চা বাগানের অস্থায়ী শ্রমিকদেরও উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করুন

মৌলভীবাজারের বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিক। ছবি: স্টার

দেশের চা শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকা উন্নত করতে সরকার বিশেষ উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়েছে। তবে যাদের পাশে দাঁড়ানো বেশি প্রয়োজন, চা বাগানের সেই অস্থায়ী শ্রমিকরা এ কর্মসূচি থেকে বাদ পড়ছেন। আমরা এটি জেনে খুবই হতবাক হয়েছি।

দ্য ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চা বাগানের অস্থায়ী ও মৌসুমি শ্রমিকদের বিবেচনায় না নিয়েই সরকার এই বিশেষ কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের তালিকা করা শুরু করেছে।

জানা গেছে, দেশের ১৬৬টি চা বাগানে প্রায় ১ লাখ স্থায়ী শ্রমিক আছেন। আর অস্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার। তবে চা বাগানের অস্থায়ী, মৌসুমি ও বেকার শ্রমিকের মোট সংখ্যা হিসাব করলে তা স্থায়ী শ্রমিকের ৩ গুণ হবে। চা শ্রমিকদের বিশাল অংশকে এই কর্মসূচি থেকে বাদ দেওয়ার মানে তাদের দারিদ্রসীমার আরও নিচে ঠেলে দেওয়া।

চা বাগানের অস্থায়ী ও মৌসুমি শ্রমিকদের কর্মঘণ্টা স্থায়ী শ্রমিকদের সমান হওয়া সত্ত্বেও, তারা সবসময় বঞ্চিত হয়ে আসছেন। দৈনিক মজুরি উভয়ের ক্ষেত্রে অবশ্য একই, মাত্র ১২০ টাকা। কিন্তু অস্থায়ীরা অন্য কোনো সুবিধা পান না, যা স্থায়ী শ্রমিকরা সাধারণত পেয়ে থাকেন। এখন নতুন সরকারি এই প্রকল্পের আওতায় যখন স্থায়ী কর্মীরা চিকিৎসা, রেশন, বাসস্থান ও ভবিষ্যৎ তহবিলের সুবিধা পেতে যাচ্ছেন, তখন তাদের অস্থায়ী সহকর্মীরা এগুলোর কিছুই পাবেন না।

এটি 'চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন নীতিমালা ২০১৩' এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ওই নীতিমালায় অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে থাকা শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নতির বিষয়ে অগ্রাধিকারের কথা বলা হয়েছে।

কম মজুরি ও মৌলিক সুযোগ-সুবিধার অভাবে যদিও আমাদের সব চা শ্রমিককেই দরিদ্র জীবনযাপন করতে হয়, তবে এ কারণে মৌসুমি ও অস্থায়ী শ্রমিকদেরই বেশি ভুগতে হয়। করোনা মহামারি চলাকালে কাজ হারানোর কারণে, তাদের অনেকের জীবনমান আরও খারাপ হয়েছে।

যখন আমরা দেশের চা শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করছি, সেই সঙ্গে আমরা অস্থায়ী ও মৌসুমি শ্রমিকদের এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানাচ্ছি। কারণ কর্মজীবন অনিশ্চিত থাকার কারণে প্রকল্পের সুবিধাভোগী হওয়ার ক্ষেত্রে তারা আরও বেশি যোগ্য। সরকারের উচিত তাদের প্রকৃত সংখ্যা হিসাব করা এবং সম্ভব হলে তাদের অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা দেওয়ার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালানো। তদুপরি, চা বাগানের মালিকদেরও তাদের শ্রমিকদের চাহিদার বিষয়ে উদাসীন থাকা উচিত নয়। তাদের উচিত অস্থায়ী ও মৌসুমি শ্রমিকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরা এবং যারা বর্তমানে কর্মহীন তাদের চাকরি দেওয়া।

Comments

The Daily Star  | English

NBR moves to speed up auction of abandoned goods

About 2 lakh tonnes of imported goods left abandoned at Chattogram port alone for years

58m ago