দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের লোক দেখানো আয়োজন

সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবি নিষ্পত্তির জন্য অবশেষে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করেছে সরকার। এটি একটি সুসংবাদ হলেও ভাবার বিষয় হচ্ছে, এই বোর্ড গঠনে এতো সময় লাগলো কেন?
ছবি: স্টার

সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবি নিষ্পত্তির জন্য অবশেষে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করেছে সরকার। এটি একটি সুসংবাদ হলেও ভাবার বিষয় হচ্ছে, এই বোর্ড গঠনে এতো সময় লাগলো কেন?

জাতীয় সংসদে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ পাসের ৩ বছর এবং বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিব নিয়োগের প্রায় ১ বছর পর এই বোর্ড গঠন হয়েছে।

আরও চিন্তার বিষয় হলো, বোর্ডর গঠনের বিষয়টি হয়ে গিয়েছে 'ঘোড়ার আগে গাড়ি জোড়া'র মতো। কারণ ক্ষতিপূরণ চাওয়ার আবেদন করা গেলেও সড়ক পরিবহন আইনের বিধিমালা না থাকার কারণে সেগুলোর প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না। ওই বিধিমালায় ক্ষতিপূরণের পরিমাণ, সরকারি তহবিলে সেই অর্থ কোথা থেকে কীভাবে আসবে তা বলা থাকবে।

এই অর্থে, নতুন এই বোর্ড পুরোপুরি লোক দেখানো। সড়ক পরিবহন আইন পাস হওয়ার পর থেকে, বিধিমালার খসড়ার জমা দেওয়ার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) ৪ বার সময় দেওয়া হলেও তারা ব্যর্থ হয়েছে।

২০১৯ সালে তারা একটি অসম্পূর্ণ খসড়া জমা দেয় এবং এখন বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে।

সবশেষ যা জানা যায়, আইন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো নানা প্রশ্নের জবাব খুঁজতে তারা (বিআরটিএ) এখন ব্যস্ত এবং এ কাজে তাদের 'আরও খানিকটা সময় লাগবে'।

আমরা জানতে চাই, সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে যারা পঙ্গু হয়েছেন অথবা হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন তারা আসলে আর কতটা সময় দিতে পারবেন?

এটাও হতাশাজনক যে, নতুন যে বোর্ডটি গঠিত হয়েছে তাতে সড়ক নিরাপত্তা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের পক্ষে প্রচার চালানো সংস্থাগুলো থেকে কোনো প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যদিও পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের রাখা হয়েছে।

সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর করতে দেরি হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ পরিবহন সংশ্লিষ্ট নানা সমিতির চাপ। যেহেতু ক্ষতিপূরণ তহবিলে তাদেরকেও একটি অংশ দিতে হবে, সেহেতু এমন সদস্যদেরই এখানে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন ছিল যারা এদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতো।

গত সেপ্টেম্বরে পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে ৩ হাজার ২৫৯টি দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৯৫ জন নিহত হয়েছেন।

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও আহতের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চললেও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচার একের পর এক বাধার মুখে পড়ছে। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা তাদের জন্য আরও অপমানজনক।

তাই দ্রুত সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরে সরকারকে তার ক্ষমতার সর্বোচ্চটুকু প্রয়োগ করতে হবে।

 

অনুবাদ করেছেন সুচিস্মিতা তিথি

Comments

The Daily Star  | English

Sohel Chowdhury murder: 3 get life term, 6 acquitted

A Dhaka court today sentenced three people, including Aziz Mohammad Bhai, to life imprisonment and acquitted six others in the case filed over the murder of actor Sohel Chowdhury 25 years ago

12m ago