেন, তখন থেকেই আমাদের সিনেপ্লেক্সে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিনেমা প্রদর্শন করছে। গতবার সরকার যখন সিনেমাহল বন্ধ রাখার কথা বলেছিল, আমরা বন্ধ রেখেছিলাম। সিনেমা হল বন্ধ রাখার বিষয়ে এইবার প্রজ্ঞাপন আসেনি। তাই সিনেপ্লেক্সের সবগুলো শাখা খোলা আছে। সেখানে সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Further uncertainty over Rooppur plant launch

The construction work for the transmission line through the Padma and Jamuna rivers for the Rooppur nuclear power plant has come to a grinding halt with the ouster of the Awami League government as the Indian contractor has left the site.

9h ago