শিরোপা দৌড়ে থাকার রসদ আছে খুলনায়

শক্তপোক্ত মিডল অর্ডার, দ্রুত শুরু আনতে পারে ওপেনিং জুটি, টি-টোয়েন্টির চাহিদা সম্পন্ন অলরাউন্ডার এবং ভীষণ কার্যকর বিদেশি খেলোয়াড় মিলিয়ে খুলনা টাইগার্সে আছে দারুণ সমন্বয়। বিপিএলে প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে শিরোপা জেতার মতো একটি দল বানিয়েছে তারা।

ড্রাফটের আগে মাইন্ড ট্রি গ্রুপের মালিকানাধীন খুলনা দেশীয় কোটায় দলে নেয় মুশফিকুর রহিমকে, তারা দলের নাম দিয়েছে খুলনা টাইগার্স। বিদেশি কোটায় ড্রাফটের বাইরে থেকে তারা দলে পেয়েছে টি-টোয়েন্টির জন্য দারুণ তিনজন ক্রিকেটারকে।

শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এখনো বড় নামই। জুতসই মিডিয়াম পেস বোলিংয় তো করেনই, ব্যাট হাতে থিসারা নিজের দিনে যা করতে পারেন সেই সুফল নিতে চাইবে যেকোনো দল। থিসারার বিস্ফোরক ব্যাটিং খুলনার জন্য হতে পারে ট্রাম্পকার্ড।

 আরেক লঙ্কনা ভানুকা রাজাপাকসে খুলনার ব্যাটিং অর্ডারের চেহারাই বদলে দিতে পারেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হতাশ করেই খেলেছিলেন ৩১ বলে ৫৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। মিডল অর্ডার, টপ অর্ডার দুই জায়গাতেই খেলতে পারবেন এই বাঁহাতি। খুলনা শেষ পর্যন্ত তাকে কোথায় কাজে লাগায় দেখার বিষয়।

খুলনার তৃতীয় বিদেশী একজন পেসার। আফগানিস্তানের ডানহাতি পেসার নাবীন-উল হককে দলে নিয়েছে তারা। টি-টোয়েন্টিতে তরুণ এই পেসার বেশ কার্যকর। পাওয়ার প্লে এবং ডেথ ওভারে বল করেও টি-টোয়েন্টিতে তার ইকোনমি রেট আটের কম।

ড্রাফটের শুরুতে খুলনা দলে নেয় শেখ মেহেদী হাসানকে। দ্বিতীয় সুযোগে তারা দলে ভেড়ায় সৌম্য সরকারকে।  বুঝিয়ে দেয় টি-টোয়েন্টিতে এই দুজনের ভেল্যু। অফ স্পিনের পাশাপাশি তেঁড়েফুড়ে ব্যাট করার জন্য ২০ ওভারের ক্রিকেটে তিনি আদর্শ নাম।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খারাপ গেলেও ওপেনিংয়ে সৌম্য দলের চেহারাই বদলে দিতে পারেন। উইকেটের মায়া না করে সাহস নিয়ে খেলার মানসিকতা সৌম্যের আছে। আর সঙ্গী হিসেবে রনি তালুকদারও একই মনোভাবের। এই দুজনেরই ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক ম্যাচ জেতানোর নজির আছে।

বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি ভারসাম্য আনতে আছেন মুশফিক ও ইয়াসির আলি চৌধুরী। দুজনেই একই ঘরানার ব্যাটসম্যান। মিডল অর্ডারে পরিস্থিতির দাবি অনুযায়ী স্ট্রাইকরেট বাড়ানো কিংবা উইকেট আঁকড়ে রাখার দুই কাজই করতে পারেন তারা।

মুশফিক কিপিং না করলেও বাড়তি কিপার হিসেবে তারা জাকের আলি অনিককে দলে রেখেছে। জাকের কিপিংয়ের ব্যাটিংয়েও রাখতে পারেন ভূমিকা। তাকে টপ বা লোয়ার মিডল অর্ডার দুই পজিশনেই খেলানো যেতে পারে।

ড্রাফট থেকেও কার্যকর দুজন বিদেশি দলে ভিড়িয়েছে খুলনা। জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজা বাংলাদেশের উইকেটে হতে পারেন আদর্শ পছন্দ। অফ স্পিন বোলিং আর মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করে রাখতে পারেন ম্যাচ জেতানোর ভূমিকা।

অফ স্পিনিং অলরাউন্ডারের পাশাপাশি লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডারও নিয়েছে তারা। লঙ্কান সেকুগে প্রসন্ন লেগ স্পিনে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি ব্যাট হাতে শেষের ঝড়

তুলতে পারেন।

পেস বোলিং আক্রমণে আফগান নাবীনের সঙ্গে দেশের অভিজ্ঞ কামরুল ইসলাম রাব্বি ও সৈয়দ খালেদ আহমেদকে নিয়ে দারুণ সমন্বয় খুলনার। আছেন অভিজ্ঞ ফরহাদ রেজা, দেশের উইকেটে বরাবরই তার ২-৩ ওভার দলকে দিতে পারে সুবিধা। সেইসঙ্গে ফরহাদের ব্যাটিংও টি-টোয়েন্টির জন্য আদর্শ।

বাঁহাতি স্পিনে কিছুটা ঘাটতি থেকে গেছে। সেখানে কেবল নাবিল সামাদই। আছেন। তার কোন বিকল্প রাখেনি খুলনা।

তবে এখনো চারজন দেশি ক্রিকেটারকে দলে নিতে পারবে তারা। ওপেনিংয়ে একজন ব্যাকআপ, স্পিনে একজন ব্যাকআপ নেওয়ার সুযোগ খুলনার।

খুলনা টাইগার্স স্কোয়াড:

সরাসরি: মুশফিকুর রহিম, থিসারা পেরেরা (শ্রীলঙ্কা), নাভিন-উল-হক (আফগানিস্তান), ভানুকা রাজাপাকসে (শ্রীলঙ্কা)।

ড্রাফট থেকে দেশি: শেখ মেহেদী হাসান, সৌম্য সরকার, কামরুল ইসলাম রাব্বি, ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বি, ফরহাদ রেজা, রনি তালুকদার, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, জাকের আলী অনিক ও নাবিল সামাদ।

ড্রাফট থেকে বিদেশি: সেকুগে প্রসন্ন (শ্রীলঙ্কা), সিকান্দার রাজা (জিম্বাবুয়ে)।

Comments

The Daily Star  | English

Decision on AL’s registration after receiving govt ban order: CEC

The decision to ban was made at a special meeting of the council following three days of demonstrations demanding a ban on the party

1h ago