‘এটা মিডিয়ার বানানো’

শুধু দেশে নয়, ভারতীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও সাফল্য পেয়েছেন জয়া আহসান। বর্তমানে ২ বাংলার সিনেমাতেই সরব তিনি।
জয়া আহসান। ছবি: শাহরিয়ার কবির হিমেল/স্টার

শুধু দেশে নয়, ভারতীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও সাফল্য পেয়েছেন জয়া আহসান। বর্তমানে ২ বাংলার সিনেমাতেই সরব তিনি।

জয়া আহসান এখন কলকাতায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নতুন একটি সিনেমার ডাবিংয়ের জন্য। সেখান থেকেই মুঠোফোনে কথা বলেছেন ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

জয়া আহসান। ছবি: শাহরিয়ার কবির হিমেল/স্টার

বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসছে ঢাকার নায়িকাদের কারণে কলকাতার নায়িকারা কাজ পাচ্ছেন না। এটা কি মিডিয়ার বানানো গল্প, নাকি এর সত্যতা আছে?

এটা মিডিয়ার বানানো। এই কথা সত্যি না। আমি কাউকে এ কথা বলতে শুনিনি। কেউ বলেছেন বলে মনে হয় না। কেউ ভালো কাজ করলে তার প্রশংসা হবেই, প্রশংসা করাটাই স্বাভাবিক। আমি মনে করি ভালো কাজটাই সব। একজনের ভালো কাজের স্বীকৃতি অন্য কেউ নিতে পারেন না। কারও অভিনয় বা চরিত্র কেউ নিতে পারবেন না। কলকাতায় আমি দেখেছি, আমাকে ভেবে কেউ কেউ সিনেমা নির্মাণ করছেন, গল্প তৈরি করছেন।

বিসর্জন ও বিজয়া সিনেমার পরিচালক আমাকে বলেছিলেন, জয়া না হলে এই ছবি করা হতো না। জয়া আহসানকে দরকার ছিল, সেজন্য জয়াকে নিয়েছে। আমাকে কলকাতার মানুষ অনেক ভালোবাসেন। কেউ কেউ তো বলেন, একেবারে চলে এসো। আমি বলি, সবার আগে আমার বাংলাদেশ। অভিনেত্রী হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি।

জয়া আহসান। ছবি: শাহরিয়ার কবির হিমেল/স্টার

তারকাদের প্রেম-বিয়ে নিয়ে সাধারণ মানুষের এতো আগ্রহ কেন থাকে? নিজে কখনও চিন্তা করে দেখেছেন?

তারকারা তো মানুষের জন্য কাজ করেন। দর্শকরা আছেন বলেই কাজ করা হয়। সে কারণে সাধারণ মানুষ তারকাদের সবকিছুতে বেশি আগ্রহ দেখান। আমি কাজ নিয়ে থাকতে চাই। এসব নিয়ে কখনও ওইভাবে চিন্তা করিনি।

দেখুন, আমি অভিনয় শিল্পী। সত্যিকারের শিল্পীর কাজ অভিনয় করা। অভিনয় নিয়ে থাকতে চাই। অভিনয় আমার মুক্তি, চলচ্চিত্র আমার মুক্তি।

আমি এক নম্বর অবস্থানে আছি, এতোগুলো পুরস্কার পেয়েছি—এইসব নিয়ে পড়ে থাকলে তো আমার শিল্পী জীবন এগোত না। এক জায়গায় পড়ে থাকতে হতো। আমাকে ছাড়া ওই সিনেমাটি হবে না—এসব কথাও বিশ্বাস করি না। কাজ করতে হবে এবং ভালো কাজের সঙ্গে থাকতে হবে, এটাই বিশ্বাস করি।

জয়া আহসান। ছবি: শাহরিয়ার কবির হিমেল/স্টার

তারকাদের প্রেম-বিয়ে নিয়ে মিডিয়া সত্য-অসত্য সংবাদ প্রকাশ করে। তেমন সংবাদের শিরোনামে আপনিও মাঝে মধ্যেই থাকেন। মিডিয়ার এসব সংবাদ বিষয়ে আপনার বিশ্লেষণ কী?

একজন শিল্পী হিসেবে এসব সংবাদে বিব্রত হই, মানুষ হিসেবে বিব্রত হই। এখন অনেক কিছু গা সওয়া হয়ে গেছে। সবারই দায়িত্ব আছে। ববিতা আপাদের সময় থেকে শুরু করে সংবাদকর্মী ও তারকাদের মধ্যে একটা বন্ধু ভাবাপন্ন সম্পর্ক ছিল। এটাই হওয়া উচিত। একজন সংবাদকর্মী ও তারকার মধ্যে সুসম্পর্ক থাকবে। এইরকম সংবাদে দেশের ইমেজের ক্ষতি হয়, তারকার ইমেজের ক্ষতি হয়। একটা দেশের সংস্কৃতি সেই দেশের ইমেজ ধরে রাখে।

জয়া আহসান। ছবি: শাহরিয়ার কবির হিমেল/স্টার

ঢাকা-কলকাতা মিলিয়ে বাংলা সিনেমা একটা প্রতিকূল সময় পার করছে। সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর মূল কারণ কী ভালো সিনেমার স্বল্পতা? নাকি অন্যান্য বহু ক্ষেত্র তৈরি হওয়া?

বহু ক্ষেত্র তো আছেই। আমি বলব করোনা এসে বড় ক্ষতিটা করে গেছে। এটা কেবল আমাদের দেশে নয়, সারা পৃথিবীতেই। স্বাভাবিকভাবে আমরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ভালো সিনেমার স্বল্পতা নেই, এমনটা বলব না। সময়টাই ফ্যাক্টর। প্রায় ২ বছর ধরে বিশ্বজুড়ে এই অবস্থা চলছে। মানুষের তো সবার আগে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানসহ মৌলিক জিনিসগুলোর ব্যবস্থা করতে হয়। বিনোদনও মানুষের প্রয়োজন। কিন্তু, সময়টা অনুকূলে ছিল না। সব মিলিয়ে একটা সংকট চলছে। ধীরে ধীরে আবার সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি আশাবাদী মানুষ।

আমি এখন কলকাতায় সিনেমার ডাবিং শেষ করছি। পূজার কাজ আছে। এ ছাড়া নতুন সিনেমার মিটিংও আছে। এখানে 'বিনিসুতোয়' চলছে। ৫০তম দিন পার হলো, এখনও দর্শক আসছেন হলে। এটা তো ওই রকম বাণিজ্যিক সিনেমা নয়। তারপরও দর্শক হলে যাচ্ছেন। সেজন্য বলব, সব ঠিক হয়ে যাবে। সিনেমাও ঘুরে দাঁড়াবে। আমি আশাবাদী ভীষণভাবে।

জয়া আহসান। ছবি: শাহরিয়ার কবির হিমেল/স্টার

২ বাংলা মিলিয়ে এমন পরিচালকের সংখ্যা কতো যাদের কাজ আপনার অভিনয় জীবনের এই পর্যায়ে এসেও মুগ্ধ করে? একজন পূর্ণাঙ্গ পরিচালক বলতে আসলে কী বোঝায়?

পূর্ণাঙ্গ পরিচালক কথাটির অর্থ ব্যাপক। পরিচালক মূলত জনপ্রিয় ধারার  সিনেমার পরিচালক আছেন, আবার অন্য ধারারও পরিচালক আছেন। সিনেমায় যারা নিজের দর্শন বলতে পারেন, নিজস্ব সংস্কৃতির কথা বলতে পারেন তারাই পূর্ণাঙ্গ পরিচালক। কয়জন সেই সিনেমা দেখল তা বড় কথা নয়। কত টাকা ব্যবসা করল তাও বড় কথা নয়। গল্প ভালো কিনা, কাজটা ভালো কিনা, ইতিহাসে থেকে যাবে কিনা—এটাই বড় বিষয়। ঋত্বিক ঘটকের সিনেমা মুক্তির সময় কতটা পেরিয়ে গেছে। অথচ তার সিনেমার কথা এখনও মানুষ বলে। সময়ই বলে দেবে একজন পূর্ণাঙ্গ পরিচালকের কাজ কতদিন পর মানুষ মনে রাখবে। সময়ের সঙ্গে থেকে যাবে যার কাজ তিনিই মূলত পূর্ণাঙ্গ পরিচালক।

অনেক পরিচালকের কাজ বা সিনেমা আমাকে মুগ্ধ করেছে। তাদের তালিকাটা বেশ বড়। কিন্তু নাম বলতে চাই না।

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

8h ago