লকডাউনে কাঁঠাল বেচাকেনা কমেছে গাজীপুরে
লকডাউনের কারণে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মৌসুমি ফল বিক্রিতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন গাজীপুরের চাষিরা। নির্ধারিত সময়ে হাট বসার কারণে বাজারগুলোতে লোক সমাগম কম হচ্ছে। ফলে, কাঁঠালের মতো মৌসুমি ফল বিক্রি করা যাচ্ছে না।
আজ শুক্রবার গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা এলাকার কাঁঠাল চাষি এরশাদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, লকডাউনে বাজারের সময় নির্ধারিত থাকায় স্থানীয় বাজারে কাঁঠালের বেচাকেনা কম হচ্ছে। কাঁঠালের স্থানীয় ক্রেতা কম।
তিনি জানান, গাজীপুর থেকে কাঁঠাল সাধারণত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। কিন্তু, লকডাউনের কারণে বেপারিদের আনাগোনা কম। তাই বাজারে কাঁঠালের আমদানি ভাল হলেও বিক্রি কম।
শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ফকিরপাড়া গ্রামের কাঁঠাল চাষি আব্দুল আজিজ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কাঁঠালের মৌসুম শুরুর পর থেকে প্রায় প্রতিদিন তিনি কাওরাইদ স্টেশন বাজারে ৫-৭টি কাঁঠাল বিক্রি করতে নিয়ে যান। স্থানীয়রা ছাড়াও ট্রেন যাত্রীরা কাঁঠাল কিনে নিতেন।
তিনি বলেন, 'লকডাউন শুরুর পর বাজারে ক্রেতার সমাগম কমে গেছে। ট্রেনও চলে না ক্রেতাও নেই। বিক্রি করতে না পারায়, কেউ কাঁঠালের দাম জিজ্ঞেস করলে তাকেই দিয়ে দিই। তা না হলে কাঁঠাল পচে যায় বা বিনামূল্যে কাউকে দিয়ে দিতে হয়।'
পাশের হালুকাইদ গ্রামের কাঁঠাল চাষি নূর মোহাম্মদ আলী শেখ জানান, যারা কাঁঠালের বাগান লকডাউনের আগে বিক্রি করেছিল, তারা কিছুটা রক্ষা পেয়েছেন। তাদের কাঁঠালের চিন্তা বেপারিদের।
তিনি বলেন, 'কিন্তু আমাদের মতো যারা বাগানের কাঁঠাল একসঙ্গে বিক্রি করিনি, তাদেরকে বিপদে পড়তে হয়েছে। আষাঢ় মাসের এ সময়ে গাছে প্রায় প্রতিদিনই কাঁঠাল পাকে। বিক্রি করতে না পারলে কাঁঠাল পচে নষ্ট হবে, নয়তো ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করা যাবে না।'
একই গ্রামের হাফিজ উদ্দিন জানান, কাঁঠাল পাকা ও আমদানির বিষয়টি প্রকৃতি নির্ভর। একদিকে লকডাউন, অন্যদিকে বর্ষায় কাঁঠাল গাছে পাকা শুরু করেছে।
'বিক্রি করতে না পেরে গাছেই কাঁঠাল পেকে পচে যাচ্ছে,' বলেন তিনি।
শ্রীপুর উপজেলার টেংরা গ্রামের চাষি আব্দুস ছালাম জানান, স্থানীয় হাট ও বাজারের সময় সীমিত থাকায় লোকসমাগম কম হচ্ছে। ফলে স্থানীয়ভাবেও কাঁঠাল বিক্রি কম হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর গাজীপুরে নয় হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের আবাদ করা হয়েছে। আর শ্রীপুর উপজেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন হাজার ৬৯০ হেক্টর।
Comments