ভ্রমণ

কক্সবাজারে ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’: উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান নয়, ৮০ ভাগ রুম বুকিং

২০২২ সালকে স্বাগত জানাতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি নেই। করোনা মহামারির কারণে ৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অত্যন্ত সীমিত পরিসরে আয়োজন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Cox's Bazar-1.jpg
কক্সবাজারে সমুদ্রসৈকত। স্টার ফাইল ছবি

২০২২ সালকে স্বাগত জানাতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি নেই। করোনা মহামারির কারণে ৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে 'থার্টি ফার্স্ট নাইট' কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অত্যন্ত সীমিত পরিসরে আয়োজন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তারপরও দেশের বিভিন্ন স্থানের লোকজন কক্সবাজারে ২০২১ সালের শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় ও রাতে বিভিন্ন হোটেলের ইনডোরে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে এবং বিশাল সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়িয়ে ইংরেজি নতুন বছর ২০২২ সালকে বরণ করতে কক্সবাজারে ছুটে আসবেন।

নতুন বছর বরণকে কেন্দ্র করে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। একইভাবে জেলা প্রশাসন বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করেছে। শৃঙ্খলা রক্ষায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে টুরিস্ট পুলিশ।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লোনা জলে গা ভাসানো আর বালুকা বেলায় দাঁড়িয়ে নতুন বছরের নতুন সূর্যের রোদে আলোকিত হয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটতে পারে এমন আশা কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদারের।

তিনি জানান, এবারে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে এ পর্যন্ত ৭০ থেকে ৮০ ভাগ রুম বুকিং হয়েছে। সৈকতে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় কোনো আয়োজন হচ্ছে না। তাই এবার কক্সবাজারে পর্যটক আগমন আশানুরূপ হবে না।

আবুল কাশেম জানান, নতুন বছর ভালোভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ এবার একটি বিশেষ ছাড় দিচ্ছে। তা হচ্ছে রুমে দুজনের জায়গায় তিন জন, তিন জনের জায়গায় চার জন, এভাবে প্রতিটি রুমে অতিরিক্ত পর্যটক থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এজন্য অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া হবে না। নিয়ন্ত্রিত মূল্যে সব রুম বুকিং দেওয়া হচ্ছে।

তিনি কোনো দালালের মাধ্যমে হোটেল বুকিং না দেওয়ার জন্য পর্যটক অতিথিদের প্রতি অনুরোধ করেন।

আবাসিক হোটেল অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ জানান, এখন সব হোটেল অনলাইনে বুকিং নিচ্ছে। তাই কোনো দালালের কাছে না নিয়ে সরাসরি হোটেল বুকিং দিলে সাশ্রয় রেটে রুম দেওয়া সম্ভব।

কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, কক্সবাজারে সাড়ে ৪০০ আবাসিক হোটেলে প্রায় দেড় লাখ লোক রাত্রিযাপন করতে পারেন। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি হোটেলে সিসিটিভি ক্যামেরা নিশ্চিত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এজন্য বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সাদা পোশাকধারী পুলিশ সবসময় মাঠে থেকে দায়িত্ব পালন করবেন।

তিনি বলেন, কক্সবাজারে ৩৫টি পর্যটন জোন রয়েছে। প্রত্যেক পর্যটন জোনে টুরিস্ট পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানা ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় কয়েক স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে টুরিস্ট পুলিশ।

টুরিস্ট পুলিশের চট্টগ্রামের ডিআইজি মো. মোসলেম উদ্দিন জানান,  কক্সবাজারের পর্যটকদের জানমালসহ সার্বিক নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। এবার থার্টি ফার্স্ট নাইটসহ পুরো পর্যটন মৌসুমে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদানে বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে এবং সেইভাবে মাঠে রয়েছে টুরিস্ট পুলিশ।

তিনি বলেন, 'কক্সবাজারে টুরিস্ট পুলিশের সংখ্যা কিছুটা কম রয়েছে। এখন ২০৮ জন নিয়োজিত রয়েছেন। শিগগিরই মোট ২৫০ জন টুরিস্ট পুলিশ নিয়োজিত করা হবে কক্সবাজারে।'

কক্সবাজারে পর্যটকদের স্বাগত জানিয়ে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, 'কক্সবাজার শুধু দেশের নয়, পৃথিবীর একটি আকর্ষণীয় পর্যটন জোন। তাই যেকোনো বিশেষ দিন উপলক্ষে কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড় থাকে। এবারও পর্যটকরা থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজারমুখী হয়েছেন।'

তিনি বলেন, 'পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতে এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একাধিক বৈঠকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত ও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শুধু থার্টি ফার্স্ট নাইট বা বর্ষবরণ নয়, ভরা পর্যটন মৌসুমে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মনিটরিং কমিটি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করবে।'

তিনি জানান, সরকারিভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে- এবার উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইটের কোনো আয়োজন করা যাবে না। তাই কক্সবাজারেও কাউকে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

22h ago