দুঃসময়ে নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী

high_commodity_prices_6oct21.jpg
ছবি: স্টার

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সারা দেশে প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। সীমিত আয়ের মানুষের জন্য এটি চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যেই তারা কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তৈরি হওয়া অর্থনৈতিক মন্দার সঙ্গে সংগ্রাম করছেন।

গতকাল মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিনির দাম বেড়েছে ১১ শতাংশ, ময়দার দাম ৯ থেকে ১৩ শতাংশ, পেঁয়াজের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ এবং ডিমের দাম প্রতি ডজনে প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে। এগুলো কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। সরবরাহ ব্যবস্থা মহামারির প্রভাবমুক্ত হওয়ার আগেই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদা বাড়তে থাকা মূল্য বৃদ্ধির একটি কারণ। আরেকটি কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা উল্লেখ করেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেশি।

তবে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতির মতে, স্থানীয় বাজারে অনেক পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় বেশি। এর অর্থ হলো, ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারে বেশি দামের অজুহাতে মানুষের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করছেন।

সরকারের উচিত অবিলম্বে এই বিষয়ে নজর দেওয়া এবং যেসব ব্যবসায়ী সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি অর্থ আদায় করে ভোক্তাদের শোষণের চেষ্টা করছেন তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য ক্রমাগত কমে যাওয়া রোধ করা উচিত। এতে করে বিভিন্ন পণ্যের আমদানি খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রধান প্রধান নিত্যপণ্যের জন্য বিদেশের বাজারের ওপর নির্ভরশীল থাকায় বাংলাদেশ সব সময় আমদানি-প্ররোচিত মূল্যস্ফীতির ঝুঁকিতে থাকে। ফলে এই দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশের একমাত্র উপায় হচ্ছে কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য নিজস্ব সরবরাহ শৃঙ্খল তৈরি করা। প্রকৃতপক্ষে, এটি আগেই করা উচিত ছিল। নিদেনপক্ষে করার চেষ্টা করা উচিত ছিল।

যাই হোক, দাম কমিয়ে আনার জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে সরকারের কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য খোলা বাজারে বিক্রি করা উচিত। পাশাপাশি, দামের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে- এমন লোকজনকে সরকারি সহায়তা হিসেবে নিজস্ব স্টক থেকে কিছু নিত্যপণ্য সরবরাহ করা উচিত বা ভর্তুকি দেওয়া উচিত এবং খুচরা বাজারে সরকারের মূল্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এসব পণ্য বিক্রির ব্যাপারে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

সরকারকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি আরও সাবধানে প্রণয়ন করতে হবে। কারণ কিছু বিশ্লেষক ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে মুদ্রাস্ফীতির যথেষ্ট চাপ থাকবে। যেহেতু বিশ্ব কোভিড-১৯ মহামারি থেকে থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।

অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম

Comments

The Daily Star  | English
International Crimes Tribunal 2 formed

Govt issues gazette notification allowing ICT to try political parties

The new provisions, published in the Bangladesh Gazette, introduce key definitions and enforcement measures that could reshape judicial proceedings under the tribunals

20m ago