ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে ছুরিকাঘাত

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়নে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ছুরিকাঘাতে জখম হয়েছেন।
আজ রোববার গোলাম রাব্বানী গাংকান্দি সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্রে গেলে বিকেল ৩টার দিকে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন। এই সময় তার ডান হাতের দুটি আঙুল ছুরির আঘাতে জখম হয় এবং আরও একটি আঙুল কিছুটা কেটে যায়। গোলাম রাব্বানীর মামা সালাহ উদ্দিন মিয়া নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী (গিটার প্রতীকে) ছিলেন।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদিক মুঠোফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, গোলাম রাব্বানীর মামা সালাহ উদ্দিন আহমেদ ইশিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে (গিটার মার্কা) চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গোলাম রব্বানী তার মামার ভোট দেখতে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গাংকান্দি সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্রে যান। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার মামার প্রতিপক্ষ মোশাররফ মোল্লার (মোটরসাইকেল প্রতীক) সমর্থকেরা জাল ভোট দিচ্ছেন। এ সময় গোলাম রব্বানীর তাদের বাধা দিলে, দু'পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয় এবং প্রতিপক্ষের ছুরির আঘাতে তিনি আহত হন।
ওসি আরও জানান, হামলায় গোলাম রব্বানীর ডান হাতের ৩টি আঙুল জখম হয়। এই ঘটনায় দু'পক্ষের আনুমানিক ৭-৮ জন আহত হয়েছেন।
'আমি মুঠোফোনে বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম পাঠিয়েছি। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে,' বলেন ওসি।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, 'আহত গোলাম রব্বানীসহ অন্যান্যরা রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অন্য একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। গোলাম রব্বানী মৌখিকভাবে আমাকে অভিযোগ করেছেন। তিনি থানায় লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে মামলা করবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।'
রাজৈর থানার উপপরিদশক ইখতিয়ার আহমেদ জানান, গোলাম রব্বানীর মামা সালাহ উদ্দিন মিয়া চেয়ারম্যান পদে (গিটার মার্কা) নির্বাচন করেছেন। মামার নির্বাচনের ভোট দেখতে তিনি বারবার গাংকান্দি সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়রা তার ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
যোগাযোগ করা হলে গোলাম রাব্বানী মুঠোফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জাল ভোট দেওয়া হচ্ছে এমন খবর পেয়ে আমি কেন্দ্রের ভেতরে যাই। আমি তাদের জাল ভোট দেওয়া বন্ধের অনুরোধ জানাই। তখন মোশাররফ মোল্লার ছেলে সোহেল মোল্লা আমাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে৷'
তিনি আরও বলেন, 'আমি এখন আহতাবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি৷ এরপর মামলা করব৷'
রাজৈর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ্র মণ্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গোলাম রাব্বানীর ডান হাতের তর্জনীতে ৩টি সেলায় দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন ভালো আছেন।'
তবে, এ বিষয়ে জানতে মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশাররফ মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পাওয়ার পর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
জাল ভোটের বিষয়ে জানতে চাইলে এই নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, 'সেখানে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করায় দু'জনকে আটক করা হয়। পরে শর্তসাপেক্ষে পরিবারের কাছে ছেড়ে দেওয়া হয়।'
Comments