‘হাসপাতালে অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলার পরপরই মা মারা যান’

অনতা চাকমা। ছবি: সংগৃহীত

‘অক্সিজেন মাস্ক লাগানোর পর আমার মা কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছিলেন। হাসপাতালের তিন তলায় নিয়ে যাওয়ার নামে একজন ওয়ার্ড বয় মায়ের মাস্ক খুলে ফেললে এর পরপরই আমার মা মারা যান,’ বলছিলেন খাগড়াছড়ির দুর্গম দাঁত কুপ্যা অপর্ণা মহাজন পাড়ার অনতা চাকমার মেয়ে তনয়া চাকমা। 
তিনি অভিযোগ করেন, ‘তিন তলায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে একজন ওয়ার্ড বয় আমার মায়ের  অক্সিজেন মাক্স খুলে ফেলেন। অক্সিজেন মাক্স খুলে ফেলার পরপরই আমার মা মারা যান।
মারা যাওয়া অনতা চাকমার ভাইয়ের ছেলে অনিল চাকমা বলেন, ‘শ্বাস কষ্টের সমস্যা নিয়ে গত শুক্রবার সকালে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে যাওয়া হলে ইমারজেন্সি ডিউটি ডাক্তার সাইফুল ইসলামের নির্দেশে অক্সিজেন এবং ইনজেকশন দেয়া হয়। নির্দেশ দিয়ে ডাক্তার সাইফুল অন্য রুমে চলে যান।’
তিনি বলেন, ‘অক্সিজেন মাস্ক লাগানোর পর রোগী স্বাভাবিক হয়েছিলেন। কিন্তু ইমারজেন্সি রুমে থাকা একজন ওয়ার্ড বয় তিন তলায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রোগীর অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলেন।’
এ বিষয়ে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ওই দিন হাসপাতালে রোগীকে আমি দ্রুত অক্সিজেন এবং কটসন ইনজেকশন দিতে বলেছিলাম। ইনজেকশন পুশ করেন আমাদের সিনিয়র একজন স্টাফ নার্স।’
ওয়ার্ড বয় মাস্ক খুলতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একটা সেন্ট্রাল লাইনের অক্সিজেন লাইন নিয়ে তিন তলায় যাওয়া সম্ভব নয়।’
নার্স এবং ওয়ার্ড বয়ের নাম জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম বলেন, নার্সের নাম এখন মনে নেই। নিশ্চিত হয়ে বলতে পারছেন না ওয়ার্ড বয়ের নাম কী। 
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা নুপুর কান্তি দাশ জানান, ‘ডাক্তার কিংবা হাসপাতালের অন্য কারো সেদিন কোনো অবহেলা হয়েছিল কিনা সেটি আমাদের তদন্ত করতে হবে।’
‘তবে সেই রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল,’ বলেন তিনি। 
ওয়ার্ড বয় রোগীর অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলার বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন ‘কোথাও হয়তো কারো ভুল হতেও পারে। সবাই সমান দক্ষ নয়। দক্ষতা আরও বাড়াতে হবে।’
এদিকে মায়ের ডেথ সার্টিফিকেটে তার বয়সও ভুল উল্লেখ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনতা চাকমার ছেলে নয়ন চাকমা। তিনি বলেন, ‘আমার মায়ের বয়স ৪৯ বছর ৬ মাস কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো কথা না শুনেই ডেথ সার্টিফিকেটে বয়স ৬৫ লিখে দিয়েছে।’    
জাতীয় পরিচয়পত্রে অনতা চাকমার বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর কিন্তু হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে কেন ৬৫ বছর লেখা হয়েছে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, ‘হয়তো সেদিন তাড়াহুড়োর মধ্যে ভুল হয়ে গেছে।’

Comments

The Daily Star  | English
Muhammad Yunus attends Ecnec meeting

Yunus sits with advisers following Ecnec meeting

The chief adviser is presiding over the meeting that began at 11:00am

3h ago