সুইজারল্যান্ড সংসদের নারী অধিবেশনের প্রথম নির্বাচিত সদস্য বাংলাদেশি সুলতানা খান
বাংলাদেশি সুলতানা খান সুইজারল্যান্ডের পার্লামেন্টে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি নির্বাচিত হয়েছেন সুইজারল্যান্ড সংসদের নারী বিষয়ক অধিবেশনের জন্যে। নারী বিষয়ক অধিবেশনের আসন সংখ্যা ২৪৬। সুইজারল্যান্ডের নারী ভোটারদের সরাসরি ভোটে তারা নির্বাচিত হন। বছরে কয়েকবার এই অধিবেশন বসে এবং নারীদের নানাবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনা ও আইন পাস হয়।
নারী বিষয়ক অধিবেশনে প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি সুইজারল্যান্ডের জাতীয় সংসদে পা রাখছেন।
২৪৬ আসনের বিপরীতে ১৪০০ নারী প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জুরিখ জোন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ৩৫ জন। সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিতদের মধ্যে তৃতীয় হয়েছেন সুলতানা খান। গতকাল নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
সুলতানা খান সুইজারল্যান্ডের মূলধারার বেশ কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশের শিল্প ও সাহিত্য চর্চার জন্য বাংলা স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব পালন করছেন।
সুলতানা খানের জন্ম ঢাকার মিরপুরে, গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী জেলায়। বাবা এসএম রুস্তম আলী, মা রাজিয়া সুলতানা। পাঁচ ভাই দুই বোনের সংসারে সর্বকনিষ্ঠ তিনি। বর্তমানে স্বামী প্রবাসী সাংবাদিক, সংগঠক এবং ব্যবসায়ী বাকিউল্লাহ খান ও দুই পুত্র সন্তানসহ দীর্ঘদিন ধরে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ শহরে বসবাস করছেন।
আজ বুধবার টেলিফোনে সুলতানা খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার জন্য একদমই নতুন যাত্রা। এর পূর্বে যেহেতু বাংলাদেশিদের মধ্য থেকে কেউ এখনো জাতীয় সংসদে গিয়ে কথা বলার সুযোগ পায়নি, সেক্ষেত্রে শিশির ভেঙ্গে পথ তৈরির কাজটি করতে চাই। প্রবাসী বাংলাদেশি নারীরা সুইজারল্যান্ডে এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। আমাদের অনেক সমস্যা। শিক্ষা, চাকরির ক্ষেত্রেও পিছিয়ে। সুতরাং, বিষয়গুলো নিয়ে আওয়াজ তুলতে চাই।’
সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য কী থাকবে? সুলতানা খান বলেন, ‘সংসদে কথা বলবার সুযোগ যেহেতু পেয়েছি, প্রবাসী বাংলাদেশি নারীদের বহুবিধ সমস্যাগুলো তুলে ধরার, বলার পাশাপাশি আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের বিষয়টিও সংসদে তুলে ধরতে চাই। ভাষার বৈচিত্র্য এবং অধিকার সারাবিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হোক, এই দাবি থাকবে আমার।’
তিনি আরেও বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডের জাতীয় সংসদের এই নারী অধিবেশনটি সারাবিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতেই ভিন্ন চরিত্রের। আপনার জানেন মাত্র ৫০ বছর পূর্বে ১৯৭১ সালে সুইজারল্যান্ডে প্রথম নারীরা ভোট প্রদানের অধিকার পায়। এখানে নারীদের জন্য অনেক কিছু করার আছে। এই অধিবেশনের দিকে তাকিয়ে থাকে সারাবিশ্বের নারী অধিকার কর্মীরা। সুতরাং, আমাদের নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করতে বহু কিছু করার আছে।’
‘সুইসের জাতীয় সংসদের নারী অধিবেশনের একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমাকে নির্বাচিত করার জন্য সব প্রবাসী নারী ও সুইস ভোটারদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই সুইসের মহিলা পরিষদ (ফ্রাউয়েন সেন্ট্রাল) ও গ্রিন লিবারেল এবং সোশালিষ্ট পার্টিকে’, যোগ করেন সুলতানা খান।
Comments