ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে বিপর্যস্ত পর্তুগালের ৪৫ শহরে রাত্রিকালীন কারফিউ
পর্তুগালে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় রাজধানী লিসবনসহ ৪৫টি শহর রাত্রিকালীন কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি অতি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ও ২৬টি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ পৌর শহর রয়েছে। এসব শহরে রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ থাকবে।
সাম্প্রতিক সময়ে পর্তুগালের রাজধানী ও এর আশেপাশের শহরগুলোতে করোনার উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ এবং যুবকরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে পর্তুগালের চলমান জনজীবন স্বাভাবিককরণের প্রক্রিয়া কিছুটা হোঁচট খেয়েছে।
কারফিউ ছাড়াও নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ট্যুরিস্ট শপসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাধারণ কর্ম দিবসে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং শনিবার ও রোববারসহ অন্যান্য ছুটির দিনে দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। সোমবার থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এবং শনিবার, রোববার ও ছুটির দিনে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত রেস্টুরেন্ট খোলা থাকবে। রেস্টুরেন্ট ভেতরে এক টেবিলে সর্বোচ্চ চার জন ও বাইরে ছয় জন বসতে পারবেন।
মিনি মার্কেট ও সুপার মার্কেট শনিবার ও রোববার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এবং সপ্তাহের অন্যান্য দিন রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে সোমবার ভোর ৫টা পর্যন্ত লিসবনে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না, বাইরেও যাওয়া যাবে না। তবে ৭২ ঘণ্টার ভেতরে পিসিআর অথবা ৪৮ ঘণ্টার ভেতরে করানো অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় আসা করোনা নেগেটিভ সনদ সঙ্গে থাকলে অথবা করোনার ডিজিটাল সাটিফিকেট থাকলে চলাচলে কোনো বাধা থাকবে না।
গত ২৪ ঘণ্টায় পর্তুগালে করোনায় আক্রান্ত দুই হাজার ৪৩৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। মারা গেছেন সাত জন। পর্তুগালের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে মোট শনাক্তের ৫৬ দশমিক ০২ শতাংশ রোগী লিসবন এবং টাগুস নদী উপত্যকার বাসিন্দা বলে জানানো হয়েছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, পর্তুগালে এ পর্যন্ত আট লাখ ৮৪ হাজার ৪৪২ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার ১০৮ জন মারা গেছেন। করোনা সংক্রমণ রোধে চলতি মাস থেকে প্রতিদিন এক লাখ ৩০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বর্তমানে ৩৫ বছরের সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসছে দেশটি। ডেল্টা ভেরিয়েন্টে তরুণ এবং যুবকরা বেশী আক্রান্ত হওয়ায় মধ্য জুলাই থেকে ২০ বছরের সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চার লাখের বেশি জনগোষ্ঠীকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের করোনার ডিজিটাল সাটিফিকেট দিয়েছে। যারা করোনার দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন বা করোনার নেগেটিভ রিপোর্ট রয়েছে অথবা করোনা আক্রান্তের পরে সুস্থ হয়েছেন এমন সবাই আবেদন করে এই সনদ পেয়েছেন।
লেখক: পর্তুগালপ্রবাসী সাংবাদিক
Comments